চীনের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে চায় পাকিস্তান: ইমরান খান
2020-12-25 16:01:13

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)’কে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেন, গত ৩০ বছরে চীন একটি অনন্য ও সফল উন্নয়নের পথ অনুসন্ধান ও বাস্তবায়ন করেছে।

চীনের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা পাকিস্তান শিখতে চায়। চলতি বছরে মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দু’দেশের যৌথ প্রতিরোধক ব্যবস্থার ভূয়সী প্রসংশা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। 

সাক্ষাৎকারে পাক-চীন বন্ধুত্বের উচ্চ মূল্যায়ন করে তিনি বলেন, 
“পাকিস্তান-চীনের বন্ধুত্ব হিমালয়ের চূড়া থেকে সুউচ্চ, মধুর চেয়ে মিষ্টি, সাগরেএ চেয়ে গভীর। আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং শিশাঢালা প্রচীরের মতে মজবুত। যে কোন পরিস্থিতিতে আমরা পরস্পরকে সমর্থন দিয়ে আসছি।এবং একসঙ্গে সব বাধা অতিক্রম করে চলছি।”

ইমরান খান বলেন, চীনের উন্নয়নের পথ চলার অভিজ্ঞতা থেকে পাকিস্তান শিখতে চায়। 
তিনি বলেন,“দ্রুত্ব গতিতে চীনের অগ্রগতি দেখে পাকিস্তানে আমরা অতন্ত্য খুশি। চীনের অর্থনীতি মহামারী থেকে অনেক দ্রুত পূনরুদ্ধার হয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা থেকে আমাদের শিখা উচিৎ। চীনের উন্নয়নের পদ্ধতি পশ্চিমা দেশগুলোর তুলণায় একেবারে  বিভিন্ন।”

দারিদ্র্যবিমোচন ও দুর্নীতি দমনের খাতে চীনের অর্জনের অনেক প্রসংশা করেন ইমরান খান । তিনি মনে করেন চীনের এসব অভিজ্ঞতা পাকিস্তানের জন্য খুবই অর্থবহ। 
 
তিনি বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, চীনের দুটো কাজ মানব জাতির ইতিহাসে খুবই অনন্য। একটি হচ্ছে, বিগত ৩৫ বছরে চীন ৭৫০ মিলিয়ন মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছে। ইতাহাসে এত বড় পরিমাণে দারিদ্র্যবিমোচন চীনের  আগে কেউই করতে পারে নি। অন্যটি হচ্ছে, চীনের প্রশাসনিক জবাবদহিতা। এ দুটো ব্যাপারই পাকিস্তান ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের শিখা উচিৎ। পাকিস্তান সরকার এ দুটো কাজকেই অনুসরণ করবে।” 

চীন-পাকিস্তান যৌথভাবে মহামারি দমনে কাজ করা প্রসঙ্গে ইমরান খান বলেন, পাকিস্তান লক্ষ্য করেছে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে চীন মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তাই পাকিস্তানে মহামারি শুরু হলে আমরা অতি শীগ্রই চীনের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করি। চীনও পাকিস্তানকে দারুনভাবে সহায়তা প্রদান করেছে।এজন্য মহামারি ঠেকাতে পাকিস্তান ভাল ফলাফল অর্জন করেছে। 

তিনি বলেন, “চীন যে পাকিস্তানে কেবল চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে তা নয়, বরং প্রতিরোধ সামগ্রীও প্রদান করেছে। মহামারি শুরুর সময় তা অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অবশ্যই তারপর আমরা নিজেরাও প্রতিরোধ সামগ্রী উৎপাদন শুরু করেছি। তারপরও চীনের সাহায্য আমাদের জন্য অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ন। চীনের অভিজ্ঞতাও অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ।চীনের প্রতিরোধক অভিজ্ঞতা থেকে আমরা অনেক শিখেছি।  তাই অন্য দেশের চেয়ে পাকিস্তান আরও আগেই কঠিন অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে।পাকিস্তান এখন দ্বিতীয় দফা মহামারির ঢেউ মোকাবিলা করছে। আমরা এখন মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু যদি প্রথম দফা মহামারির সময়ে আমরা চীনের সাহায্য না পেতাম, তাহলে আমার ধারণা আমাদের মহামারি নিয়ন্ত্রণের ফল এত ভালো হওয়া সম্ভব ছিল না।”

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে দুদেশ চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরসহ নানা খাতের সহযোগিতা জোরদার করবে এবং উভয় পক্ষের লাভ ও অর্জন নিশ্চিত করে এমন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীরতর করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।