Web bengali.cri.cn   
চীনের উপ প্রধানমন্ত্রী লি ইয়ান তুংয়ের বাংলাদেশ সফর ও বাংলাদেশের যুব প্রতিনিধি দলের চীন সফর
  2015-05-26 20:12:27  cri

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটে সর্বপ্রথম চীনা বিভাগ স্থাপন করা হয় এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এখানে চীন গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।

চীন-বাংলাদেশ মৈত্রীর উন্নয়নে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিরলস প্রচেষ্টার প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।

চলতি বছর দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিকী। ৪০ বছর ধরে দু'দেশ পারস্পরিক সম্মান, সমঝোতা ও সমর্থনের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে ঘনিষ্ঠ আদান-প্রদান করেছে।

২০১০ সালে দু'দেশের সম্পর্ক সার্বিক সহযোগিতামূলক অংশীদারি সম্পর্কে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের তৃতীয় বাণিজ্যিক অংশীদার।

দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পর সাংস্কৃতিকসম্পদের আদান-প্রদান অব্যাহতভাবে গভীরতর হয়েছে। ১৯৭৯ সালে দু'দেশের সরকারের মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০০৫ সালে পেইচিং-ঢাকা ফ্লাইট চালু করা হয়।

বাংলাদেশে চীনা ভাষা প্রশিক্ষণের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ও কনফুসিয়াস ক্লাসরুমও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমাদের আগের মতো ভবিষ্যতেও সাংস্কৃতিকসম্পদ খাতের সহযোগিতা জোরদার করা উচিত ।

চীন সরকার বাংলাদেশকে আরো বেশি প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান করতে ইচ্ছুক। চলতি বছর থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশি আরো ১০০ জন শিক্ষার্থীকে সরকারি বৃত্তির সুযোগ দেয়া হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে দু'দেশের যুবকদের বিনিময়ও সম্প্রসারণ করতে হবে।

চীন সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চীন গবেষণা কেন্দ্রে ১০ লাখ ইউয়ানের সরঞ্জাম প্রদান করা হবে এবং কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সদরদপ্তরের পক্ষ থেকে চলতি বছরের গ্রীষ্মকালীন 'চীনা ব্রিজ' ক্যাম্পে অংশগ্রহণের জন্য ১০০জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এসব তত্পরতার মাধ্যমে আরো বেশি বাংলাদেশি যুবক চীনা সংস্কৃতি ও চীনা জনগণের আন্তরিক মৈত্রী অনুভব করতে পারবেন।

বর্তমানে চীন সরকারের উত্থাপিত 'এক অঞ্চল, এক পথ' কৌশল ও 'বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার' অর্থনৈতিক করিডরের চিন্তাধারা কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করা হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র দারুণ পবিত্র ও সরল। ভাষণের শেষ দিকে তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী গালিবের গল্প তুলে ধরে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রীর উন্নয়নে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

২০০২ সালে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী গালিব চীন সরকারের বৃত্তি নিয়ে উহান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। ছুটির দিনে তিনি উহান সিয়েহো হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে লুকেমিয়া রোগে আক্রান্ত শিশুদের যত্ন নেন এবং নিজের বৃত্তির টাকা দিয়ে তাদের সহায়তা করেন।

এক শীতকালে চীনের বসন্ত উত্সবের আগের দিন তিনি পুকুরে ডুবে পড়া এক চীনা মেয়েকে উদ্ধার করেন। তার সাহস ও পবিত্র চরিত্র চীনা জনগণকে মুগ্ধ করে এবং উহান পৌর সরকার তাকে 'সনদ' প্রদান করেন।

গালিবের মতো যুবকের সংখ্যা আরো বেশি হলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আরো উন্নত হবে এবং দু'দেশের জনগণের মনও আরো ঘনিষ্ঠ হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

বন্ধুরা, এতক্ষণ শুনছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া চীনা উপপ্রধানমন্ত্রী লি ইয়ান তুংয়ের ভাষণের সারসংক্ষেপ।

চীনের যুব ফেডারেশনের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব নুমেরি জামানের নেতৃত্বে দেশটির ৯৭ সদস্যের এক যুব প্রতিনিধি দল পাঁচ দিনের এক সফরে ২৪ মে রাতে পেইচিং পৌঁছান। প্রতিনিধি দলটি ২৯ মে পর্যন্ত চীন সফর করবেন। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির যুব দলের কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের অভ্যর্থনা জানায়।

 

বাংলাদেশের যুব প্রতিনিধি দলের এ সফরে তাদের কাছে চীনের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ ও সংস্কার নীতির সাফল্য, চীনা স্বপ্নের মূল বিষয়, চীন সরকারের 'এক অঞ্চল, এক পথ', কৌশল ও বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার' অর্থনৈতিক করিডরের চিন্তাধারা তুলে ধরা হবে। প্রতিনিধি দলটি চীনের সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়নের অবস্থা পরিদর্শন করবেন এবং চীনা যুবকদের সাথে আদান-প্রদান ও সংলাপ করবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর এলে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াংয়ের সঙ্গে 'বাংলাদেশ-চীন সার্বিক সহযোগিতামূলক অংশীদারি সম্পর্ক' আরো ঘনিষ্ঠ ও গভীরতর করা নিয়ে এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেন। দু'দেশের প্রধানমন্ত্রীর মতৈক্য বাস্তবায়ন করা এবং দু'দেশের যুবকদের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ও মৈত্রী উন্নত করার জন্য এ প্রতিনিধি দলটি চীন সফরে আসেন।

সফরের প্রথমদিন বাংলাদেশের যুব প্রতিনিধি দলটি পেইচিংয়ের তুংছেং এলাকার শিচিয়া হুথং কমিউনিটি ও জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

জাদুঘর পরিদর্শনের মাধ্যমে তারা পুরনো পেইচিংয়ের হুথং সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারেন ।

এখন শুনুন প্রতিনিধি দলের কয়েকজন সদস্যের সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতকার।

 

বন্ধুরা, আর এরই সঙ্গে শেষ করছি আজকের 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠান। আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত বা পরামর্শ থাকলে আমাদের কাছে চিঠি লিখুন। চিঠিতে তুলে ধরুন এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনার ভালোলাগা, তুলে ধরুন আপনার মতামত ও পরামর্শ। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn

রেডিওয়ের মাধ্যমে আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস করলে বাংলা বিভাগের ওয়েবসাইটে শুনতে পারবেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা হলো www.bengali.cri.cn।

এবার তাহলে বিদায়। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। থাকুন সুস্থ ও আনন্দে। আগামী সপ্তাহে একই দিনে একই সময়ে আবারও কথা হবে। চাই চিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল)


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040