মালালা ইউসুফজাই ১২ জুলাই ১৯৯৭ পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় জন্মগ্রহণ করেন। পাকিস্তানের বিদ্যালয়ের ছাত্রী, শিক্ষা আন্দোলনকর্মী। ২০১৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী তিনি। তিনি সবচেয়ে কমবয়সী নোবেল বিজয়ী হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।
নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে তালিবানদের অবস্থান নিয়ে সদা সোচ্চার মালালা। ২০০৯ সালে, ১১ বছর বয়সে বিবিসি ব্লগে এ নিয়ে লিখে নজর কেড়েছিল সবার। এ কারণে তালিবানরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল তাকে। মালালা ভয় না পেয়ে মেয়েদের লেখাপড়ার পক্ষে আর তালিবানের বিপক্ষে কথা বলে গেছে প্রকাশ্যে।
২০১২ সালের ১২ অক্টোবর সোয়াত উপত্যকার মিনগোরাতে ১৪ বছর বয়সী মালালা ও তার দুই বান্ধবীকে তাদের স্কুলের সামনেই গুলি করে তালিবান জঙ্গিরা। পরে মালালাকে গুলি করার দায়িত্ব স্বীকার করেছে তালিবান।
এ হত্যা চেষ্টা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে মালালার পক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করে। ডয়চে ভেলে ২০১৩ সালে মালালাকে 'দ্য মোস্ট ফেমাস টিনেজার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড' নির্বাচন করেন।
জাতিসংঘের গ্লোবাল শিক্ষাকার্যক্রমের দূত গর্ডন ব্রাউন আই এম মালালা নামে একটি জাতিসংঘের পিটিশন চালু করেন এবং এতে দাবি করা হয় সারাবিশ্বের সকল শিশুরা ২০১৫ সালের মধ্যে বিদ্যালয়ে যাবে। এ পিটিশন পাকিস্তানের রাইট টু এডুকেশন বিল তৈরিতে বেশ সহায়তা করে।
২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল টাইম ম্যাগাজিন ১০০ সেরা ইনফ্ল্রয়েনশিয়াল পিপল ইন দ্য ওয়ার্ল্ড তালিকায় মালালাকে নির্বাচিত করে। এছাড়া তিনি পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় তরুণ শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
২০১৩ সালে মালালা শাখারভ পুরস্কার জিতেন। একই বছরের ১৬ অক্টোবর মালালাকে কানাডা সরকার কানাডার সম্মানিত নাগরিক হিসেবে মালালাকে নির্বাচন করেন এবং বিষয়টি সংসদে পাশ হয়।
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি সুইডেনের ওয়ার্ল্ড চিলড্রেন প্রাইজের জন্য নির্বাচিত হন। একই বছরের ১৫ মে মালালা ইউনিভার্সিটি অব কিংস কলেজ থেকে সম্মানিত ডক্টরেট ফেলোশিপ পান।
মাত্র ১১ বছর বয়সে বিদ্যালয় জীবন ও সমকালীন পরিস্থিতি নিয়ে ডায়রি লেখা শুরু করে মালালা। সোয়াত উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে সে সময় মেয়েদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তালিবানরা।
সোয়াতে তালিবানদের উত্থানের সময় বিবিসি উর্দু সার্ভিসে তার দিনলিপিটি প্রকাশ হতে থাকে। তার লিখিত দিনলিপি 'লাইফ আন্ডার দি তালিবান' প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই ব্যাপক পরিচিতি পায় সে। জঙ্গিদের প্রতিহিংসা থেকে রক্ষা পেতে এ সময় গুল মাকাই ছদ্মনামে প্রকাশ হতো তার দিনলিপি। তালিবানরা সোয়াত থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর প্রথম প্রকাশ্যে আসে মালালা। পরবর্তীতে একটি আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করে সে।