0304edu
|
'আন্তর্জাতিক চীনা ভাষা অধ্যাপনা শিক্ষক প্রশংসাপত্র' পরীক্ষা এবারই প্রথমবারের মতো বিদেশে আয়োজিত হয়। ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে ৩১ জানুয়ারি এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ পরীক্ষার মাধ্যমে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের শিক্ষকদের প্রশাসনিক কার্যক্রম আরো সুশৃঙ্খলভাবে চালু হবে এবং তা কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল। এ প্রশংসাপত্রের পরীক্ষা কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সদরদপ্তর ও হানবান প্রকাশিত আন্তর্জাতিক চীনা ভাষা অধ্যাপনা শিক্ষক মানদণ্ড অনুসারে নির্ধারণ করা হয়।
পরীক্ষায় প্রধানত শিক্ষকদের চীনা ভাষার মান, অধ্যাপনার পদ্ধতি ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ সংশ্লিষ্ট পাঁচটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এবারের এ পরীক্ষার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হানবান ও কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের ব্রিটেনে নিযুক্ত প্রতিনিধি ছেন থেং তু বলেন, এ পরীক্ষায় ব্রিটেনের ১০০ জনেরও বেশি চীনা ভাষার শিক্ষকের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। তাদের বয়স ২৪ বছর থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত। তাদের মধ্যে অনেকেরই চীনা ভাষার অধ্যাপনার ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। চীনা ভাষা অধ্যাপনার পদ্ধতি নানান রকমের। কেউ কেউ ফিন-ইন বা উচ্চারণের বানান দিয়ে শুরু করেন,কেউ কেউ অক্ষর লেখার পদ্ধতি থেকে শুরু করেন; তা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তবে একটি বিষয় অতি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো ইউরোপিয়ানরা কিভাবে বিদেশি ভাষায় অধ্যাপনা করেন। এ অধ্যাপনার পদ্ধতি ভালোভাবে বিবেচনা করতে হবে।
বর্তমানে ব্রিটেনে ২৭টি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ও ১০২টি কনফুসিয়াস ক্লাসরুম স্থাপিত হয়েছে। সারা বিশ্বে চালু করা হয়েছে চীনা ভাষার প্রশিক্ষণ কাজ। কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সুশৃঙ্খল উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য এ পরীক্ষা চালু করা হয়। ব্রিটেন ছাড়াও ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন,দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরে একই সময় এই পরীক্ষা আয়োজন করা হয়।
ব্রিটেন সরকার চীনা ভাষার প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেয়। তাই গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে দেশটি মাধ্যমিক স্কুলের বিদেশি ভাষার কোর্সে চীনা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করে।
২০১৩ সালে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী চীন সফরকালে ২০২০ সাল নাগাদ ব্রিটেনে চীনা ভাষা শেখার লোকসংখ্যা ২ লাখ থেকে ৪ লাখে উন্নতি হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। আর এ লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করার জন্য বিভিন্ন পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ব্রাজিলের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি দেশটির 'ভাষা সীমান্তহীন প্রকল্পে' চীনা ও স্প্যানিশ ভাষার প্রশিক্ষণ কোর্স অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রকল্পটি ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী এ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রাজিল নিজ দেশের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, ইতালি, চীনা, জাপানিজ ও জার্মান ভাষাসহ ৭ ধরনের ভাষা কোর্স প্রশিক্ষণ দেবে এবং বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য পর্তুগীজ ভাষার প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। জানা গেছে, চীনা ভাষাসহ কয়েকটি ভাষা চলতি বছরের মধ্যেই চালু করা হবে। 'ভাষা সীমান্তহীন প্রকল্প' ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার প্রশিক্ষণ কোর্সে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। ব্রাজিলের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রকল্পে অংশ নিয়েছে।
আচ্ছা, বন্ধুরা, এতক্ষণ শুনছিলেন শিক্ষা সম্পর্কিত খবর। এখন আমরা শুরু করছি আমাদের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়াংশ। এ অংশে আপনারা শুনবেন পেইচিং চাইনিজ মেডিসিন ইউনিভার্সিটির তথ্য। তো আমাদের সঙ্গে থাকুন আর শুনুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য। কেমন?
