1230
|
গত ২২ ডিসেম্বর তৃতীয় মহাকাশ বিশ্বায়ন উন্নয়ন ফোরামে চীনা মহাপ্রাচীর শিল্প কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ইন লি মিং বলেন, ভবিষ্যতে 'মহাকাশ রেশমপথ'-এর নির্মাণ 'এক অঞ্চল, এক পথ'-কৌশলের ওপর নির্ভর করবে এবং চীনা মহাকাশ শিল্পের বিশ্বায়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, "টেলিযোগাযোগ, ন্যাভিগেশন ও রিমোট সেন্সিংসহ নানা প্রযুক্তি আমাদের পণ্য এবং অবকাঠামোর একটি অংশ হিসেবে সার্বিক সেবা দিতে পারে। এ পণ্যগুলো ও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো 'এক অঞ্চল, এ পথ'-এ আন্তঃযোগাযোগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আসিয়ান, আরব ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়ন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে অনেক প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করছি আমরা। তা ছাড়া, বহুপক্ষীয় সংস্থা যেমন ব্রিকস্ গ্রুপের সাথে আমরা রিমোট সেন্সিংবিষয়ক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করছি এবং সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সাথে আমরা মোবাইল যোগাযোগবিষয়ক সহযোগিতা করব।"
গত ১৭ ডিসেম্বর চীন 'উ খুং' নামক 'কৃষ্ণ পদার্থ কণা চিহ্নিতকরণ উপগ্রহ' (Dark matter particle detection satellite) উত্ক্ষেপন করে। এটি এ ক্ষেত্রে চীনের পাঠানো প্রথম উপগ্রহ। ২৪ ডিসেম্বর, উত্ক্ষেপনের দিন থেকে পরবর্তী ৭ দিনে উ খুং ধারাবাহিক কিছু টেস্ট করে এবং চীনা বিজ্ঞান অ্যাকাডেমিতে বিভিন্ন উপাত্ত পাঠায়। উ খুং ইতোমধ্যেই প্রচুর উপাত্ত পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। শতাধিক বিজ্ঞানী এখন সেই উপাত্তগুলো নিয়ে গবেষণা করবেন। ৬ মাস থেকে এক বছর পর এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হবে।
সম্প্রতি প্যারিসে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে স্বাক্ষরিত হয় 'প্যারিস চুক্তি'সহ বিভিন্ন দলিল, যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিহাসিক অর্থবহ। ২৩ ডিসেম্বর চীনা জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিশেষ দূত সিয়ে চেন হুয়া বলেন, 'প্যারিস চুক্তি' জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার চলমান প্রক্রিয়ায় একটি মাইলফলক। যদি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় চীন নিজের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করে, তাহলে দেশে দূষণ ৪২ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব। সিয়ে চেন হুয়া বলেন, "আমি বিশ্বাস করি, যে গুরুতর পরিবেশ সমস্যার আমরা সম্মুখীন, তার সমাধান করতে পারব। কেবল আমরা যদি চলমান নীতি, ব্যবস্থা অনুযায়ী বিশেষ করে উত্পাদন, উন্নয়ন, জীবনযাপনের রীতি পরিবর্তন করি, তাহলে পরিবেশ সমস্যা সমাধান করতে পারব। হয়ত আমরা আরও দ্রুত এ সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারব, কারণ আমাদের ভাল ব্যবস্থা আছে।"
গত জুন মাসে, জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন কাঠামো কনভেনশন সচিবালয়ের কাছে চীন একটি দলিল উপস্থাপন করে। দলিলে বলা হয়েছে, চীনা কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা যত দ্রুত সম্ভব সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে যাবে। কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ ২০০৫ সালের চেয়ে ৬০-৬৫ শতাংশ কমানো হবে এবং জ্বালানিতে অ-জীবাশ্ম জ্বালানির অংশ হবে ২০ শতাংশ। তা ছাড়া, বনাঞ্চলের আয়তন ২০০৫ সালের চেয়ে ১৫০ কোটি ঘনমিটার বাড়বে। এ প্রসঙ্গে সিয়ে চেন হুয়া বলেন, চীন অ-জীবাশ্ম জ্বালানির উন্নয়ন করবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিসম্পদ ছাড়াও চীন অব্যাহতভাবে পরমাণু শক্তির উন্নয়ন ঘটাবে। চীন দেশের অভ্যন্তরে আরও একটি পারমাণবিক বিদ্যুত্কেন্দ্র নির্মাণ করবে। সিয়ে চেন হুয়া বলেন, "পারমাণবিক বিদ্যুত্ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবচে' গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে নিরাপত্তা। সাজসরঞ্জাম, স্থান এবং ব্যবস্থাপনাসহ নানা ক্ষেত্র নিরাপদ হতে হবে। এখন আমরা স্থান বাছাইয়ের কাজ করছি। তবে কোথায় আর কখন এ পারমাণবিক বিদ্যুত্কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে, তা এখনও ঠিক করা হয়নি। চীনের অবস্থা বিবেচনায় রেখেই এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"