জনগণ হচ্ছে চীনের উন্নয়নের মৌলিক চালিকাশক্তি: সিএমজি সম্পাদকীয়
2020-11-03 14:44:10

জনগণ হচ্ছে চীনের উন্নয়নের মৌলিক চালিকাশক্তি: সিএমজি সম্পাদকীয়

‘জনগণের জীবনের মান উন্নত করা’, ‘জনগণের আয় বাড়ানো’, ‘জনগণের লাভ, সুখ ও নিরাপত্তাবোধ জোরদার করা’...... সম্প্রতি প্রকাশিত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ১৯তম কেন্দ্রীয় কমিটির পঞ্চম পূর্ণাঙ্গ অবিধেশনের বিবৃতিতে ‘জনগণ’ শব্দটি ২৩ বার এসেছে। এ থেকে দেখা যায় সিপিসি সবসময় জনকেন্দ্রিক উন্নয়ন ধারণায় অবিচল থাকে এবং জনগণকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

উন্নয়ন কার জন্য? এটি একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল্যবোধসম্পর্কিত একটি প্রশ্ন। চীনের আগের ১৩টি পাঁচসালা পরিকল্পনা দেখে বোঝা যায় চীন সবসময় জনকেন্দ্রিক ধারণায় অবিচল। ‘চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা’ প্রণয়ন প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল ব্যাপকভাবে জনমত সংগ্রহ করা। চীনের সর্বোচ্চ নেতা সি চিন পিং ‘জাতীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা এবং ‘২০৩৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য প্রণয়ন সম্পর্কে সিপিসির প্রস্তাব’-এর খসড়াদলের প্রধান হিসেবে ৭টি আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন, সরাসরি বিভিন্ন পক্ষের মতামত শোনেন। তা ছাড়া, পাঁচসালা পরিকল্পনা প্রণয়নের পর্যায়ে প্রথমবারের মতো অনলাইনে প্রস্তাব সংগ্রহ করা হয়। এমসয়ে ১০ লাখেরও বেশি মন্তব্য পাওয়া গেছে। বলা যায় ‘চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা’ প্রণয়নে মতামত সংগ্রহে অংশগ্রহকারীর সংখ্যা ও উপায়ের বৈচিত্র্য অভূতপূর্ব। এতে সার্বিকভাবে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে, জনগণের চাহিদা পূরণ হয়েছে।

অবিধেশন থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে জনগণের কল্যাণ ও জীবনের মান উন্নত করার জন্য কিছু দাবি ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ প্রস্তাব করা হয়। যেমন: এতে ‘জনগণের কল্যাণ নতুন পর্যায়ে পৌঁছানো’, ‘মাথাপিছু জিডিপি মধ্যম-উন্নত দেশের পর্যায়ে পৌঁছানো’ ইত্যদি লক্ষ্য প্রস্তাব করা হয়। পদক্ষেপে অন্তর্ভুক্ত হয় কর্মসংস্থান, আয়, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, স্বাস্থ্য, প্রবীণের যত্ন, ইত্যাদি বিষয়। এতে সম্পূর্ণভাবে প্রতিফলিত হয় যে, সিপিসি’র জনগণের জন্য দেশ পরিচালনার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ও কার্যকর শক্তি রয়েছে।

জনগণ হচ্ছে চীনের উন্নয়নের মৌলিক চালিকাশক্তি: সিএমজি সম্পাদকীয়

কর্মসংস্থান হল জনগণের জীবিকার ভিত্তি। গত ৫ বছরে চীনের শহরের জেলাগুলোতে নতুন কর্মসংস্থানের সংখ্যা ৬ কোটিরও বেশি। বর্তমানে চীন উচ্চ মানের উন্নয়নের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে এবং আরও বেশি জটিল উন্নয়ন-পরিবেশের সম্মুখীন হচ্ছে। নতুন পরিবর্তন ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বিবৃতিতে ‘সম্পূর্ণ ও আরো উচ্চ মানের কর্মসংস্থানের’ প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। এর মানে আগামী ৫ বছরে চীন কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ করা ও কর্মসংস্থানের মান উন্নত করা—এই দুই ক্ষেত্রে আরও কাজ করবে।

‘জনগণের আয় বাড়ানো’ বিবৃতির অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের সময়ে জনগণের আয় ও আর্থিক সামর্থ্য বৃদ্ধি করা হবে এবং সমাজের বন্টনকাঠামো উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করা হবে। উল্লেখ করা যেতে পারে, এবারের অধিবেশনে প্রথমবারের মতো ‘সব মানুষের অভিন্ন সমৃদ্ধির তাহে অগ্রগতি অর্জন করা’ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হিসেবে উত্থাপন করা হয়। আশা করা যায়, এতে জনগণের লাভ, সুখ ও নিরাপত্তাবোধ বাড়বে।

চীন সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ প্রতিষ্ঠা ও নতুন উন্নয়ন পর্যায়ে প্রবেশ করার ঐতিহাসিক পয়েন্টে কিভাবে চীনা জনগণের জীবন আরো ভালো করবে? কিভাবে সামাজিক উন্নয়নের কল্যাণ মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দেবে? কিভাবে সব মানুষের অভিন্ন সমৃদ্ধি বাস্তবায়ন করবে? সিপিসি’র ১৯তম কেন্দ্রীয় কমিটির পঞ্চম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের এসব প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্ট বলা হয়েছে: ‘জনগণের মৌলিক স্বার্থ বাস্তবায়ন করা, রক্ষা করা ও উন্নয়ন করাকে উন্নয়নের ভিত্তি ও লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করে, অব্যাহতভাবে সুখী জীবনের প্রতি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করে’। এটা হচ্ছে সিপিসি’র চেষ্টার লক্ষ্য, চীনের উন্নয়নের মৌলিক চালিকাশক্তিকে বোঝার চাপিকাঠি।

(তুহিনা/আলিম/ছাই)