২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চীনে ‘গ্রামাঞ্চল পুনরুদ্ধার কৌশল পরিকল্পনা ২০১৮-২০২২’ প্রকাশিত হয়। এতে শিল্পের সমৃদ্ধকরণ, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা, গ্রামীণ সভ্যতা উন্নয়ন এবং ধনী জীবন গঠনের চাহিদা অনুযায়ী চীনের গ্রামাঞ্চল পুনরুদ্ধার-কৌশল নির্ধারণ করা হয়।
চীনের গ্রামাঞ্চল পুনরুদ্ধার কাজের সাফল্য উল্লেখযোগ্য। গ্রামাঞ্চল পুনরুদ্ধার বলতে কৃষি, গ্রাম ও কৃষক এই তিন ক্ষেত্রকে বোঝায়। কৃষি খাতে চীনের বৃহত্তম অর্জন হলো- চীনে ফসল উত্পাদন বজায় রাখা হয়েছে। গত বছর চীনের খাদ্য উত্পাদনের পরিমাণ ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এর ফলে চীনের অর্থনীতিও স্থিতিশীলভাবে প্রবৃদ্ধি হয়।
শিল্প খাত সমৃদ্ধ করা হলো গ্রামাঞ্চল পুনরুদ্ধারের প্রধান কৌশল। শিল্প খাতে সমৃদ্ধ হলে গ্রাম আরো আর্কষণীয় স্থানে পরিণত হবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মানবসম্পদ গ্রামে যাবে। গ্রামাঞ্চল পুনরুদ্ধার কৌশল কার্যকরের পর থেকে এ পর্যন্ত চীনে ১৬০০টি কৃষিজাত দ্রব্য উত্পাদনের বৃহত্ ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে; কৃষিজাত দ্রব্য উত্পাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮১ হাজারেরও বেশি হয়েছে। এসব স্থানে আয় হয়েছে ২২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। এর মাধ্যমে তিন কোটিরও বেশি কৃষকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে, চীনে কৃষিজাত দ্রব্য উত্পাদন থেকে আয় হবে ৩২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান; গ্রামীণ পর্যটন শিল্পে চার বিলিয়ন পর্যটককে সেবা দেওয়ার মাধ্যমে ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান আয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া গ্রামের অবকাঠামো নির্মাণ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশল। গ্রামকে আর্কষণীয় করতে পারলেই মানুষ গ্রামে যাবে ও থাকবে। চীনে প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ এবং গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণকাজ জোরদার করা হয়েছে; যাতে গ্রামাঞ্চলে সবার বাড়িঘরকে সুন্দর করা যায়।
এখন চীনের অধিবাসীরা মনে করছেন, তাদের থাকার পরিবেশ অনেক উন্নত হয়েছে, বিভিন্ন অবকাঠামো-ব্যবস্থা আরো সুসংহত হয়েছে, তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। বর্তমানে গ্রামাঞ্চল হলো তরুণ-তরুণীদের নিজের সামর্থ্য প্রয়োগের একটি নতুন ক্ষেত্র। জীবন সম্পর্কে তরুণদের আস্থা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।
চীনের গ্রামাঞ্চল পুনরুদ্ধার কৌশল বাস্তবায়নের তিন বছরে গ্রামীণ অঞ্চলে শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে ৬৫ শতাংশ, আবর্জনা ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা নির্মাণের হার ৯০ শতাংশেরও বেশি। গ্রামের পরিবেশ উন্নত করার তিন বছরের লক্ষ্য মোটামুটি সম্পন্ন হয়েছে। গ্রামে পানি, বিদ্যুত্, সড়ক ও টেলিযোগাযোগসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের কাজ আরো দ্রুত হয়েছে। শিক্ষা, চিকিত্সা, অবসরপ্রাপ্তদের সেবাসহ বিভিন্ন সেবার মান অব্যাহতভাবে বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি, গ্রামের পরিচালনা ব্যবস্থা আরো পুর্ণাঙ্গ করা হচ্ছে। এভাবে গ্রামের চেহারা ধীরে ধীরে সুন্দর হয়ে উঠছে।
(শুয়েই/তৌহিদ)