স্মরণীয় ২০২০ সাল!
2020-12-31 12:10:57

স্মরণীয় ২০২০ সাল!

 

দেখতে দেখতে ২০২০ সাল চলে গেল। এ বছরে, মাস্ক একটি প্রয়োজনীয় জিনিসে পরিণত হয়েছে। হয়তো বহুদিন এ প্রয়োজন ফুরাবে না। বিশেষ সময় বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হয়, নতুন সংগ্রাম শুরু হয়, নতুন আশার আলো দেখা দেয়। জীবন চলার পথে কেউ শুধু একবার দেখা দেয়- কিন্তু তাকে মনে থাকে চিরকাল। কিছু কিছু মুহূর্তে, শুধু এক দেখায় সারা জীবনেও তা ভোলা যায় না। বন্ধুরা, ২০২০ সালে আমরা সবাই একসাথে কাটিয়েছি। নতুন বছরের অনুষ্ঠানেও আমরা আপনাদের স্বাগত জানাই। এ অনুষ্ঠানে মাস্কের পিছনে লুকিয়ে থাকা সুন্দর মুখের কিছু গল্প শোনাবো।

 

স্মরণীয় ২০২০ সাল!_fororder_pin1

১: আন্দের সঙ্গে স্কুলে ফিরে আসা শিশু: বছরের বিশেষ সময়ে বেড়ে ওঠার গল্প

শীতকালের ভোরে সূর্য ওঠার আগে বেইজিংয়ের চার নং উচ্চ বিদ্যালয়ের কুয়াংওয়াই শাখা স্কুলে কিছু শিক্ষার্থী প্রবেশ করছে।

‘শুভ সকাল, শিক্ষক’। ১২ বছর বয়সী শিক্ষার্থী ছাই হাও লিন স্কুলের দরজায় শিক্ষককে দেখে এ-কথা বলে। ২০২০ সালে সে বাসায় চার মাস ধরে লেখাপড়া করেছে। ঠিক এই সময়, সে প্রাথমিক স্কুল পাস করে মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হয়।

২০২০ সালের ১লা জুন, ছাত্র ছাই বেইজিংয়ের লাখ লাখ মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীর মতো ‘সুপার দীর্ঘ শীতকালীন ছুটি’ কাটিয়ে আনন্দের সঙ্গে ক্যাম্পাসে ফিরে এসেছে।

তবে মাত্র দুই সপ্তাহ ক্লাসের পর বেইজিংয়ে আবারও আকস্মিক করোনাভাইরাসের কিছু রোগী শনাক্ত হয়। এ কারণে ছাত্র ছাই আবারও সহপাঠীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তার প্রাথমিক স্কুলের অনুষ্ঠান অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সে ভিডিও’র মাধ্যমে ক্লাস শুরু করে।

 

ছাত্র ছাই বলে, মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর যে বিষয়টি আমি সবচেয়ে বেশি জানতে চাই, তা হল নতুন স্কুলে খেলার মাঠ কেমন। চার বছর বয়স থেকে ছাই বাস্কেটবল শিখছে, ক্রীড়াপ্রেমী ছেলেটি প্রতি সপ্তাহে বাস্কেটবল চর্চা করে।

করোনাভাইরাসের মহামারি চলাকালে স্কুল ও স্টেডিয়াম বন্ধ হওয়ায় সে কয়েক মাস ধরে স্বাভাবিক চর্চা করতে পারে নি। শুধু ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাস্কেটবল দলের সদস্যদের সঙ্গে চর্চা করেছে। বাসায় কিছু শারীরিক চর্চা, প্রতিদিন উইচ্যাট গ্রুপে প্রত্যেকের শরীর চর্চার অবস্থা জানানোর কাজও করেছে। সে জানায়, কয়েক মাস ধরে বাসায় থাকায় সবার শারীরিক সামর্থ্য কিছুটা কমে গেছে। আগের মতো এত দৌড়াতে পারে  না। কেউ কেউ মোটা হয়ে গেছে।

 

ছাই বলে, এখন প্রতিদিন আমার সবচেয়ে আনন্দের সময় হল সকালবেলা চতুর্থ ক্লাসের পর খেলার মাঠে কিছুক্ষণ বাস্কেটবল খেলা। সহপাঠীদের সঙ্গে বিল্ডিংয়ের বাইরে দৌড়ানোর মুহূর্তে সব কিছু ভুলে যাই।

