ডলমা রাম হলেন চীনের তিব্বতী জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ছাংদু মাংখাং জেলার নাস্যি থানার মানুষ। তিনি ১৯৮৪ সালের জুলাই মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে গুওলাছং নামের পারিবারিক হোটেলের মালিকা।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় ডলমা রামের বাবা-মা রোগে আক্রান্ত হন। তাঁর আরো দু’জন বোন আছে। তাঁর পরিবা অনেক দরিদ্র ছিল। তখন থেকে রাম বিদ্যালয় ত্যাগ করে কাজ করা শুরু করে।
জিয়াজিয়া নুডলস হলো রামের জন্মস্থানের এক ধরণের খাবার। তখন নাস্যি থানায় অনেক জিয়াজিয়া নুডলসের রেস্তোরাঁ ছিল। তখন অধিকাংশের ব্যবসা ভাল ছিল না। কিন্তু এ ধরণের ঐতিহ্যগত খাবার তৈরী শেখা শুরু করেন তিনি। তিনি আস্তে আস্তে খুবই সুস্বাদু জিয়াজিয়া নুডলস রান্না করা শেখেন।
পরিশ্রম করলে সাফল্য আসে। রাম নিজের জিয়াজিয়া নুডলসের রেস্তরাঁ খুলে বসেন। তাঁর রেস্তরাঁ আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হয়। রামের বার্ষিক আয় আগের ১০ হাজার থেকে বর্তমানে ৬০ হাজার ইউয়ানে উন্নীত হয়েছে। রাম নিজের পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা দিয়ে বাবা-মার চিকিত্সা করিয়েছেন এবং দু’বোনকে লেখাপড়া করিয়েছেন।
২০১০ সালে রামের পরিবার ২৫ হাজার ইউয়ান ভর্তুকি পায়। রাম একটি ৩০০ বর্গমিটারের তিব্বতী বৈশিষ্ট্যময় ভবন নির্মাণ করেন। তিনি গুওলাছং নামের একটি পারিবারিক হোটেল খোলেন। এরপর মাংখাং জেলার পৌর সরকার রামের মতো স্থানীয় পারিবারিক হোটেলের মালিকাদেরকে নিয়ে ইউয়ান প্রদেশের লিজিয়াং, দালি ও শ্যাংরি-লা পরিদর্শন করে এবং তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়। তাঁরা ইউয়ান প্রদেশের পারিবারিক হোটেলের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন।
ফিরে আসার পর রাম নিজের পারিবারিক হোটেলের সামনে একটি গাড়িপার্ক নির্মাণ করেন এবং রেস্তরাঁয় খাওয়ার সময় পর্যটকদের সামনে স্থানীয় লোকসংগীত ও নাচ পরিবেশন করা শুরু করেন।
বর্তমানে রামের পারিবারিক হোটেলে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জন পর্যটক আসেন। প্রতিদিন আয় কমপক্ষে ৭০০ ইউয়ান। ২০১৭ সালে রামের আয় ছিল ৫ লাখ ইউয়ান। ২০১৭ সালে স্থানীয় সুবিধাব্যবস্থায় রাম ৩০ লাখ ইউয়ান ঋণ নিয়েছেন। তিনি নিজের হোটেল ও রেস্তোরাঁ মেরামত করেছেন ও নতুন করে সাজিয়েছেন।
ধনী হওয়ার পর রাম প্রতিবেশীদেরকে সহায়তা করা শুরু করেন। তিনি বলেন, সবাই ধনী হলেই সত্যিকারের ধনী হওয়া যাবে। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেন। ছিরেনইয়াংচং হলেন তাঁদের মধ্যে একজন। তিনি রামের রেস্তরাঁয় কাজ করেছেন পাঁচ বছর। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ করতেন। বর্তমানে তিনিও একটি ছোট রেস্তরাঁ খুলেছেন। তাঁর বার্ষিক আয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার ইউয়ান।
বর্তমানে রাম আরো ১০টি দরিদ্র পরিবারকে সহায়তা করছেন। রাম বলেন, সরকারের দারিদ্র্যবিমোচন কার্যক্রম তাঁদের সুন্দর জীবন বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে।