Web bengali.cri.cn   
পেইচিং ফিল্ম একাডেমি
  2015-04-15 10:35:44  cri

 


ট.তুরস্কে চীনা ভাষা ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠান গত ৬ এপ্রিল দেশটির রাজধানী আংকারায় আয়োজিত হয়। তুরস্কে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইউ হোং ইয়াং, আংকারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং মধ্যপ্রাচ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের শিক্ষকসহ দেশটির বিভিন্ন মহলের ব্যক্তিরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

তুরস্কে চীনা দূতাবাসের সংস্কৃতি বিষয়ক কাউন্সিলর চু জি হাও বলেন, আংকারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষা বিভাগের উদ্যোগে চীনা ভাষা ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ৪০ জনেরও বেশি সদস্য রয়েছেন ক্লাবটিতে। এদের মধ্যে তুরস্ক কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ও চীনা ভাষা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং চীনে অধ্যয়ন বা বসবাস করা তুর্কী নাগরিক ও চীনা ভাষার অনুরাগীরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এ ক্লাবটি নিয়মিতভাবে চীনা ভাষা প্রশিক্ষণ, চীনা চলচ্চিত্র, চিত্রকলা ও হস্তলিপিশিল্পসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে।

এ ক্লাবের মাধ্যমে তুরস্কে চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি আরো সম্প্রসারিত হবে এবং দেশটির জনগণ আরো ভালোভাবে চীনকে জানতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বর্তমানে তুরস্কের মধ্যপ্রাচ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় ও ওকান বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট তিনটি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়া দেশটির অনেক উচ্চ বিদ্যালয় ও বেসরকারি শিক্ষা সংস্থায় চীনা ভাষার কোর্সও চালু করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-তুরস্ক সম্পর্ক উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটিতে চীনা ভাষার প্রশিক্ষণও সম্প্রসারিত হয়েছে।

স. সম্প্রতি পাকিস্তানের কনফুসিয়াস ক্লাসরুম দেশটির মাধ্যমিক স্কুল ও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য চীনা ভাষার পরীক্ষা আয়োজন করে। এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো চীনা ভাষার পরীক্ষা-ওয়াইসিটি আয়োজন করে ক্লাবটি।

জানা গেছে, কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের সহযোগী চারটি বিদ্যালয়ের ১০২ জন শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ৭৯ জন প্রথম শ্রেণীর পরীক্ষায়, ২০ জন দ্বিতীয় শ্রেণীর পরীক্ষায় ও ৩ জন তৃতীয় শ্রেণীর পরীক্ষায় অংশ নেয়।

ওয়াইসিটি পরীক্ষা হলো বিদেশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য চালু করা চীনা ভাষার দক্ষতা সম্পর্কিত এক পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই এইচএসকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন।

ট. শ্রোতাবন্ধুরা, এতক্ষণ শিক্ষা সম্পর্কিত খবর শুনছিলেন। এখন আমরা পেইচিং ফিল্ম একাডেমির কিছু তথ্য তুলে ধরবো।

স. পেইচিং ফিল্ম একাডেমি চীনের একমাত্র চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট একাডেমি। এশিয়ার বৃহত্তম ফিল্ম একাডেমি হিসেবে এই একাডেমির রয়েছে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি। ১৯৫০ সালে চীনের কেন্দ্রীয় ফিল্ম ব্যুরো 'পারফরমেন্স আর্ট ইন্সটিটিউট' প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৫১ সালে এটি চীনের ফিল্ম স্কুলে পরিণত হয় এবং ১৯৫৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এটির নামকরণ করা হয় পেইচিং ফিল্ম একাডেমি।

গত ৬০ বছরে চীনের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি পেশাগত কর্মী এ একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। এ সময়টাকে 'চীনের চলচ্চিত্র ব্যক্তিদের শৈশবাবস্থা' বলে ডাকা হয়।

চীন ও বিশ্বের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক চাং ই মৌ, ছে খাই কো, থিয়ান চুয়াং চুয়াং, ফেং সিয়াও নিংসহ অনেকেই এ একাডেমি থেকে স্নাতক হন। চলচ্চিত্র পরিচালকদের পাশাপাশি চীনের অনেক বিখ্যাত অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা এখান থেকে স্নাতক হন। তাঁরা চীনের চলচ্চিত্রের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ট. পেইচিং ফিল্ম একাডেমিতে শিল্প তত্ত্ব, নাটক ও চলচ্চিত্র তত্ত্ব ও চারুকলা-এ তিনটি ডক্টরেট ও মাস্টার্স ডিগ্রির প্রধান বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং স্নাতক ডিগ্রীতে শিল্পকলা, চলচ্চিত্র তত্ত্ব, বেতার ও টেলিভিশন শিল্প, চলচ্চিত্র নির্মাণ, অভিনয় তত্ত্ব, কার্টুন ও চারুকলা-এসব প্রধান বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বর্তমানে এ একাডেমিতে ৫টি ইন্সটিটিউটসহ মাস্টার্স ও স্নাতক পর্যায়ের বেশ কিছু ইন্সটিটিউট রয়েছে। চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান বিষয়ও রয়েছে এ একাডেমিতে।

এককথায় চীনের একমাত্র স্বাধীন ও স্বয়ংসম্পূর্ণ চলচ্চিত্র বিষয়ক একাডেমি হিসেবে পেইচিং ফিল্ম একাডেমি বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র একাডেমি বা ইন্সটিটিউটের একটি।

স. সংশ্লিষ্ট বিষয়ে চমত্কার অভিজ্ঞতাসম্প্নন প্রায় ৫০০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা এখানে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীদেরকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত জানানো ও বোঝানোর জন্য তাঁরা বদ্ধপরিকর। চীনের চলচ্চিত্র প্রশিক্ষণ খাতের বিশেষজ্ঞ, পণ্ডিত ও শিল্পীদের নিয়ে গঠিত শিক্ষক দল ফিল্ম একাডেমির চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেয়াসহ চলচ্চিত্র প্রযুক্তির উন্নয়ন করা ও শিল্পকলার অভিজ্ঞতা সংগ্রহে বিরাট অবদান রেখেছেন।

পেইচিং ফিল্ম একাডেমির নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬৪০ জন। বিদেশি শিক্ষার্থী, মাস্টার্স, স্নাতক ও প্রশিক্ষণ কোর্সের শিক্ষার্থীর মোট সংখ্যা প্রায় ১৫০০ জন।

বর্তমানে পেইচিংয়ের পূর্ব উপকণ্ঠ এলাকার সোংচুয়াং জেলায় ফিল্ম একাডেমির একটি নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়েছে।ভবিষ্যতে সেখানে আরো প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী বাস করতে পারবেন।

পেইচিং ফিল্ম একাডেমি বা বিএফএ নিজের মান আরো উন্নয়নের জন্য সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও আদান-প্রদান জোরদার করে চলেছে।

১৯৮৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক ফেডারেশনের সদস্য হয় পেইচিং ফিল্ম একাডেমি। এছাড়া, ২০০২ সালে সংস্থাটির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চলচ্চিত্র বিষয়ক বার্ষিক সম্মেলনের নির্বাহী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়।

ট. বিএফএ ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে সাফল্যের সঙ্গে 'পেইচিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিশ্ববিদ্যালয় ফেডারেশনের' সম্মেলন আয়োজন করে। বিশ্বের ৪৮টি দেশের প্রায় ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি এ সম্মেলনে উপস্থিত হন।

বিএফএ পরপর বিশ্বের ১০টিরও বেশি দেশের ৩০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলে। শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বাড়ানের লক্ষে প্রতি বছর চলচ্চিত্র খাতের বিদেশি ব্যক্তিদেরকে ভিজিটিং অধ্যাপক হিসেবে ক্লাস নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায় বিএফএ।

শিক্ষার্থীদের কাজের আন্তর্জাতিক বিনিময়ের লক্ষে বিএফএ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে 'স্নাতক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী' আয়োজন করে। বিএফএ'র বিদেশি স্নাতকদের চলচ্চিত্র শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ২০০২ সাল থেকে শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ১২ বার এ প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে।

চীনের বিখ্যাত পরিচালক সিয়ে ফেই'র প্রস্তাবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রতি বছর বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রদর্শনীতে অংশ নেয়, যা এশিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী স্নাতক চলচ্চিত্র উত্সব।

স. বিএফএ'র কার্টুন একাডেমিক পুরস্কার উত্সব ২০০১ সালে চালু হয়। চীনের পেশাদার যুবকদের কার্টুন চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী ও আদান-প্রদানের তত্পরতা হিসেবে এই পুরস্কারকে চীনের কার্টুন চলচ্চিত্রের 'অস্কার পুরস্কার' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

বিএফএ গত ১০ বছরে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের ছাত্রছাত্রী ভর্তি করেছে। ১৯৮৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত এ একাডেমির বিদেশি স্নাতকের সংখ্যা ১৫০০ জনেরও বেশি। সরকারি বৃত্তি ও নিজ খরচে বিদেশি শিক্ষার্থীরা এখানে অধ্যয়ন করতে পারেন।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ বিএফএ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র খাতের আদান-প্রদানের জন্য সহায়ক। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পকলা একাডেমি, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লসএঞ্জেলস শাখা ও রাশিয়ার মস্কো চলচ্চিত্র একাডেমিসহ বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে বিএফএ।

ট. পেইচিং ফিল্ম একাডেমির বিদেশি শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ২০০০ সালের আগস্ট মাসে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার করা শুরু হয়। ৬ তলার এ ভবনে সিঙ্গেল কক্ষ ২৪টি, ডাবল কক্ষ ১০২টি। এর মধ্যে রান্নাঘর, সম্মেলন কক্ষ, বহুমুখী কার্যকলাপ হল ও ক্যান্টিন রয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের সুস্থ, সুন্দর ও আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষে নির্মাণ করা হয় এই হোস্টেল।

যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী বিএফএ অধ্যয়ন করতে চান, তাদের জন্য বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছে বিএফএ ওয়েবসাইট। তাই বিএফএ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনারা ওয়েবসাইটটি ভালোভাবে দেখুন।

সাধারণত প্রতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে নতুন বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দেয়া হয়। আর চলচ্চিত্র বিষয়ে যারা ভর্তি হতে চান, তাদের পরীক্ষা সাধারণত মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হয়।

চীনের সরকারি বৃত্তি নিয়ে বিএফএতে লেখাপড়া করতে চাইলে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সিএসসি'র ওয়েবসাইটে সংশ্লিষ্ট আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। বিদেশি শিক্ষার্থী কার্যালয়ের যোগাযোগের ফোন নম্বর ০০৮৬-৮২০৪৫৪৩৩, আর বিএফএ'র ওয়েবসাইট হলো www.bfa.edu.cn,email: guopeiyb@bfa.edu.cn


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040