চলতি বছর মহামারি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার কারণে ছাত্র ছাই-এর বাবা মা ছাই-এর সঙ্গে আরো বেশি সময় থাকতে পারেন। ছাই বলে, আমার বাবা মা আগে খুবই ব্যস্ত ছিলেন, সাধারণত রাত ৯টার দিকে বাসায় ফিরে যেতেন, মাঝে মাঝে রাতেও মিটিংয়ে থাকতে হয়। মহামারি চলাকালে বাবা মা বাসায় অফিসের কাজ করেন, পরিবারের সবাই একসাথে রুটি তৈরি করে, রান্না করে, বই পড়ে। এতে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে।

 

ছাই-এর মা বলে, ১২ বছর বয়সের শিশু, নিরাপদ, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ পরিবেশে বড় হয়েছে। তার বস্তুগত চাহিদা বেশি নয়, সে আরো বাস্তব বিষয় অনুসন্ধান করতে পছন্দ করে। ভাইরাসের মহামারির কারণে সমাজের বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে। শিশুদের জীবন আরো স্বাধীন হয়ে উঠেছে। সে বুঝতে পেরেছে ‘সময় শান্ত ও সুন্দর’ এই অবস্থা অর্জন করা কতটা কঠিন।

 

ছাত্র ছাই বলে: জটিল পরিবর্তিত বিশ্বে শান্তভাবে লেখাপড়ার সুযোগ পাওয়া কতটা মূল্যবান ব্যাপার! সে জানে, বিশ্বে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার কারণে অনেক দেশের শিশুরা লেখাপড়া করতে পারছে না। অনেকেই স্কুলে ফিরে যেতে পারছে না। ইন্টারনেট খুব শক্তিশালী হলেও, বাস্তবতা হলো- সামনাসামনি ও সরাসরি যোগাযোগ করলেই আন্তরিকতা অনুভব করা যায়। মহামারির পর সে পরিবার, সহপাঠী ও শিক্ষকের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়কে আরো মূল্যবান বলে উপলব্ধি করেছে।

 

স্মরণীয় ২০২০ সাল!_fororder_pin2

. হুপেই প্রদেশে সহায়তাকারী নার্স: সাধারণ জীবনে প্রত্যাবর্তন

সাংবাদিক আবারও নার্স লিউ হাই থিং এবং সুই কুও চুয়ানের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা আগের মতোই মাস্ক পরে রোগীদের সাহায্য করছেন। তবে ভিন্ন ব্যাপার হল, তাঁরা আর প্রতিরোধক পোশাক পরছেন না, তাঁরা নিজ নিজ কর্মপদে ফিরে এসেছেন। কয়েক মাস আগের জীবনের তুলনায় বর্তমানে তাদের জীবন আবারও শান্তিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

 

গত ১০ মার্চ, চীনের ছিংহাই প্রদেশের চিকিত্সক দলের দুই সদস্য হুপেই প্রদেশের উহান শহরের উ ছাং অস্থায়ী হাসপাতাল থেকে বের হবার পথে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। এই দু’জন হলেন নার্স লিউ হাই থিং এবং সুই কুও চুয়ান। সেদিন ছিল উ ছাং অস্থায়ী হাসপাতাল বন্ধের দিন। তখন উহানের করোনাভাইরাস মহামারির অবস্থা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তারা দু’জন জীবাণুমুক্তকরণের চূড়ান্ত কাজটি করতে গেছেন। সব কাজ শেষ হলে হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার জন্য অপেক্ষা করার সময় তাঁরা কিছুটা ক্লান্তি অনুভব করেনে। তাই একদফা বসে একটু বিশ্রাম নেন।

 

‘আমি তোমার গায়ে হেলান দিয়ে একটু ঘুমাতে পারি? আমার ঘুম পাচ্ছে’। ‘ঠিক আছে, তুমি বিশ্রাম নাও’। আগে হাসপাতালে সবখানে রোগী ছিল, এখন হাসপাতাল একদম খালি, দু’জন নার্স নীল রংয়ের প্রতিরোধক কাপড় পরে বসে আছেন, দু’জন পরস্পরের গায়ে হেলান দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন। ঠিক যেন ভাস্কর্যের মত, তাঁদের পিছনের জানালা দিয়ে সূর্যের আলো প্রবেশ করছে।

 এই ছবি ইন্টারনেটে পোস্ট করার পর পরই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ২০২০ সালটি তাদের কাছে অসাধারণ এক বছর।

 

দশ মাস আগে নার্স লিউ উ হানে গিয়ে কাজ করার জন্য ২০ বছর ধরে লম্বা রাখা তার চুল কেটে ফেলেন। এরপর তিনি অনেকক্ষণ কেঁদেছিলেন।

