চীনের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা ও প্রকল্প এগিয়ে যাবে: চীনের উপ বিজ্ঞানকমন্ত্রী
2020-12-21 16:40:14

চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনৈতিক কর্মসভায় আগামি বছরের কাজ নিয়ে ৮টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসবের প্রথমটি হল ‘দেশের কৌশলগত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দক্ষতা জোরদার করা’।

 

কেন একে প্রথম স্থানে রাখা হয়েছে এবং কোন কোন বিষয় নিয়ে বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন করা হবে?  সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ২০২০-২০২১ চীনা অর্থনৈতিক বার্ষিক সম্মেলনে উপ-বিজ্ঞানমন্ত্রী লি মেং  এসব প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর দেন। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমরা পাঠকদের জন্য ওই উপ-মন্ত্রীর উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছি, আমি লিওয়ানলু, শিশির।

 

সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনৈতিক সম্মেলনে ‘দেশের কৌশলগত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দক্ষতা জোরদার করা’ আগামি বছরে সব অর্থনৈতিক কাজের প্রথম স্থানে রাখার কারণ সম্পর্কে লি মেং বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন খুব জরুরি।

 

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত পরিবেশ গভীরভাবে পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে অর্থনীতি ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আমরা। বড় দেশের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মূল বিষয় হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন। যারা প্রযুক্তিগত আধিপত্য অর্জন করে, তারা দেশের উন্নয়নকে সামনে নিয়ে যেতে পারে। তাই আমাদেরকে  বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন দ্রুততর করতে হবে এবং উন্নয়নের আধিপত্য নিজেদের হাতে রাখতে হবে’।

 

সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনৈতিক সম্মেলনে বলা হয়, কৌশলগত চাহিদা অনুযায়ী দেশের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার উপর বাধা তৈরি করে এমন সমস্যা প্রথমে সমাধান করা হবে। লি মেং বলেন,  আজকাল বিশ্বে একধরনের তথ্য ও প্রযুক্তি আবিষ্কার হয়েছে, এটি চলমান প্রযুক্তির উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম। ফলিতগবেষণা এবং লক্ষ্যভিত্তিক মৌলিক গবেষণা জোরদার করা চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

 

লি মেং বলেন, ‘একদিকে আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়নের নিয়ম মেনে চলব এবং মৌলিক গবেষণা করতে উৎসাহ দেব। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ ফলিতগবেষণার মাধ্যমে নতুন বৈজ্ঞানিক তথ্য অর্জন করব। দুটি কাজ একসঙ্গে করা আমাদের বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উন্নয়নের বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই আমরা মৌলিক গবেষণার কার্যক্রমের পরিকল্পনা তৈরি করছি’।

 

সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনৈতিক সম্মেলনে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিনিময় জোরদার করবে চীন। লি মেং বলেন, চীনের আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ওপর  কোন কোন দেশ বাধা দেয়। আসলে এসব তাদের মনের ভয়ের প্রতিফলন। এমন অবস্থায় চীন উন্মুক্ত মনোভাব নিয়ে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার পদ্ধতি প্রসারিত করবে।

 

তিনি বলেন, ‘উদ্ভাবন প্রধান বড় দেশের সঙ্গে চীন সহযোগিতা  এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং বহুপক্ষীয় ও দ্বিপক্ষীয় বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার সম্ভাবনা খুঁজে দেখবে। ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের আওতায় বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে চীন। বিশ্বের টেকসই উন্নয়ন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর দৃষ্টি রাখার পাশাপাশি বিশ্বের গবেষণা তহবিল স্থাপন করবে। আগে আমরা যুক্তরাষ্ট্র  ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত গবেষণায় অংশগ্রহণ করেছি। বর্তমানে আমাদের আর্থিক ভিত্তি আছে। তাই নিজেরাই তহবিল স্থাপন করতে পারি। চীনের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক  পরিকল্পনা ও প্রকল্প এগিয়ে যাবে এবং বিভিন্ন দেশের বৈজ্ঞানিক যৌথ গবেষণা উৎসাহিত করবে। বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চীন বুদ্ধি ও জ্ঞান প্রদান করবে।(শিশির/এনাম/আকাশ)