0701
|
কাশি বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান চুই লিয়ান তুং জানালেন, কাশি হবে 'চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর'-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি বলেন, এ সম্ভাবনাময় প্রস্তাবের ব্যাপারে আমরা খুব আশাবাদী। চীন ও পাকিস্তান ভাল বন্ধু এবং কাশির অবস্থান ঠিক পাকিস্তান ও চীনের সীমান্তে। কোনো সন্দেহ নেই যে, চীন ও পাকিস্তানের সম্পর্ক এবং কাশির বিশেষ অবস্থানের কারণে চীন-পাকিস্তানের বিনিময়, উন্নয়ন ও সহযোগিতায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে কাশিকে।"
গত এপ্রিলে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং পাকিস্তান সফর করেন এবং এসময় দু'পক্ষ ৫০টির বেশি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। আসলে, এখন থেকে 'চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর'-কে কেন্দ্র করে দু'দেশের কৌশলগত সহযোগিতা এগিয়ে যাবে। এ করিডোরে সূচনাবিন্দু হিসেবে কাশি নিশ্চিতভাবেই আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। গত সেপ্টেম্বরে অনুমোদিত 'কাশি সমন্বিত জোন প্রকল্প' বাস্তবায়নের কাজ এপ্রিলে শুরু হয়। এটা দক্ষিণ সিন চিয়াংয়ের প্রথম সমন্বিত শুল্কাধীন জোন। এ জোনের ভূমিকা নিয়ে কাশি সমন্বিত শুল্কাধীন জোন ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান ছাং লিয়াং বলেন, "আগে আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ কম ছিল। ছোট সীমান্ত-ব্যবসা ছাড়া কিছুই ছিল না। এ জোন চালু হওয়ার পর বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়বে এবং আমাদের বাণিজ্য-পদ্ধতিও পরিবর্তন হবে। তখন সাধারণ বাণিজ্যের পদ্ধতি বেশি ব্যবহৃত হবে এবং বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধিও অর্জিত হবে।"
কোনো নতুন প্রস্তাব বাস্তবায়নের ফলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে কি না, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। 'চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর' নির্মাণ প্রকল্প এখনো প্রারম্ভিক পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে এর সুফল সংশ্লিষ্ট জনগণ পেতে শুরু করেছে। কাশি উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটির সদস্য চুই ওয়েন সেং বলেন, "আমি মনে করি শুধু কাশির জনগণ নয়, গোটা চীন ও পাকিস্তানের জনগণই এ থেকে উপকৃত হতে পারে। করিডোরকে কেন্দ্র করে বাণিজ্য বাড়লে আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। অন্যদিকে, অর্থনীতি উন্নয়নের সাথে সাথে শিক্ষা, পর্যটন ও চিকিত্সাসহ নানা খাতেও উন্নয়ন হবে।"
চুই ওয়েন সেং একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আগে কাশি শহরে চেরির দাম অনেক বেশি ছিল। এক কেজি প্রায় ২০০ ইউয়ান। এখন পাকিস্তানের চেরি কাশিতে আসছে, যার দাম কেজিপ্রতি শুধু ৪০ ইউয়ান। সাধারণ মানুষও এখন চেরি খেতে পারে। এই ছোট উদাহরণ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, সাধারণ মানুষ দু'দেশের বাণিজ্যের ফলে কীভাবে উপকৃত হয়।
চীন বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিগুলোর একটি। চীনের প্রভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোতেও উন্নয়নের গতি বাড়বে। এতে আঞ্চলিক সহযোগিতা নতুন পর্যায়ে পৌঁছাবে। 'চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর'-এর ভূমিকা এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। কাশি বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান চুই লিয়ান তুং বলেন, "আমাদের নেতৃত্বে প্রতিবেশী দেশগুলোর জনগণের জীবনমান ও অবকাঠামো উন্নত হবে। যেখানে বিনিয়োগ ও নির্মাণ কার্যক্রম লাগবে, সেখানেই চীনা কোম্পানি এগিয়ে যাবে।"
হাজার বছর আগে, রেশম পথের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাশি চীনা সংস্কৃতির প্রচার ও বাণিজ্য বিনিময়ে ভূমিকা পালন করেছে। কাশি বাণিজ্য সমিতির উপ-প্রধান জুরান্ত কুর্বান বলেন, "হাজার বছরের রেশমপথের ইতিহাসে সবচেয়ে আগে আমাদের পূর্বপুরুষগণ ব্যবসা শুরু করেছিলেন। চীনা সংস্কৃতি কাশির ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। আমাদের পূর্বপুরুষগণ রেশমপথ ব্যবহার করে তাদের অসাধারণ কর্মদক্ষতা দেখিয়েছিলেন এবং আমরাও আশা করি, এ কাশি বন্দরের মাধ্যমে বাইরে যেতে পারব এবং 'এক অঞ্চল, এক পথ' প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিজেদের ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হব। "
নতুন-চালু-হওয়া কাশি-ইসলামাবাদ বিমান রুট দুদেশের বিনিময়ের জন্য আরও সহায়ক। কাশি বাণিজ্য সমিতির প্রধান আবুদুজেলিল হেলিলের পরিবারের প্রতিটি প্রজন্মের পাকিস্তানের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, "১৯৮৮ সালে যখন আমার বাবা পাকিস্তানে যান তখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দেখা হয়। আর ২০ বছর পর যখন আমি পাকিস্তানে যাই তখনও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার দেখা হয়। আমি খুব খুশি।' 'চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর' প্রস্তাব অনুযায়ী, কাশি সড়কপথ ভবিষ্যতে প্রসারিত হয়ে ভারত মহাসাগর পোর্টে পৌঁছাবে। কাশির উন্নয়ন জাতীয় পর্যায়ের কৌশলে পরিণত হবে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রাচীন কাশি শহর একটি নতুন ভবিষ্যতের পানে এগিয়ে চলেছে এবং আন্তর্জাতিক একটি শহরে পরিণত হতে যাচ্ছে।