লিউ হলেন ছিংহাই প্রদেশের হাই তুং শহরের প্রথম হাসপাতালের একজন নার্স। বেশি কথা বলেন না, কিছুটা লাজুক। উহানে যাওয়ার কথা স্মরণ করে লিউ বলেন, ৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত ১টার দিকে হুপেই প্রদেশে সহায়তাকারী কর্মদল গঠনের খবর পাই, তখন আমি হাসপাতালে রাতের শিফটে কাজ করছিলাম। লিউ বলেন, ভয় পাই না– এ কথা বললে মিথ্যা বলা হবে। যদিও তিনি জানেন কিছু কিছু চিকিত্সক আক্রান্ত হয়েছেন, তবে তিনি সবার আগে আবেদন করেছিলেন।

 

বাবা-মা ও ছেলে বন্ধুকে না জানিয়ে লিউ উহানে চলে যান। তিনি বলেন: এখন উ হানে পৌঁছানোর কথা মনে করি, সে শহরটি ছিল ভীষণ চুপচাপ! আমার কিছুটা ভয় লাগছিল। এখন উহান শহর আবারও প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে; আমি সেই শহরটি আরেকবার দেখতে চাই।

‘আগে আমি মনে করতাম, আমার কাজ খুব সাধারণ, এখন আমি বুঝেছি- এটি মহান একটি পেশা’। এবারের মহামারির মাধ্যমে লিউ নার্স তার পেশার গুরুত্ব নতুন করে উপলব্ধি করেছেন।

 

চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে লিউ বিয়ে করেন। ৪ অক্টোবর তিনি বিয়ের কাপড় পরে সুন্দর কনে সেজেছেন।

তাঁর চুল আবারও কিছুটা লম্বা হয়েছে। লিউ বলেন, মহামারি থেকে আমি বুঝতে পেরেছি যে, চোখের সামনের মানুষকে খুশি করতে হয়, এই মুহূর্তের কাজটি ভালোভাবে করতে হয়।

 

অস্থায়ী হাসপাতালের কাজের সময় নার্স সুই-এর সবচেয়ে গভীর স্মৃতি- ‘মুরগির স্যুপ’। জীবাণুমুক্তকরণ ওষুধের গন্ধ, চশমায় জমে থাকা জলীয় বাষ্প, নীল রংয়ের প্রতিরোধক পোশাক ইত্যাদি তাঁর মনে থাকলেও সবচেয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে ‘মুরগির স্যুপ’।

একদিন, নার্স সুই অস্থায়ী হাসপাতাল থেকে থাকার জায়গায় ফিরে এসে একটি বিশেষ খাবার পান। একটি নোটে কিছু একটা লিখেছেন একজন রোগী। ‘আপনারা আমাদের সাহায্যের জন্য অনেক পরিশ্রম করছেন, আপনাদের ধন্যবাদ’। সুই বলেন, তখন মনটা খুব উষ্ণ হয়ে ওঠে। তিনি ভাবেন, যত ক্লান্তিই লাগুক না কেন, যত কঠিন কাজই হোক না কেন সব কিছুই গুরুত্বপূর্ণ।

 

৩৪ বছর বয়সী সুই কুও চুয়ান ছিংহাই প্রদেশের হাইতুং শহরের দ্বিতীয় গণ-হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের একজন নার্স। উহানে যাওয়ার কথা শুনে তিনি সবার আগে আবেদন করেছিলেন। তখন তাঁর সন্তানের বয়স মাত্র ১ বছর ৭ মাস। সন্তানকে ভীষণ মিস করলেও তিনি বুঝতে পারেন- উহানে তাঁর প্রয়োজন আছে। তিনি দ্বিধা না করেই উহানে চলে যান।

 

অস্থায়ী হাসপাতালের রোগীদের ওষুধ ও খাবার বিতরণের পাশাপাশি, তিনি সময় পেলেই রোগীদের মানসিক সাহায্য দিতেন। তিনি বলেন, আমরাই রোগীর আত্মীয়।

সুই-এর মোবাইলফোনে এখনো সেভ করা আছে রোগীদের সঙ্গে তার নাচের ভিডিও। ভিডিওতে তিনি ও সহকর্মীরা মোটা প্রতিরোধক পোশাক পরে আছেন। তাই তাঁদের নড়াচড়া ততটা সুন্দর না। তাদের চশমায় জলীয় বাষ্পের প্রলেপ, চিকিত্সকের মুখও দেখা যায় না, তবে রোগীদের মুখের হাসি খুব স্পষ্ট।

সুই বলেন, বেঁচে থাকা কতটা ভালো ব্যাপার। এ বছর তাঁর পরিবারে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। তাঁর স্বামী একটি চাকরি পেয়েছেন। মহামারি তাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, একসাথে থাকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোই ভালো।

 

