বৈদেশিক প্রকল্প জোরদারের মাধ্যমে বিশ্বের সরবরাহ চেইন পুনরুদ্ধারে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান অবদান রাখছে
2020-12-28 15:20:34

ডিসেম্বর ২৮: চলতি বছর নভেল করোনাভাইরাসের মহামারি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। বিদেশে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রকল্পগুলো এতে প্রভাবিত হয়েছে। তবে, এসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে কঠোর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে উত্পাদনকাজ বজায় রেখেছে, প্রকল্পের স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে। এর ফলে বিশ্বের সরবরাহ চেইন পুনরুদ্ধারে তা ইতিবাচক অবদান রেখেছে।

 

এনার্জি চায়নার অধীনস্ত চীনের ক্যচৌপা গ্রুপ  আর্জেন্টিনার সান্তা ক্রুজ প্রদেশের CC/LB জলবিদ্যুত্ কেন্দ্রের কাজ করছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের বিখ্যাত মোরেনো হিমবাহের কাছে এটি অবস্থিত। এটি হল বিশ্বের সর্বদক্ষিণের  জলবিদ্যুত্ কেন্দ্র। এটি চীন ও আর্জেন্টিনার বৃহত্তম সহযোগিতা প্রকল্প ও দেশটির বৃহত্তম জ্বালানি প্রকল্প। মহামারি চলাকালে প্রকল্পটি স্থানীয় সরকারের প্রতিরোধমূলক নিয়ম মেনে চলেছে, সীমিত সম্পদকে ভালোভাবে কাজে লাগিয়ে প্রকল্পের স্থিতিশীল ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে।

প্রকল্পের বৈদেশিক যোগাযোগ কর্মকর্তা জানান,

মার্চ মাসে আর্জেন্টিনায় প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সে সময় পাতাগোন বাঁধ প্রকল্প প্রতিরোধমূলক নীতি গ্রহণ করে ও বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যাতে সব কর্মীর নিরাপত্তা রক্ষা করা যায়। দেশের সরকার, প্রাদেশিক সরকার, শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাঁধ কর্তৃপক্ষ একমত হয় যে, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় কর্মীদের রক্ষার সবচেয়ে ভালো উপায় হল- বাঁধ নির্মাণকাজ জোরদার করা।

 

সেই সঙ্গে স্থানীয় জনগণের মহামারি প্রতিরোধে প্রতিষ্ঠানটি সক্রিয় সহযোগিতা করেছে, বিপুল পরিমাণ মাস্ক, প্রতিরোধক পোশাক ও চশমাসহ নানা প্রতিরোধক সামগ্রী দিয়েছে। এ ছাড়া, আর্জেন্টিনায় চীনা দূতাবাসের মাধ্যমে স্থানীয় সান্তা ক্রুজ প্রদেশের হাসপাতালের প্রধান এবং চীনের হুপেই প্রদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সা দলের ভিডিও আলোচনায় সহযোগিতা করেছে।

 

এ বিষয়ে সান্তা ক্রুজ প্রদেশের স্বাস্থ্য ব্যুরোর প্রধান বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চীন সরকারের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ এবং তারা আমাদের সঙ্গে সে অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছে। সান্তা ক্রুজ বাঁধ প্রকল্প প্রতিরোধক সামগ্রীও দিয়েছে। এ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে চীনা জনগণের আচরণ আমাদের কাছে খুব আন্তরিক মনে হয়েছে।

 

নামিবিয়া হাসাবের ইউরেনিয়াম খনি প্রকল্প হল আফ্রিকায় চীনের বৃহত্তম মনোমার (monomer) পুঁজি বিনিয়োগ প্রকল্প। এটি ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী প্রকল্প এবং চীন ও আফ্রিকা সহযোগিতার প্রতিনিধিত্বকারী প্রকল্পও বটে। যখন নামিবিয়ায় মহামারি প্রতিরোধ পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়, পুরো দেশের অর্থনীতি ও সমাজ উন্নত হয়, তখন নামিবিয়ার এই ইউরেনিয়াম প্রকল্প সবার আগে উত্পাদনকাজ শুরু করে; যা দেশটির জিডিপির ৫ শতাংশ। এটি নামিবিয়ার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

ইউরেনিয়াম খনি প্রকল্পে দেশ-বিদেশের কর্মী সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। এ প্রকল্পের কাজ করছে চীনের সওয়াকোপ ইউরেনিয়াম কোম্পানি। করোনাভাইরাস প্রতিরোধের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, একটি প্রতিরোধমূলক পরিচালনা ব্যবস্থা স্থাপন করেছে তারা। কোম্পানিটি মহামারি প্রতিরোধের গ্রুপ গঠন করেছে। তারা বিগ ডেটার সহযোগিতা নিয়ে মহামারি প্রতিরোধ করেছে এবং উত্পাদন নিশ্চিত করেছে।

 

কোম্পানিটি সক্রিয়ভাবে স্থানীয় প্রতিরোধকাজে সাহায্য করেছে। বেশ কিছু হাসপাতাল, স্কুল ও পুলিশ ব্যুরোসহ বিভিন্ন সংস্থায় প্রতিরোধক সামগ্রী দিয়েছে এবং স্থানীয় করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ কমিশনের উপ-মহাপরিচালক রেন হুং বিন বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর চীনের কেন্দ্রীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিজের সুবিধা কাজে লাগিয়ে চীনের সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীল উন্নয়নে শক্তিশালী সমর্থন দিয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বের সরবরাহ চেইন পুনরুদ্ধারে শক্তিশালী অবদান রেখেছে। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত, বিদেশে চীনের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রকল্প মহামারির প্রকোপ কাটিয়ে স্থিতিশীলভাবে কাজ করছে। প্রায় ছয়শ বিদেশি প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে, চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো উন্নত মানের আন্তর্জাতিক কার্যাদেশ সম্পন্ন করার সক্ষমতা প্রমাণ করেছে।

(শুয়েই/তৌহিদ/জিনিয়া)