‘জাতীয় মডেল কর্মী’ লুও চাও ছিয়াং-এর একদিন
2020-11-27 14:19:26

‘জাতীয় মডেল কর্মী’ লুও চাও ছিয়াং-এর একদিন

নভেম্বর ২৭: আটচল্লিশ বছর বয়সী লুও চাও ছিয়াং একজন সাধারণ মানুষ। তিনি চীনের দ্রুতগতির রেলপথের একজন দক্ষ শ্রমিক। গত বুধবার তিনি ‘জাতীয় মডেল কর্মী’-এর মর্যাদা লাভ করেছেন।

এটি চীনের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিসি ও চীন সরকার কতৃক সাধারণ মানুষকে দেওয়া সর্বোচ্চ সম্মাননা। এ মর্যাদা লাভকারীরা সমাজে খুবই সম্মানিত হন।

লুও চাও ছিয়াং চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছাংছুন শহরের অধিবাসি। সেখানে অনেত শীত। সব মিলিয়ে তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে সুখে-স্বচ্ছন্দে দিনাতিপাত  করছেন।

তিনি বলেন, তাঁর স্ত্রী একজন আদর্শ গৃহিনি। তাঁর  ছেলে বিদেশে শিল্প নকশার বিষয়ে পড়া-লেখা করছেন। ছেলে যে দেশে পড়ছেন সে দেশের সঙ্গে চীনের স্থানীয় সময়ের ৮ঘন্টা পার্থক্য রয়েছে। ফলে রাতে ছেলেকে মেসেজ পাঠানো ও ফোন করা লুও চাও ছিয়াংয়ের প্রিয় কাজ। ছেলের মনে বাবা হলেন তাঁর গর্ব। লুও চাও ছিয়াং হাসতে হাসতে এ সাংবাদিককে এসব কথা বলেছেন।

‘জাতীয় মডেল কর্মী’ লুও চাও ছিয়াং-এর একদিন

লুও চাও ছিয়াং সিআরআরসি কর্পোরেশন লিমিটেডের ছাংছুন রেলপথ কোম্পানির দ্রুতগতির রেলপথ গ্রুপের উৎপাদন কেন্দ্রের কমিশনিং কর্মশালায় কাজ করেন। চীনের অধিকাংশ পাওয়ার কারের গবেষণা ও উৎপাদন এ কারখানায় হয়। সেজন্য লুও চাও ছিয়াং প্রতি দিন ব্যস্ত সময় পাড় করেন।

প্রতিদিন সকাল সাতটায় তিনি কারখানায় পৌঁছান। যদিও সকালে অনেক শীত পড়ে, তিনি প্রতিদিনই কাজে যোগদান করেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি তাঁর কাজ অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু কাজ করার সময় তিনি অনেক আনন্দে থাকেন। কারণ তিনি নিজের কাজকে ভালো বাসেন।

তাঁর বয়স যখন ৩০, তখন লুও চাও ছিয়াং ট্রেনের কাঠামো গবেষণায় আগ্রহী উঠেন। এক বছর প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি দ্রুতগতির রেলপথের দক্ষ শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি তাঁর সহকর্মীদের কাছে একজন কর্মী গড়ার কারিগড় হিসেবে পরিচিত।

‘জাতীয় মডেল কর্মী’ লুও চাও ছিয়াং-এর একদিন

তাঁর এক সহকর্মী বলেন, লুও চাও ছিয়াং দ্রুতগতির ট্রেনের ডিবাগিং দক্ষতা প্রশিক্ষণ ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন। এ ডিভাইসের মাধ্যমে দ্রুতগতির ট্রেনের উন্নয়নে যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান তিনি রেখেছেন, সেজন্যই তিনি এ রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় সিক্ত হয়েছেন। 

তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎকারের দিন লাঞ্চের পর লুও চাও ছিয়াং সহকর্মীদের সঙ্গে সময় পাড় করেন। এসময় তাঁরা কাজ নিয়ে আলোচনা করেন।

লুও চাও ছিয়াং  বলেন, “চীনের দ্রুতগতির রেলপথের সাফল্যের পিছনে অসংখ্যা কর্মীদের প্রচেষ্টা রয়েছে। আমি শুধু মাত্র কিছু অবদান রেখেছি”।

ওই দিন বিকালে প্রশিক্ষণ সম্মেলনে লুও চাও ছিয়াং ইংরেজিতে বক্তব্য প্রদান করেন। দ্রুতগতির শ্রমিকরা ভালভাবে ইংরেজি পড়তে পারেন।

‘জাতীয় মডেল কর্মী’ লুও চাও ছিয়াং-এর একদিন

বর্তমানে চীন বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে প্রতি ঘন্টায় ৩৫০ কিলোমিটার পাড়ি দেয় এমন দ্রুতগতির ট্রেন চালু রয়েছে। চীনের দ্রুতগতির রেলপথের অপারেটিং মাইলেজ ৩৬হাজার কিলোমিটার ছাড়িয়েছে। চীন হলো দীর্ঘতম দ্রুগগতির রেলপথ অপারেটিং মাইলেজ, বৃহত্তম নির্মাণাধীন, দ্রুত বাণিজ্যিক অপারেশন, এবং বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির রেলপথ প্রযুক্তির দেশ। দ্রুতগতির রেলপথ চীনের বিভিন্ন স্থানকে একই সুতায় গেথেছে। চীনা দ্রুতগতির রেলপথের দ্রুত উন্নয়নের পিছনে এমন অসংখ্য লুও চাও ছিয়াংয়ের মত কর্মীর অবদান রয়েছে।

লুও চাও ছিয়াং যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সেটি গত অক্টোবর মাসে প্রতি ঘন্টায় ৪০০ কিলোমিটার অতিক্রম করতে সক্ষম এমন আন্তঃদেশীয় দ্রুতগতির ট্রেনের উদ্ভাবন করেছে। ট্রেনগুলো বিভিন্ন জলবায়ু, দূরত্ব ও বিদ্যুৎ সরবরাহের মানের দিক দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের। এসব ট্রেনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ভ্রমণকে আরও সুবিধাজনক ও স্বচ্ছন্দ করে তুলবে।

ছাই/এনাম/ওয়াং হাইমান