স্মরণীয় ২০২০ সাল!_fororder_pin3

. যে বাসের নারী ড্রাইভারের চোখ কথা বল

চীনের হ্যনান প্রদেশের রাজধানী চেংচৌ শহরের বি৩৮ নং বাস লাইনে, একজন বিশেষ নারী ড্রাইভার আছেন। তাঁর নাম হুয়াং ফেই। মহামারি চলাকালে, যখন লোকজন শুধুই মাস্ক পরে একে অপরের সঙ্গে দেখা করত, তখন এই ‘চোখ দিয়ে কথা বলা’ নারী গাড়ি চালক শহরকে উষ্ণ করে রেখেছিলেন।

প্রতিদিন একই রুটে তিনি যাতায়াত করতেন। হুয়াং-এর জীবন যেন একটি সোজা লাইনের মতো। তবে মার্চ মাসের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। চেংচৌ শহরের মানুষের ভিড় হঠাত্ হারিয়ে যায়।

 

চেংচৌ শহরের বাস চলাচল বন্ধ হয় নি। প্রতিদিন ভোর ছয়টায় হুয়াং-এর বি৩৮ নং বাস সময়মত স্টেশন থেকে রওনা দেয়। হুয়াং বলেন, ঐতিহ্যবাহী বসন্ত উত্সবের সময়ও তিনি জন্মস্থানে ফিরে যান নি, বরং কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন।

ভাইরাসের মহামারি চলাকালে, প্রতিদিন বাসকে জীবাণুমুক্ত করা তাঁর নতুন কাজ হয়ে ওঠে। বাসের প্রতিটি স্থান হুয়াং মন দিয়ে জীবাণুমুক্ত করেন।

এখন শহরটি আবারও প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে। আবারও রাস্তার ভিড় দেখে হুয়াং-এর মন আনন্দে ভরে ওঠে। সাংবাদিককে দেওয়া সাক্ষাত্কারে হুয়াং সবসময় একটি কথাই বলেন: আমরা শুধু নিজের কাজটিই করেছি, অন্য কিছু না’।

 

অনেকে মনে করেন, শুধু পুরুষ মানুষই বড় বড় বাস চালাতে পারে। তবে হুয়াং একজন নারী হলেও ছোটবেলা থেকেই গাড়ি চালাতে পছন্দ করেন। তাঁর স্বপ্নই ছিল একজন বাস ড্রাইভার হওয়া। তিনি বলেন, ড্রাইভার আসনে বসলে আমার মন স্বাধীন হয়ে যায়।

 

হুয়াং আগে বীমা কোম্পানিতে কাজ করতেন। ৩১ বছর বয়সে বাস চালানোর লাইসেন্স পান তিনি। তিনি বলেন, উচ্চ বিদ্যালয় পাসের পরই আমি গাড়ি চালাতে চেয়েছিলাম। তবে বয়স কম হওয়ায় তা সম্ভব হয় নি।

গাড়ি চালানোর সময় কথা বলার সুযোগ কম। যদিও মাস্ক তাঁর মুখ লুকিয়ে রেখেছে, তবে তাঁর হাসিমাখা চোখ সবাইকে সাদর আমন্ত্রণ জানায়। আর এই চোখ যেন তিনি ও যাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগের সেতু।

 

হুয়াং বলেন, মহামারির খুব গুরুতর সময়ে তিনি বাসে যাত্রীদের ভিড় খুব মিস করতেন। মহামারির সময় বাসে যাত্রী কম হয়। অল্প কিছু যাত্রী তাঁর দিকে উষ্ণ দৃষ্টিতে তাকান। হুয়াংও তাদের দিকে উষ্ণ দৃষ্টি দেন। যদিও শুধু চোখের ভাষা বিনিময় হয়, তবে হুয়াং বুঝতে পারেন, কেউ তাকে কেয়ার করছে, উপলব্ধি করেছে।

 

গত অগাস্ট মাসে স্কুলগুলোতে গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছিল। সেসময় হুয়াং তার ছেলেকে নিয়ে বাস চালিয়েছিলেন। রাত দশটার দিকে, শেষ যাত্রার সময় হুয়াং দেখেন যে, তার ছেলে বাসের এক কোনায় ঘুমিয়ে পড়েছে। হুয়াং-এর মনটা খারাপ হয়ে ওঠে। ছেলে জেগে ওঠার পর বলে, ‘মা, তোমার কি ক্লান্ত লাগছে? মহামারির অবস্থা ভালো না, চলো দ্রুত বাসায় যাই’। হুয়াংয়ের মন আবারও খারাপ হয়। তিনি একজন ভালো ড্রাইভার বটে; কিন্তু, একজন ভালো মা হতে পারেন নি!

 

এখন চীনে করোনাভাইরাসের মহামারি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আছে। হুয়াং-এর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে, বাসে আবারও অনেক যাত্রী ওঠে; শহরটি আবারও প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে।