মহামারির প্রেক্ষাপটে আমদানি মেলা অনুষ্ঠিত; চীনের সার্বিক উন্মুক্তকরণের নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন সি চিন পিং
2020-11-05 15:50:01

 

মহামারির প্রেক্ষাপটে আমদানি মেলা অনুষ্ঠিত; চীনের সার্বিক উন্মুক্তকরণের নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন সি চিন পিং

 

তৃতীয় চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা ৪ নভেম্বর রাতে শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়, চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং অনলাইন ভিডিও মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে মূল ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণে তিনি বলেছেন, নভেল করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত করে তুলেছে; তবে, চীন উন্মুক্তকরণ জোরদার করেছে, উন্মুক্তকরণ ও সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রবণতা পরিবর্তন করেনি। বিভিন্ন দেশের উচিত কল্যাণমূলক সহযোগিতা, অভিন্ন দায়িত্ব, অভিন্ন পরিচালনা-ভিত্তিক উন্মুক্তকরণের জন্য চেষ্টা করা। চীন উন্মুক্তকরণ, সহযোগিতা, একতা, অভিন্ন স্বার্থ অর্জনের ধারণা নিয়ে সার্বিকভাবে উন্মুক্তকরণ বাড়াবে, চীনা বাজার বিশ্বের বাজার, ভাগাভাগির বাজার, সবার বাজার তৈরি করবে, বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধার জোরদার করবে এবং আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য চালিকাশক্তি যোগাবে।

মহামারির প্রেক্ষাপটে আমদানি মেলা অনুষ্ঠিত; চীনের সার্বিক উন্মুক্তকরণের নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন সি চিন পিং

নভেল করোনাভাইরাস মহামারি বিভিন্ন দেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই বিশেষ প্রেক্ষাপটে তৃতীয় চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা সময়মতো শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১৮ সালের পর আমদানি মেলা আন্তর্জাতিক ক্রয়, বিনিয়োগ, সংস্কার, যোগাযোগ, উন্মুক্ত সহযোগিতার প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এ বছরের আমদানি মেলায় আয়তন গতবারের চেয়ে ৩০ হাজার বর্গমিটার বেড়েছে, আর মহামারি প্রতিরোধে বিশেষ জনস্বাস্থ্য প্রদর্শনী এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এসব এলাকায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো অংশ নিয়েছে।

মহামারির প্রেক্ষাপটে আমদানি মেলা অনুষ্ঠিত; চীনের সার্বিক উন্মুক্তকরণের নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন সি চিন পিং

ভাষণে সি চিন পিং বলেছেন, চীন মহামারি প্রতিরোধ নিশ্চিত করার পূর্বশর্তে এই মেলা আয়োজন করেছে। এতে বিশ্বের সঙ্গে বাজারের সুযোগ ভাগাভাগি করা, বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চীনের আন্তরিক ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।

তিনি বলেন, মহামারির নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যেও চীনের উন্মুক্তকরণের গতি বাড়ছে। গতবছরের আমদানি মেলায় উত্থাপিত উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণের পদক্ষেপগুলো সার্বিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে চীন অব্যাহতভাবে আমদানি বাড়াবে। হাইনান অবাধ বাণিজ্য-বন্দর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা, শেনচেনে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ বৃদ্ধির পরিকল্পনা, উচ্চ মানের অবাধবাণিজ্য চুক্তি, আমদানি বাণিজ্যের মাধ্যমে নব্যাতাপ্রবর্তনের দৃষ্টান্তমূলক এলাকা প্রতিষ্ঠা করা, মেধাস্বত্ব রক্ষা, উচ্চ মানের ‘এক অঞ্চল এক পথ’ প্রতিষ্ঠা- ইত্যাদি বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।

 

সি চিন পিং বলেন, মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিকে আরো অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত করেছে। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, যে কোনো ঝুঁকি ও দুর্ঘটনার মধ্যেও মানবজাতি সামনে এগিয়ে যায়। বর্তমানে বিভিন্ন দেশের উন্মুক্তকরণ ও সহযোগিতার প্রবণতা পরিবর্তন হয়নি। আমাদের উচিত একসঙ্গে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা, সহযোগিতা ও যোগাযোগ জোরদার করা এবং কল্যাণমূলক সহযোগিতা, অভিন্ন দায়িত্ব, যৌথ পরিচালনা-ভিত্তিক অভিন্ন উন্মুক্তকরণের  জন্য চেষ্টা করা।

মহামারির প্রেক্ষাপটে আমদানি মেলা অনুষ্ঠিত; চীনের সার্বিক উন্মুক্তকরণের নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন সি চিন পিং

সি চিন পিং বলেন, কিছু দিন আগে সিপিসি’র ঊনবিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির পঞ্চম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে চীনের ‘চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনার’ প্রস্তাব করা হয়। চীন সার্বিক সচ্ছল সমাজ প্রতিষ্ঠা করা ও দারিদ্র্যবিমোচনের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবে, আগামীতে সার্বিকভাবে আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে। চীন দেশীয় অর্থনৈতিক চক্রকে কেন্দ্র করে এবং দেশি-বিদেশি অর্থনৈতিক চক্র গঠন জোরদার করার নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এতে চীনের উন্নয়নের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি, বিভিন্ন দেশও উপকৃত হবে। তিনি বলেন, চীন দৃঢ়ভাবে সার্বিক উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ করবে, চীনের বাজার বিশ্বের বাজার, ভাগাভাগির বাজার ও সবার বাজারে পরিণত হবে।

 

সি চিন পিং ঘোষণা করেন- চীন উন্মুক্তকরণের জন্য ধারাবাহিক পদক্ষেপ নেবে। প্রথমত, নতুন উন্মুক্ত এলাকা প্রতিষ্ঠা করবে, আরো বেশি উন্মুক্তকরণের নীতি কার্যকর করবে এবং উন্মুক্তকরণের ক্ষেত্রে সংস্কার বাড়াবে। দ্বিতীয়ত, বৈদেশিক বাণিজ্যের নব্যতাপ্রবর্তন জোরদার করবে। তৃতীয়ত, অব্যাহতভাবে বাণিজ্যিক পরিবেশ উন্নত করবে। চতুর্থত, দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।

 

সি চিন পিং বলেন, চীন আরো বেশি দেশের সঙ্গে উচ্চ মানের বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের প্রত্যাশা করে, সক্রিয়ভাবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কারে অংশ নেবে, এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের উচ্চ মানের উন্নয়ন জোরদার করবে এবং একসঙ্গে মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করবে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি উন্নয়ন কঠোর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। আমাদের উচিত আস্থা, সাহস জোরদার করে একসঙ্গে বাধা অতিক্রম করা। চীন আশা করে, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে উন্মুক্তকরণের সুযোগ সৃষ্টি করবে, সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করবে এবং একসঙ্গে মানবজাতির সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে।

 

(তুহিনা/তৌহিদ/ছাই)