অনেক বিদেশি কোম্পানির আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় ফের অংশগ্রহণ: বাণিজ্যিক যুযোগ ভাগাভাগি করার প্রত্যাশা
2020-11-04 15:20:56

 

তৃতীয় চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা আজ (বুধবার) রাতে শাংহাইয়ে শুরু হচ্ছে। যারা আগে আমদানি মেলায় অংশগ্রহণ করেছে বা প্রথমবারের মতো অংশ নেবেন, তারা এবারের আমদানি মেলা থেকে অনেককিছু প্রত্যাশা করছেন। তারা আশা করেন, এই বড় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চীনা বাজার উন্নয়নের ফলাফল ও বৈশ্বিক বাণিজ্যিক সুযোগের ভাগ তারা পাবেন।

 

এবারের আমদানি মেলা নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হলেও, বিভিন্ন দেশের বহু কোম্পানি সক্রিয়ভাবে এতে অংশ নিচ্ছে। চলতি বছরের মেলার প্রদর্শনী এলাকার আয়তন গতবারের মেলার চেয়ে ৩০ হাজার বর্গমিটার বেশি। বিশ্বের বিভিন্ন শীর্ষ কোম্পানি মেলায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছা আরও দৃঢ় হয়েছে। গতবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলোর ৭০ শতাংশ এবারের মেলায়ও অংশ নিচ্ছে।

 

বিশ্বের ফার্মাসিউটিকেল গ্লাস প্রস্তুতকারী কোম্পানি জার্মানির SCHOTT এ নিয়ে ৩য় বার আমদানি মেলায় অংশ নিচ্ছে। কোম্পানির বোর্ডের চেয়ারম্যান Frank Heinricht বলেন, তারা আমদানি মেলার বাণিজ্যিক সুযোগ ভাগাভাগি করার ভালো সুযোগ মিস করবেন না। গতবারের চেয়া চলতি বছরের মেলায় তাদের প্রদর্শনী এলাকার আয়তন ৫০ শতাংশ বেড়েছে, পণ্যও আরো বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধ হয়।

Heinricht বলেন: ‘গত দুই বছরে চীনা সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা আমাদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। চলতি বছর সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলের সক্রিয় চেষ্টায় আমদানি মেলা সময়মতো অনুষ্ঠিত হবে, যা প্রশংসার যোগ্য। বর্তমান চীন আমাদের জন্য বৃহত্তম বাজার; আমরা চীনে সক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ করবো। আশা করি, চীনের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা যাবে।’

 

চীন প্রথমে কার্যকরভাবে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং অর্থনীতিও পুনরুদ্ধার করেছে। তাই বিদেশি কোম্পানিগুলো চীনা বাজার নিয়ে অনেক আশাবাদী। দশটিরও বেশি বিদেশি কোম্পানি আগামী তিনটি আমদানি মেলায় অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাপানের শিসিডো এর মধ্যে একটি। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে শিসিডো চীনা কোম্পানির ব্যবসা প্রথমে পুনরুদ্ধার হয়। চলতি বছরের প্রথমার্ধে চীনে শিসিডো’র বিক্রির পরিমাণ ৬.৪৯ বিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছায়। শিসিডো চীনা ব্যবসা কৌশল বিভাগের প্রধান Hase Naoko বলেন, কোম্পানি আশা করে আমদানি মেলার প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চীনে বিনিয়োগ বাড়াবে।

Hase Naoko বলেন: ‘চীনা বাজার নিয়ে আমরা খুবই আশাবাদী। কারণ, মহামারির প্রেক্ষাপটে শুধুমাত্র চীন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছে। তাই আমরা চীনের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করবো। চলতি বছরের মেলায় আমাদের প্রদর্শনী এলাকার আয়তন গতবারের দ্বিগুণ। আমরা আশা করি, আমদানি মেলার মাধ্যমে আমাদের নব্যতাপ্রবর্তন তথ্য প্রচার করা যাবে।’

 

ফ্রান্সের ল’রিয়েল গ্রুপও চীনের স্থিতিশীল ভোক্তা বাজার থেকে উপকৃত হচ্ছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিশ্বে গ্রুপটির বিক্রির পরিমাণ অনেক হ্রাস পায়। তবে চীনা বাজারের বৃদ্ধি গত বছরের চেয়ে ২০.৮ শতাংশ বেশি ছিল। এবারের আমদানি মেলায় ল’রিয়েল অনেক নতুন পণ্য ও প্রযুক্তি নিয়ে আসছে।

ল’রিয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও Jean PaulAgon বলেন: ‘আমদানি মেলা সময়মতো আয়োজন বিশ্বকে একটি স্পষ্ট সংকেত দিয়েছে। আর সেটি হচ্ছে: চীন নভেল করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং চীন উন্মুক্ত ও অভিন্ন স্বার্থ অর্জন করার মনোভাব নিয়ে বৈশ্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি, একটি আরও উন্মুক্ত, সহনশীল, নব্যতাপ্রবর্তনশীল, টেকসই ও দায়িত্বশীল চীন বিশ্বের সঙ্গে সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করে যাবে।’

(তুহিনা/আলিম/ছাই)