পেইচিং চাইনিজ মেডিসিন ইউনিভার্সিটি ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পেইচিং শহরের তুংছেং এলাকার হাই ইউয়ুনছাংয়ে অবস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্যতম। ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এ বিশ্ববিদ্যালয় চীনের ৬৪টি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
এর পুরনো নাম পেইচিং চাইনিজ ট্র্যাডিশনাল মেডিকেল ইন্সটিটিউট। ১৯৯৩ সালে এই ইন্সটিটিউটের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় পেইচিং চাইনিজ মেডিসিন ইউনিভার্সিটি। ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প কেন্দ্র, জাতীয় চাইনিজ মেডিসিন প্রশাসন ব্যুরোর ১০টি পরীক্ষাগার, হানবানের একটি চীনা ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থাপনা নির্মিত হয়। এর সঙ্গে সঙ্গে চাইনিজ ট্র্যাডিশনাল চিকিত্সা, চাইনিজ মেডিসিন, চাইনিজ মেডিসিন তৈরি, আকুপাংচার ও ম্যাসাজসহ ১০টি পেশাগত প্রধান বিষয় চালু করা হয়।
বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১০টি ইন্সটিটিউট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বেসিক মেডিকেল ইন্সটিটিউট, চাইনিজ মেডিসিন ইন্সটিটিউট, আকুপাংচার ও ম্যাসেজ ইন্সটিটিউট, এডমিনিস্ট্রেশন ইন্সটিটিউট, নার্সিং ইন্সটিটিউট, হিউম্যান কালচার রিসোর্স ইন্সটিটিউট, ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট, তাইওয়ান, হংকং ও ম্যাকাও চীনা চিকিত্সা বিভাগ, অব্যাহত শিক্ষা ইন্সটিটিউট ও দূরশিক্ষণ শিক্ষা ইন্সটিটিউট।
বিইউসিএম পরপর বিশ্বের ৮৯টি দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে সহযোগিতা করে চাইনিজ মেডিসিন খাতে ১৪ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং বিশ্বের ২৭টি দেশ ও অঞ্চলের ৯২টি বিশ্ববিদ্যালয় ও পেশাগত সংস্থার সঙ্গে প্রশিক্ষণ শাখা ও চিকিত্সা বিষয়ক সংস্থা গড়ে তুলেছে। ২০১৪ সালে ব্রিটেনের বিখ্যাত উচ্চ শিক্ষা সংস্থা quacquarellisymonds প্রকাশিত এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের লিডারবোর্ডে বিইউসিএম ৪৪তম স্থান অধিকার করে।
যে সমস্ত বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা বিইউসিএম-এ লেখাপড়া করতে চান, তাদেরকে ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট বরাবর সংশ্লিষ্ট বৃত্তির জন আবেদন করতে হবে। ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর বিইউসিএম'র ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তির আবেদন পদ্ধতি সম্পর্কে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে।
এতে বলা হয় যে, বিইউসিএম'র নিজ খরচে স্নাতক,অস্নাতক ডিগ্রীর আবেদনকারীরা ও দীর্ঘমেয়াদী স্কলার বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা এবং চীনে আসার পর কোনো ধরনের বৃত্তি না পাওয়া ছাত্রছাত্রীরা এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ক শ্রেণীর বৃত্তির পরিমাণ ১৫০০০ ইউয়ান, খ শ্রেণীর বৃত্তির ১২০০০ ইউয়ান এবং গ শ্রেণীর বৃত্তির পরিমাণ ৮০০০ ইউয়ান। তবে ২০১৪ সালে নতুন ভর্তি স্নাতক ছাত্রছাত্রী এতে অন্তর্ভুক্ত হবে না। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র ভর্তি বিদেশি ছাত্রের বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন ।
২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ২০১৪ সালে নতুন ভর্তি বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য বৃত্তির আবেদন করার পদ্ধতিও নতুন প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, চীনের ঐতিহ্যিক চিকিত্সা ও ঔষধ সংস্কৃতি সম্প্রসারণ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাব বাড়ানো এবং চীন ও বিদেশের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আদান-প্রদান জোরদার করার উদ্দেশে বিইউসিএম সিনিয়র ও জুনিয়র বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য বৃত্তি প্রদান করবে।
জুনিয়র ছাত্রছাত্রীদের মোট চার ধরনের বৃত্তি প্রদান করা হবে। প্রথমত ভর্তি পরীক্ষার বৃত্তি, তা ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল অনুসারে প্রদান করা হবে। ক শ্রেণীর দু'জন প্রত্যেকে ১৭৫০০ ইউয়ান, খ শ্রেণীর ৩ জন প্রত্যেকে ১২০০০ ইউয়ান আর গ শ্রেণীর ১৬ জন প্রত্যেকে ৯০০০ ইউয়ান করে বৃত্তি পাবেন। দ্বিতীয়ত: চীনা ভাষার মানদণ্ড বা এইচএসকে পরীক্ষার ফলাফল অনুসারে আরেকটি বৃত্তি প্রদান করা হবে। এ বৃত্তি মোট ৯ জনকে প্রদান করা হবে যারা প্রত্যেকেই পাবেন ৮০০ ইউয়ান করে। যদি কেউ প্রথম ধরনের বৃত্তি পেয়ে থাকেন, তাহলে তাকে আর এ বৃত্তি দেয়া যাবে না।