v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-05-30 16:42:54    
ভালোবাসা হস্তান্তর

cri

    ১২ মের ভূমিকম্পের পর শুরু থেকে দুই সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এতে অবশ্য ভূমিকম্প দুর্গত অঞ্চলের ওপর থেকে মনোযোগতো সরেইনি বরং সকলেই আরো বেশি করে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। সর্বস্তরের মানুষের আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ত্রাণ-সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে অব্যাহতভাবে। পেইচিং তা হুং মেন পরিবহন কেন্দ্র হচ্ছে দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ-সামগ্রী পরিবহনের অন্যতম কেন্দ্র । আজকের পেইচং অনুষ্ঠানে আমরা সেখানকার পরিস্থিতি দেখতে যাবো।

    ওয়েন ছুয়ানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর দেশের বিভিন্ন স্থানের স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্গত অঞ্চলে গিয়েছেন । তারা ধ্বংস স্তুপ থেকে জীবিত মানুষদের উদ্ধার করার পাশাপাশি খাদ্য ও পানিসহ নানা ধরনের ত্রাণসামগ্রী দুর্গতদের হাতে দেন । চীনের সাধারণ মানুষ ও বেসরকারী সংস্থাগুলো উদ্ধারকাজে স্বেচ্ছায় অংশ নেয়ার দায়িত্ব তুলে দিয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট যে, চীনাদের নাগরিক চেতনা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে ।

    তা হুং মেন ত্রাণ-সামগ্রী পরিবহন কেন্দ্রে এখন এ ধরণের অনেক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। তারা প্রতিদিনের ত্রাণ-সামগ্রী পাঠানোর দায়িত্ব পালন করছেন। এ কেন্দ্রের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি অবহিত করেন যে,ভূমিকম্পের পর দুর্গত অঞ্চলের সাধারণ জনগণের নিত্য -ব্যবহার্য্য দ্রব্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য তা হুং মেন ত্রাণ-সামগ্রী পরিবহন কেন্দ্রে মোট ৩ শ কর্মী সংশ্লিষ্ট সামগ্রী পরিবহনের কাজ করছেন। তবে প্রতিদিন স্থানীয় অধিবাসীরাও এখানে এসে কর্মীদের সঙ্গে একযোগে পরিবহনের দায়িত্ব পালন করে ।এটি আমাকে খুব মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেন" এখন অনেক স্থানীয় মানুষ এখানে এসে আমাদের কর্মীদেরকে ত্রাণ-সামগ্রী পাঠাতে সাহায্য করছেন। দুর্গত অঞ্চলের শিশুদের জন্য অনেক দম্পতি নতুন কাপড় এবং খাবার কিনে নিয়ে আসছেন।"

    নাগরিক চেতনা হলো সমাজের উন্নয়ন ও অগ্রগতির সাথে সাথে এগিয়ে চলা মানবিকবোধ । এর মধ্যে রয়েছে নিজের ও অন্যের অধিকার ও মূল্যবোধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ প। ১৯৯৩ সালে চীনের কমিউনিস্ট যুব লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি চীনে যুব সমাজকে স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানায়। তখন থেকে স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার চেতনা দ্রুত চীনে ছড়িয়ে পড়ে । অনেকেই স্বেচ্ছাসেবক হতে চান । স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে তরুণ-তরুণী থেকে বয়োবৃদ্ধ পর্যন্ত নানা পর্যায়ের বয়সের মানুষ আছে । একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , চীনে স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা আট কোটিতে দাঁড়িয়েছে । ওয়েন ছুয়ানের ভয়াবহ ভূমিকম্পে চীনের অনেক স্বেচ্ছাসেবক এখন তত্পর রয়েছেন । তারা দুর্গত অঞ্চলে গিয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নিচ্ছেন এবং টাকা ও রক্ত দান করে দুর্গতদের সাহায্য করে সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধের পরিচয় দিচ্ছেন । পেইচিংয়ের একজন অধিবাসী লিউ লি বলেন: " ভূমিকম্পের পর ,আমি দুর্গত অঞ্চলের শিশুদেরকে নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন।পেইচিং ওয়েন ছুয়ান থেকে অনেক দূরে হলেও আমি এতে অবদান রাখতে আগ্রহী। আশা করি, দুর্গতরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুনরায় নিজেদের সুন্দর পরিবার গড়ে তুলতে পারবেন ।"

    ভূমিকম্পের পর চীনের বিভিন্ন শহরের অনেক মানুষ স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়েছেন । অনেক গণ কল্যাণ সংস্থা দুর্গতদের সাহায্য করার অনুরোধ জানিয়েছে । কিছু ওয়েবসাইট ইন্টারনেটে দুর্গতদের টাকা দেওয়ার আহ্বান জানালে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায় । তিব্বতের ভিক্ষুরা নিহতদের আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন । দুর্গত অঞ্চলে বাবা -মা হারানো ছেলেমেয়েদের মানসিক সাহায্য দেওয়ার জন্য সাংহাইয়ের কিছু স্বেচ্ছাসেবক দুর্গত অঞ্চলে গিয়েছেন । চীনের নামকরা কণ্ঠশিল্পী লি সুয়ান চিয়ান ১৮ মে একটি অনুষ্ঠানে বলেন , শিশুসহ অনেক মানুষ এখনো মাটির নীচে আটকা পড়ে আছে।

    একই সঙ্গে পেইচিং রাস্তায় অনেক গাড়ির গায়ে হলুদ রঙের রেশমি ফিতা দেখা যায়। তা হুং মেন পরিবহন কেন্দ্রেও ধরণের গাড়ি রয়েছে। একজন দয়ালু ব্যক্তি অবহিত করেন যে, হলুদ রঙের রেশমি ফিতা অভিযানের উদ্দেশ্য হচ্ছে সি ছুয়ান প্রদেশের ভূমিকম্প দুর্গত অঞ্চলের সাধারণ জনগণের ত্রাণ কাজ এগিয়ে নেয়া। তিনি বলেন:" চীনারা সবাই এক পরিবারের স্বজন । কোন একজনের ঝামেলা হলে অন্যরা নিশ্চয় তাকে সাহায্য করবে। সি ছুয়ান প্রদেশের ভূমিকম্প দুর্গত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ চিন্তা করবেন না, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।"

1 2