মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর ভূমিকা রেখেছে: পাক প্রেসিডেন্ট
2020-12-15 15:01:14

মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর ভূমিকা রেখেছে: পাক প্রেসিডেন্ট

ডিসেম্বর ১৫: বিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর, এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তান ও চীন যৌথভাবে অংশগ্রহণ করে। এতে এই দুটি দেশে ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম হয়েছে এবং মহামারী নিয়ন্ত্রণে থেকেছে। পাশাপাশি, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর প্রকল্পের বাস্তবায়নকাজও মহামারীর বিশেষ সময়পর্বে সুষ্ঠুভাবে চলেছে এবং এক্ষেত্রে দুর্দান্ত অগ্রগতিও অর্জিত হয়েছে। গতকাল (সোমবার) পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি রাজধানী ইসলামাবাদের প্রেসিডেন্টভবনে চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, চীনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান মহামারী মোকাবিলায় সফল হয়েছে। এ ছাড়া, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরও মহামারি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

প্রেসিডেন্ট বলেন, স্বল্পকালের মধ্যে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করেছে চীন, যা প্রশংসাযোগ্য। এই সম্পর্কে তিনি বলেন,

 

‘আমি মনে করি, এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে চীন বিশাল প্রচেষ্টা চালিয়েছে ও সফল হয়েছে, যা একটি বাস্তব সত্য। একটি বড় রাষ্ট্র হিসাবে চীন মহামারীর বিস্তারকে দু’এক মাসের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং আজও তা সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে আমি চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের আমন্ত্রণে চীন সফর করেছি এবং আমার এ বিশ্বাস প্রকাশ করেছি যে, চীনা জনগণ সফলভাবে এই মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম।’

পাকিস্তানে মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে চীন পাকিস্তানকে পর্যায়ক্রমে ৭ দফায় চিকিত্সা-ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করেছে এবং দুই দফায় অ্যান্টি-মহামারী চিকিত্সা-বিশেষজ্ঞদল পাঠিয়েছে। এতে মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের অনেক সুবিধা হয়েছে। অন্যভাবে বললে, পাকিস্তান ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সবচেয়ে বেশি চীনা সহায়তা পেয়েছে। যে-কোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি ত্রাণসামগ্রীও পেয়েছে পাকিস্তান। পাক প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন যে সহায়তা দিয়েছে, তা পাকিস্তানের জন্য অন্ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সম্পর্কে তিনি বলেন,

 

‘মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে খুব ভাল সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। পাকিস্তানের সাথে অ্যান্টি-মহামারীর অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেছে চীন; পাকিস্তানে চিকিত্সাদল পাঠিয়েছে; এবং চীনা মেডিকেল টিমও দু’বার আমার সঙ্গে দেখা করেছে। আমরা চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছি, কারণ এটি বৈশ্বিক মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রথম সফল অভিজ্ঞতা। চীনের অভিজ্ঞতা থেকে যেসব দেশ শিক্ষা নিয়েছে, তারাও মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভাল ফলাফল অর্জন করেছে।’

তিনি আরও বলেন, চীনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর কারণে পাকিস্তানের ওপর মহামারির নেতিবাচক আর্থিক প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে। মহামারির মধ্যেও পাকিস্তানের জিডিপি ০.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ ছাড়া, মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পরও চীন ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলো চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের কাজ এগিয়ে নিয়েছে। মহামারীর কঠিন সময়ে করিডোর প্রকল্প বাস্তবায়নকাজ থেকে থাকেনি। এই সময়ের মধ্যেই মের্তিয়ারি-লাহোর এইচভিডিসি ট্রান্সমিশন প্রকল্পের বাস্তবায়নকাজ সম্পন্ন হয়েছে; কোচারা ও পাটান জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুসহ বিভিন্ন সবুজ ও দূষণমুক্ত জ্বালানি প্রকল্পের অনুমোদনচুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। পাশাপাশি, এসময় কারাকোরাম হাইওয়ের দ্বিতীয় ধাপের আপগ্রেডেশান প্রকল্পটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লাহোরের রেল ট্রানজিট অরেঞ্জ লাইনের প্রকল্পটির বাস্তবায়ন পাকিস্তানকে ‘নগররেল যুগে’ প্রবেশ করিয়েছে।

মহামারী চলাকালে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বাস্তবায়নে অর্জিত দুর্দান্ত অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)