সংবাদ পর্যালোচনা: মহাকাশে চীনের অনুসন্ধান
2020-11-30 15:58:31

নভেম্বর ২০:  চীনের চন্দ্র অনুসন্ধানযান ‘ছাং এ-৫’ বর্তমানে চাঁদের কক্ষপথ অতিক্রম করছে। চন্দ্রযানটি  ‘কোভিড-১৯’ মহামারি প্রতিরোধ বিষয়ক ‘ভালোবাসার মাধ্যমে জয় করতে দৃঢ় আশাবাদী’ শীর্ষক সংগীত সঙ্গে নিয়ে চন্দ্রপৃষ্টের উদ্দেশ্যে সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছে। ফলে পুরোটা পথজুড়ে ‘ছাং এ-৫’ সুরের মূর্চনা ছড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে।

 

মানব জাতি বরাবরই নানা পদ্ধতিতে মহাকাশ অনুসন্ধান করে আসছে।  এ ক্ষেত্রে চীনও পিছিয়ে নেয়।

চীন ১৯৭০ সালের ২৪ এপ্রিল সর্ব প্রথম সাফল্যের সঙ্গে ‘তোং ফাং হোং-১’ নামের প্রথম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।  তার সঙ্গে ‘তোং ফাং হোং’ শীর্ষক চীনা  সংগীত মহাকাশে সুরের দ্যোতনা ছড়িয়ে ছিল। ঠিক এভাবেই চীন তার মহাকাশ অভিযানের সূচনা করে ছিল।

 

গত ৫০ বছরে একের পর এক উপগ্রহ, রকেট, এবং মহাকাশযানের সফল উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে চীন তার শক্তিশালী হয়ে ওঠার স্বাক্ষর রেখে চলছে। যার ফলে মহাকাশে চীনের অংশীদারিত্বও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

২০০৭ সালে চীনের তৈরি প্রথম অনুসন্ধানযান ‘ছাং এ-১’  চীনের ঐতিহ্যবাহী সংগীত ‘প্রবাহিত জল’সহ ৩০টিরও বেশি সংগীত নিয়ে মহাকাশে উড্ডয়ন করে।  পৃথিবী থেকে ৩.৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চাঁদের কক্ষপথে ‘ছাং এ-১’ সেসব সংগীত বাজিয়েছে।

 

২০০৮ সালে ‘শেন চৌ-৭’ মহাকাশযান চীনের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ চৌ চিয়ে লুন’র গাওয়া অলিম্পিক গেমসের মূল সংগীত ‘পানি ও নদ-নদী’ নিয়ে মহাকাশে প্রবেশ করে।

আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী ফেডারেশনের মহাকাশ পরিবহন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াং ইয়ু কুয়াং জানিয়েছেন,সংগীত মহাকাশে গাওয়া যায় না। তাই সব সংগীতই বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।

গবেষণা ছাড়াও সংগীত নিয়ে মহাকাশে যাওয়ার   আরেকটি লক্ষ্য হচ্ছে মহাকাশ সম্পর্কিত জ্ঞান প্রচার করা।

 

গত ১ নভেম্বর সকাল ১১টা ১৯ মিনিটে চীনের থাই ইউয়ান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ‘লং মার্চ’ নামের পরিবহন রকটের মাধ্যমে ‘পা ই-০৩’ উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এ উপগ্রহ জ্ঞান প্রচারের কাজে ব্যবহার হবে। ‘শিশুদের সুর নিয়ে উপগ্রহটি মহাকাশে যায়। উপগ্রহের স্মৃতিতে শিশুদের গাওয়া গান, কবিতা আবৃত্তি ও শুভেচ্ছাবাণী সংরক্ষিত রয়েছে। পৃথীবি থেকে শিশুরা যন্ত্রের সাহায্যে মহাকাশ থেকে নিজেদের সেই  সুর শুনতে পায়।

 

 (রেকডিং ৫)

 

“মহাকাশ নিয়ে আমার অনেক আগ্রহ রয়েছে। এ অনুষ্ঠানের পর আমার আগ্রহ আরও বেড়েছে। আমি দেশের মহাকাশ অভিযানে অবদান রাখতে চাই। তাছাড়া সুরের মাধ্যমে মানব জাতির বহির সভ্যতা অনুসন্ধানের আওয়াজ প্রকাশিত হয়”।

 

১৯৭৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ‘ভয়েজার-১’ নামক মহাকাশযান মার্কিন সিসিএএফএস বিমান ঘাঁটি থেকে সুদূর মহাকাশ পানে যাত্রা শুরু করে। এতে রয়েছে একটি  কপারডিস্ক রেকর্ড, যাতে মানব জাতির ৫৫টি ভাষার অভিবাদন রীতি সংরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চীনের ম্যান্ডারিন, এবং ক্যান্টোনিজ ভাষায় অভিবাদন প্রকাশের শব্দও।

 

ইয়াং ইয়ু কুয়াং জানিয়েছেন, বর্তমানে সর্বোচ্চ দূরে থাকা অনুসন্ধান যানের অন্যতম ‘ভয়েজার-১’। তার নেওয়া রেকর্ড বিশেষভাবে নকশা করা হয়েছে, যা মহাকাশে দীর্ঘমেয়াদে রক্ষিত থাকবে।

 

ইয়াং ইয়ু কুয়াং বলেন,

 

(রেকডিং ৮)

 

এটি আসলে সুর সংরক্ষণের পদ্ধতি। মহাকাশে মেধাবী জীবরা মানব জাতির এই রেকর্ড শুনতে পেলে, তারা মানব জাতির শুভেচ্ছা ও তথ্য পেতে পারবে।

 

(রুবি/এনাম/শিশির)