সংবাদ পর্যালোচনা: ১৭তম চীন-আসিয়ান প্রদর্শনী সম্পন্ন
2020-12-01 15:45:56

চারদিনব্যাপী ১৭তম চীন-আসিয়ান প্রদর্শনী গতকাল (সোমবার) চীনের কুয়াং সি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী নান নিং শহরে সম্পন্ন হয়। এবারের প্রদর্শনীতে সরাসরি ও অনলাইনের মাধ্যমে মোট ৮৬টি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সহযোগিতামূলক বিনিয়োগ প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এসব প্রকল্পে বিনিয়োগের মোট পরিমাণ ধরা হয়েছে ২৬হাজার ৩৮৭কোটি ইউয়ান। গত মেলার তুলনায় এ পরিমাণ ৪৩.৬ শতাংশ বেশি।

 

প্রদর্শনী চলাকালে চীন,থাইল্যান্ড,কম্বোডিয়া ও ফিলিপিন্সের ৬টি প্রতিষ্ঠান অনলাইনে একটি সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ফিলিপিন্সে চীনের ‘পেই তৌ-৩’ উপগ্রহের বেস নির্মাণ করা হবে। ফিলিপিন্সের টেলিকম কোম্পানির চেয়ারম্যান ইয়ে চৌ জানিয়েছেন, ‘ভবিষ্যতে ‘পেই তৌ-৩’ উপগ্রহ ব্যাপকভাবে ফিলিপিন্সে কাজে লাগানো হবে। যাতে করে দেশটির কৃষি অবকাঠামো, খনিজ ও টেলিযোগযোগসহ নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়। চীন-আসিয়ান প্রদর্শনী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের জন্য সম্প্রীতি জোরদারের সুযোগ এনে দিয়েছে”।

 

প্রদর্শনীতে স্বাক্ষরিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে হাইটেক শিল্প ও আর্থিক খাতের প্রকল্পের পরিমাণই  ৮০ শতাংশ। গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, আকার ও গুণগত মানসহ সব দিক থেকেই এবারের প্রদর্শনী পূর্বের সকল প্রদর্শনীগুলোর সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

 

বিশেষ করে এবারে প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে। আর এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব্যাপক পরিমাণে সহযোগিতামূলক প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

 

চীন-আসিয়ান প্রদর্শনীর মহাসচিব ওয়াং লেই বলেন,প্রায় ২ হাজারটি প্রতিষ্ঠান অনলাইনে অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাই ২০ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘প্রদর্শনীটি অনলাইনেও অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে এর নির্দিষ্ট কোন আয়তন থাকে নি। সারা বিশ্ব থেকে যে কেউ চাইলেই এবারের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে।

এবার ১০০টিরও বেশি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। পূর্বের প্রদর্শনীগুলোতে সরাসরি বাণিজ্যিক ম্যাচ করা হতো। কিন্তু এবার অনলাইনে সে কাজ করা হয়েছে। সব প্রতিষ্ঠান অনলাইনে সময় ঠিক করে প্রকল্প ও পণ্য নিয়ে বৈঠক করেছে। অনলাইনে ৩০০০টি প্রতিষ্ঠানকে ম্যাচ করা হয়েছে।

তাছাড়া বিশ্বের শীর্ষ ৫০টি প্রতষ্ঠানসহ ১৭০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান এবারের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ২২টি ‘এক অঞ্চল,এক পথ’ উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট দেশের ১০৮টি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া এবার কফি, বিস্কুট ও পাখির বাসাসহ নানা পণ্য প্রদর্শন করেছে।  সেদেশের অংশগ্রহণকারীরা বলেন, চীন-আসিয়ান প্রদর্শনী তাদের জন্য ভালো প্ল্যাটফর্ম তৈরী করেছে। এ প্ল্যাটফর্ম ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের ব্যাপক বিক্রিতে সহায়ক হয়েছে। চীনে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীন ও ইন্দোনেশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মোট ৫৫৬০কোটি মার্কিন ডলার। চীন এখনও ইন্দোনেশিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার’।

প্রদর্শনীটিতে ১০টি উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম আয়োজিত হয়েছে। এতে তৃতীয় চীন-আসিয়ান স্বাস্থ্য বিষয়ক সহযোগিতামূলক প্রস্তাব,এবং ১০+৩ তরুণী বিজ্ঞানীদের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন সহযোগিতামূলক প্রস্তাব প্রকাশ করা হয়েছে। 

এছাড়াও এতে চীন-আসিয়ান আন্তঃদেশীয় চিকিৎসা সহযোগিতা প্ল্যাটফর্ম,চীন-আসিয়ান পৃথিবীর বিগ ডেটা বিষয়ক আঞ্চলিক সৃজনশীল কেন্দ্র,এবং চীন-আসিয়ান ইন্টারনেট এ্যাপলিকেশনস বিষয়ক যৌথ সৃজনশীল কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়।

 

ডিসেম্বর ১,২০২০

চায়না মিডিয়া গ্রুপ(সিএমজি) থেকে ওয়াং তান হোং(রুবি)