মহামারির প্রক্ষাপটে চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম কেনাকাটা উৎসব ‘ডাবল টুয়েলভ’
2020-12-19 19:22:30

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা হয় কোন দিন? অবশ্যই ডাবল ইলেভেন বা ১১ই নভেম্বর। চীনে এ দিনটিতে রীতিমত কেনাকাটার উত্সব শুরু হয়। এরপর চীনের দ্বিতীয় কেনাকাটা উত্সব হয় ডাবল টুয়েলভ বা ১২ ডিসেম্বর। চলতি বছর চীনের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো ১২ ডিসেম্বর আরও বেশি তত্পর হয়ে ওঠে। বিশেষ করে মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সরকার ঘোষিত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার হাত ধরে ভোক্তা বাজারকে চাঙ্গা করা হয়। তারই ফলাফল হিসেবে এদিন অনলাইনে তুমুল কেনাকাটা উত্সব দেখা যায়।

 

এবারের ‘,ডাবল ১২’ কেনাকাটা দিবসে জেডি ডট কম বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করে গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আরেকটি ওয়েবাসাই ‘পিডিডি’, বছরের শেষের দিকে আমদানিকৃত বিভিন্ন ফলমূলের দামে ডিসকাউন্ট ঘোষণা করে। জানা গেছে- এবারে বিক্রির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি। এসবের মধ্য দিয়ে একটি বিষয়ই প্রকাশ পায়। তা হলো- চীনাদের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে। মহামারি সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে যখন গোটা বিশ্বের অর্থনীতি পিছিয়ে পড়েছে- তখন চীনাদের সক্ষমতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

এ বছরের শেষ দিকে চীনের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উত্পাদনকাজ পুনরায় শুরু হয়। বিশেষ ধরনের উত্পাদন কাজও শুরু হয়। যেমন মহামারি প্রতিরোধক সামগ্রী তৈরি। গোটা চীনের নানা প্রতিষ্ঠান তাদের উত্পাদনের ধরণ ও ব্যবসার নীতি পরিবর্তন করেছে। চীন সরকারের ঘোষিত ডাবল লুপ বা দ্বৈত চক্র নীতি দেশ ও বিদেশের বাজার উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। এর ইতিবাচক প্রভাব সবার আগে চীনের মধ্যে দেখা গেছে। আর তা হলো সামগ্রিক ভোগ বেড়েছে এবং ভোক্তাবাজার চাঙ্গা হয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়- বছরের তৃতীয় ও চতুর্থ প্রান্তিক থেকে চীনাদের ভোক্তা চাহিদা উন্নত হচ্ছে। দেশীয় ভোক্তাদের উত্সাহ দিতে গত ‘ডাবল ১২’ অনলাইন কেনাকাটা দিবসে নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হয়- যা গ্রাহকদের আর্থিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে আগ্রহী করে তোলে।

 

এ বছরের শুরুর দিক থেকেই, নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর প্রেক্ষাপটে, গোটা বিশ্বের মতো চীনেও অনেক দোকান বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় যা অনলাইন অর্থনীতির দ্রুত বিকাশে আরও বেশি সুযোগ বয়ে এনেছে। বিশেষ করে অনলাইনের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোর কেনাকাটা বেড়েছে। অনেকেই তাদের পণ্যসামগ্রী অনলাইন স্টোরে বিক্রি করছেন। এতে করে তাদের দোকান বা স্থাপনার খরচ যেমন কমেছে তেমনি অনেক পরিশ্রমও সাশ্রয় হয়েছে। এই সুযোগে চীনের সরবরাহ খাতের কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে, এ খাতটি আরও উন্নত হয়েছে এবং রিয়েল টাইম পজিশনিং প্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগ ও কর্মসংস্থানের পরিমাণ বেড়েছে। বেশ কয়েকটি চীনা ডেলিভারি কোম্পানি এখন বিশ্বমানে উন্নীত হয়েছে ও বিশ্বব্যাপী গ্রাহক সেবা পৌঁছে দিচ্ছে।

 

বছরের প্রথমার্ধে মহামারী কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করায়  দেশের সামষ্টিক সামাজিক ও ব্যবসায়িক ব্যবস্থা এবং লজিস্টিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এ প্রক্রিয়ায় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম আরও কার্যকর ও সুবিধাজনকভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে চীনাদের অনলাইন কেনাকাটা ও এর প্রবৃদ্ধি ক্রমশ বাড়ছে।