গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত চীনের বার্ষিক কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক কর্মসম্মেলন বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে আগামী বছরের অর্থনৈতিক কাজের সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চীনের নতুন উন্নয়নের সূচনা বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে শক্তি যুগিয়েছে
প্রশ্ন হচ্ছে: চীন কিভাবে অর্থনীতির মানসম্পন্ন প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি, টেকসই উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে? চীনা সরকারের উদ্দেশ্য, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা, তবে তা করতে হবে পরিবেশের ক্ষতি না করে। সামাজিক নিশ্চয়তা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার পরিবেশ ও মানও উন্নয়ন করতে হবে। নির্দেশনায় বলা হয়, চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের জন্য আরও বেশি প্রযুক্তিবিদ ও দক্ষ ব্যক্তি প্রয়োজন। সেজন্য চীনের উচিত একটি সম্পূর্ণ বীমা-চিকিত্সা-সামাজিক নিশ্চয়তা-বেকারত্ব সহায়তাব্যবস্থা গড়ে তোলা। এ ব্যবস্থা বিশ্বের অর্থনীতির প্রাণশক্তি উন্নয়নের জন্যও সহায়ক হবে।
চলতি বছর গোটা বিশ্বেই কোভিড-১৯ মহামারী ছড়িয়ে পড়ে। সেজন্য বৈদেশিক বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ অবস্থা মোকাবিলায় চীন ‘ডাবল সার্কুলার’ অর্থনৈতিক কাঠামো কার্যকর করে। এতে কি চীনের সঙ্গে অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক যোগাযোগ কমে যাবে। এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে: না। চীন একটি উন্মুক্ত দেশ। চীন বৈদেশিক বাণিজ্য থেকে উপকৃত হয়, গোটা বিশ্বও চীনের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ থেকে উপকৃত হচ্ছে ও হবে। চীন অবশ্যই বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ প্রক্রিয়া জোরদার করবে। যদিও চীনের সঙ্গে কোনো কোনো দেশের কোনো কোনো বিষয়ে মতভেদ রয়েছে, তবুও চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, অর্থনীতির বিশ্বায়নের ঐতিহাসিক প্রবণতা কখনও পরিবর্তন হবে না। চীন অবশ্যই ইতিহাসের প্রবণতা অনুসরণ করে চলবে। দেশের বাজার উন্নয়ন করার চেষ্টা হলো প্রাকৃতিক ও স্বাভবিক নিয়ম। কিন্তু দেশের বাজার উন্নয়নের পাশাপাশি চীন বৈদেশিক বাণিজ্যকেও আঁকড়ে ধরে থাকবে। চীনের দরজা কখনও বন্ধ হবে না। চীন নিজের অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি অন্যান্য দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বজায় রাখবে। বিশ্বের ‘মূল্য চেইনে’ চীন আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বর্তমানে বাণিজ্যে সংরক্ষণবাদ ও একপক্ষবাদ প্রচারিত হচ্ছে। কিন্তু এটি বিশ্বের বাণিজ্যিক কাঠামোর ক্ষতি করেছে এবং বাণিজ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান বিশ্বের বাণিজ্য শুধু পণ্যের বাণিজ্য নয়, এর মধ্যে পরিসেবা বাণিজ্য ও তথ্য-যোগাযোগও অন্তর্ভুক্ত আছে। এর মধ্যে তথ্যের বিনিময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য ভবিষ্যতে উন্নয়নের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের উচিত যৌথভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। (মুক্তা/আলিম)