নববর্ষের ছুটির প্রথম দিনে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৯০হাজার ছাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতে ৮লাখেরও বেশি মার্কিনী বেকার ভাতার জন্য সরকারের নিকট আবেদন করেছেন। এ ভাতা প্রদানের জন্য মার্কিন কংগ্রেস ইতোমধ্যে তিনটি প্রণোদনা বিল পাশ করেছে।
পূর্বের প্রণোদনা বিলের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফলে এসব আবেদনকারিকে ভাতা প্রদানে নতুন বিলের প্রয়োজন পড়েছে। মার্কিন কংগ্রেস সে বিলের অনোমুদনও দিয়ে রেখেছে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন সেই বিলে সই করেন নি। ফলে লাখ লাখ মার্কিনী বাঁচা-মরার সংকটে পড়েছেন।
মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, চলতি মাসের (ডিসেম্বর) তৃতীয় সপ্তাহে দেশটিতে মোট ৮লাখ ৩হাজার লোক প্রথমবারের মতো বেকার প্রণোদনার জন্য আবেদন করেছেন। এ সংখ্যাটি এযাবৎকালের সর্বোচ্চ।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, যদি ট্রাম্প সরকার কংগ্রসে গৃহীত ৯০হাজার কোটি মার্কিন ডলারের প্রণোদনা বিলে সই না করতে অবিচল থাকে, তাহলে মার্কিন অর্থনীতি ও গণজীবিকার ব্যাপক ক্ষতি হবে।
উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ প্রকোপে সৃষ্ট বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি বেকার প্রণোদনা বিল গৃহীত হয়। প্রথম বিলটির মেয়াদ গত জুলাই মাসে শেষ হয়। গত শনিবার অপর দুটি বিলের মেয়াদও শেষ হয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ১কোটি ২০হাজার নাগরিক বেকার ভাতার মেয়াদ শেষ হওয়া এবং বেকার ভাতা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন।
অন্যদিকে ৯২লাখ ভাড়া-বাসায় বসবাসকারি পরিবার কোভিড-১৯’র কারণে বেকার হয়ে বাসা ভাড়া দিতে পারছেন না। প্রণোদনা না পেয়ে নববর্ষে তাঁরা বাসা থেকে বিতাড়িত হওয়ার আতঙ্কে ভোগছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ঋণ পরিশোধের বিষয়ে প্রণোদনা ব্যবস্থার মেয়াদও এ মাসের শেষ দিকে শেষ হতে চলছে। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াও সংকটের মুখে পড়তে পারে।
এমন কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে গরিবদের জন্য খাবার সংগ্রহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ওয়াশিংটন পোস্টসহ মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, সম্প্রতি দেশটিতে চুরির ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। চাউল, পাউরুটি, দুধ ও মাংসসহ খাদ্য-পণ্য খুব বেশি পরিমাণে চুরি হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের রশি টানাটানির কারণে আগেকার প্রণোদনা বিল কয়েক মাস ধরে বিলম্বিত হয়েছিল। বর্তমানে আবারও দুদলের রাজনৈতিক দরকষাকষির কারণে প্রণোদনা বিল স্থগিত রাখা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, দল দুটুর রাজনৈতিক বিবাদের কারণেই গরিব ও নিম্ন বৃত্তির মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলছে। ফলে তাঁরা বেকার হয়েছে এবং প্রণোদনা না পেয়ে তাঁদের বাচাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। কোভিড-১৯ মাহামারি পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হওয়ার পর তাঁদের অবস্থা আরও গুরুতর হচ্ছে।
অনেকের দাবি যে, মানুষের জীবনের বিনিময়ে রাজনীতি করা যাবে না। সবার উপর মানুষ সত্য চেতনাকে ধারন করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা প্রয়োজন।