

0527edu
|
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সবাই ভালো আছেন? সুদূর পেইচিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে স্বাগতম। সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন 'বিদ্যাবার্তা'। আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি সুবর্ণা ও এনামুল হক টুটুল।
বন্ধুরা, গত ২৫ তারিখ চীনের উপ প্রধানমন্ত্রী লিউ ইয়ান তুং সাফল্যের সঙ্গে বাংলাদেশ সফর করেন।
প্রায় একই সময়ে বাংলাদেশের একটি যুব প্রতিনিধি দলও চীন সফরে আসেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এ দু'টি বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
প্রথমেই শুনুন চীনা উপপ্রধানমন্ত্রী লি ইয়ান তুংয়ের বাংলাদেশ সফর সম্পর্কিত খবর।
চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ ইয়ান তুং তিন দিনের এক সরকারি সফরে গত ২৪ মে ঢাকায় পৌঁছান। এদিন বিকেল ৫টায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
সফরের প্রথমদিন সন্ধ্যায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। গণভবনে দুই নেতার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দু'দেশের মধ্যে শিক্ষা, বেতার-টিভি, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ও ফ্যাশন ডিজাইনিং বিষয়ে বেশ কয়েকটি সমঝোতা-স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সফরের দ্বিতীয় দিন অর্থাত গত সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য ভাষণ দেন তিনি।
তিনি বলেন, চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক হাজার বছরের পুরনো। উভয় দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, শিল্প, বিজ্ঞান, ক্রীড়া, সংবাদ মাধ্যম, পর্যটন ইত্যাদি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দু'দেশ পারস্পরিক উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হবে। তিনি আশা করেন, পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে 'এক অঞ্চল এক পথ' এর মাধ্যমে রেশম পথ পুনরায় কার্যকর করে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক উন্নয়নকে বেগবান করতে বাংলাদেশ সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।
চীনা উপপ্রধানমন্ত্রী দুদেশের মধ্যে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন । বাংলাদেশের আরও ১০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চীন গবেষণা কেন্দ্রকে সহযোগিতা এবং চীনে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য ১০০ বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীকে গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে আমন্ত্রণ জানানোর ঘোষণা দেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউট-এর চীনা গবেষণা কেন্দ্রে কম্পিউটারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদানেরও ঘোষণা দেন তিনি। পরে তিনি প্রদেয় জিনিসগুলোর একটি তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির নিকট হস্তান্তর করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চীনা উপপ্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ও তার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
সভাপতির বক্তব্যে ভিসি বলেন, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে হাজার বছরের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। চীন এবং বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশ চীনের পরীক্ষিত বন্ধু। তাই উভয় দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সফরে উপপ্রধানমন্ত্রী রাজধানীর শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরে একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন । এছাড়া বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সফরে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে তিনি সাক্ষাত করেন।
এখন শুনুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া চীনা উপপ্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সারসংক্ষেপ।
২৫ মে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ ইয়ান তুং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এক ভাষণ প্রদান করেন ।
ভাষণে তিনি বলেন, সুন্দর মে মাসে আমি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে এসেছি। যদিও বাংলাদেশে এটা আমার প্রথম সফর তবে আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক জানি। দু'দেশের আদান-প্রদানের ইতিহাস সুদীর্ঘকালের। দুই হাজার বছর আগে দু'দেশের জনগণ 'দক্ষিণ রেশম পথ' ও 'সামুদ্রিক রেশম পথ' অনুসরণ করে বাণিজ্যিক আদান-প্রদান শুরু করে। চীনের সন্ন্যাসী ফাসিয়ান ও হুয়ানসাং পরপর এদেশে এসে বৌদ্ধ ধর্মীয় শাস্ত্র গবেষণা করেন। মিং রাজবংশের পর্যটক চেং হো সমুদ্র যাত্রার মাধ্যমে বারবার চট্টগ্রাম সফর করেন। বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক অতীশ দীপঙ্কর ধর্ম প্রচার করার জন্য অনেক বাধা বিপত্তির মুখোমুখি হয়েও হিমালয় অতিক্রম করে তিব্বতে পৌঁছান। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সফর করেন এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈতনিক অধ্যাপক হন।




