এতো গুণ আপেল সিডার ভিনেগারের!
2021-12-24 20:38:25

আপেল থেকে গাঁজন প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয় আপেল সিডার ভিনেগার। এতে ৫-৬ শতাংশ অ্যাসেটিক এসিড থাকে। এছাড়া এ ভিনেগারে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ লবণ। আপেল সিডার ভিনেগার অনেক রোগের একটি জনপ্রিয় ঘরোয়া প্রতিকার। বহু শতাব্দী ধরে মানুষ রান্না ও ওষুধে এটি ব্যবহার করে আসছে। ডায়াবেটিস, ক্যানসার, হৃদরোগ, উচ্চ কোলেস্টেরল ও ওজন বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যায় অনেকে নিয়মিত এটিকে ব্যবহার করেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক আপেল সিডার ভিনেগারের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা সম্পর্কে:

কোলেস্টেরল কমায়: বিশ্বে অকালমৃত্যুর অন্যতম কারণ হৃদরোগ। রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়লে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তবে আপেল সিডার ভিনেগার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। ২০০৬ সালে জাপানে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, ভিনেগারের অ্যাসিটিক অ্যাসিড দ্রুত রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: টাইপ-টু ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার খুবই উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ঘুমানোর আগে মাত্র দুই টেবিলচামচ আপেল সিডার ভিনেগার খেলে, সকালে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ার গতি কমে চার শতাংশ। যাদের ডায়াবেটিস নেই, তারাও রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ ভিনেগার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

ওজন কমায়: আপেল সিডার ভিনেগার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এর অ্যাসিটিক অ্যাসিড খাওয়ার ইচ্ছাকে দমন করে এবং মেটাবলিজম বাড়ায়। স্থুলতায় আক্রান্ত ১৭৫ ব্যক্তির ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, রোজ আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার অভ্যাস দ্রুত ওজন কমায়। সেই সঙ্গে কমায় পেটের মেদ। বিজ্ঞানীরা বলেন, এই ভিনেগার স্টার্চ পরিপাকে সাহায্য করে, ফলে রক্তপ্রবাহে ক্যালরির পরিমাণ কম হয়।

ব্যাকটেরিয়া নিধন করে: ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে আপেল সিডার ভিনেগার। তাই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত স্থান পরিষ্কার করতে এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া নখের ছত্রাক, আঁচিল, কানের ইনফেকশন উপশমেও এ ভিনেগার ব্যবহার করা যায়। তবে ত্বকে দিতে হলে ভিনেগারের সঙ্গে অবশ্যই পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে নিতে হবে।

ক্যানসার প্রতিরোধ করে: আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধী শক্তি। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এ ভিনেগার ক্যানসার কোষ নির্মূল ও টিউমার সারাতে ভূমিকা রাখে। তবে এটি এখনো সর্বব্যাপী স্বীকৃত নয়। এনিয়ে আরও গবেষণা চলছে।

হজমে সাহায্য করে: বদহজমের অসাধারণ দাওয়াই আপেল সিডার ভিনেগার। যেসব খাবার সহজে হজম হতে চায় না তেমন খাবার খাওয়ার আগে এক চুমুক আপেল সিডার খেয়ে নিলে আর বদহজম হয় না। ভাল ফলের জন্য এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চা-চামচ মধু আর এক চা-চামচ ভিনেগার মিশিয়ে খাবারের আধা ঘণ্টা আগে খেয়ে নিয়ে পারেন।

গলাব্যথা দূর করে: গলা ব্যাথা নিরাময়ের একটি ভালো টোটকা আপেল সিডার ভিনেগার। গলা ব্যাথা হলে কাপের এক-চতুর্থাংশ কুসুম গরম পানিতে সমপরিমাণ ভিনেগার মিশিয়ে এক ঘণ্টা পর পর কুলকুচা করলে উপশম পাওয়া যায়। কারণ অ্যাসিডযুক্ত পরিবেশে জীবাণু টিকতে পারে না।

পেটের সমস্যা নিরাময় করে: আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে নানা অ্যান্টিবায়োটিক গুণ, যার ফলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণজনিত ডায়রিয়া নিরাময়ে সাহায্য করে এটি। এছাড়া আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে পেকটিন, যা শরীরের ভিতরের নানা সমস্যা দূর করে।

বন্ধ নাক পরিষ্কার করে: আপেল সিডার ভিনেগারে থাকে পটাশিয়াম ও অ্যাসিটিক অ্যাসিড। পটাশিয়াম মিউকাসকে পাতলা করতে সাহায্য করে আর অ্যাসিটিক অ্যাসিড জীবাণু ধ্বংস করে, যা নাক বন্ধ হওয়া সমস্যা দূর করে। এছাড়া সাইনাস সমস্যাজনিত নাক দিয়ে পানি পড়াও বন্ধ করতে পারে এই ভিনেগার। - রহমান