0128edu
|
বন্ধুরা, চীনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করার রয়েছে এক বিরাট সুযোগ। আর এদের মধ্যে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ও কনফুসিয়াস ক্লাসরুম বিদেশি শিক্ষার্থীদের চীনকে জানার জন্য একটি ভালো প্লাটফর্ম গড়ে তুলেছে।
আজকের অনুষ্ঠানে আমরা কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরবো। আশা করি,এইসব তথ্যের মাধ্যমে আপনারা আরো গভীরভাবে চীনের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট সম্পর্কে জানতে পারবেন। আরো জানতে পারবেন এই কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট কিভাবে বিভিন্ন দেশে কাজ করে চলেছে ।
খ. বরাবরে মতো আজও শুরুতেই রয়েছে শিক্ষা সম্পর্কিত খবর। তো বন্ধুরা, তাহলে শোনা যাক খবর,কেমন?
স্থানীয় সময় ১২-১৩ জানুয়ারি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের যৌথ উদ্যোগে প্রথম 'বিশ্বের কাছে চীনের পরিচয়' নামক এক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার নিউইয়র্কে আয়োজিত হয়।
চীনের পিপলস বিশ্ববিদ্যালয়, ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়, নানচিং বিশ্ববিদ্যালয়, সিয়ামেন বিশ্ববিদ্যালয় ও কমিউনিকেশন বিশ্ববিদ্যালয়সহ চীনের ১০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা এ সেমিনারে অংশ নেন। নিউইয়র্কে চীনের কনস্যুলেট জেনারেল, সিনহুয়া বার্তা সংস্থার নিউইয়র্ক শাখা ও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত চীনা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এ সেমিনারে ভাষণ দেন।
এবারের এ সেমিনারের প্রতিপাদ্য হলো, 'বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে চীন কিভাবে চীনা গল্প ও সংস্কৃতি সম্প্রচার করবে', যাতে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য সংস্কৃতির সুষম সহাবস্থান ও সংলাপ বাস্তবায়ন করা যায়।
নিউইয়র্কে চীনের কনস্যুলেট জেনারেলের শিক্ষা বিষয়ক কনসুলেট স্যু ইয়োং জি সেমিনারে বলেন, গত ১০ বছরে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট বিশ্বের কাছে চীনা ভাষা শিক্ষা, চীনের সংস্কৃতির পরিচয় তুলে ধরা, বিশ্ব ও চীনের মধ্যে সমঝোতা জোরদার করা এবং চীন ও বিদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
তবে 'চীনের গল্প সম্প্রচার' এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়, তাই এ বিষয়ে গবেষণা করা উচিত। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের মার্কিন মহাপরিচালক ডক্টর জেফরি ফিলিপট মনে করেন, এবারের সেমিনারের আলোচ্য বিষয় অতি মূল্যবান। নিউইয়র্কে চীনা সংস্কৃতির শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা আশা করেন যে, এ সেমিনারের মাধ্যমে চীন ও পশ্চিমা সংস্কৃতির মধ্যে পেশাগত আদান-প্রদানের প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হবে।
ক. আচ্ছা, বন্ধুরা, এতক্ষণ শুনলেন শিক্ষা সম্পর্কিত খবর। এখন শুনবেন চীনের হানবান ও কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট সম্পর্কিত কিছু তথ্য।
হানবান চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে চীনা ভাষা প্রশিক্ষণের পরিসেবা প্রদান এবং বিদেশে চীনা ভাষার প্রতি আগ্রহী শিক্ষার্থীদের চাহিদা মেটানোর জন্য এ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়।
হানবান বিভিন্ন দেশের শিক্ষা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের চীনা ভাষা প্রশিক্ষণ ও চীনা সংস্কৃতির সম্প্রসারণ কাজে সহায়তা করে। চীনা ভাষা প্রশিক্ষণের শিক্ষকদের মানদণ্ড ও বিদেশিদের চীনা ভাষা প্রশিক্ষণের মানদণ্ড প্রণয়ন করে এবং বিদেশিদের জন্য চীনা ভাষা প্রশিক্ষণের বই রচনা করে।
এছাড়া, হানবান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চীনা ভাষা প্রশিক্ষণের শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবক পাঠায়, চীনা ভাষার পরীক্ষা আয়োজন করে, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের বৃত্তি সংক্রান্ত বিষয় পরিচালনা করে,'চীনা ব্রিজ' প্রতিযোগিতা আয়োজন করে।
চীনের অর্থনীতির উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আদান-প্রদান জোরদার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চীনা ভাষা শেখার চাহিদাও অনেক বেড়েছে।
চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আকারে প্রচারের উদ্দেশ্যে ২০০৪ সাল থেকে চীন বিদেশে চীনা সংস্কৃতি সম্প্রচারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 'কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট' গড়ে তোলে।
১০ বছরের মধ্যে দ্রুত উন্নতি লাভ করে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট। বিশ্বের জনগণের চীনা ভাষা শেখা ও চীনা সংস্কৃতি জানার এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়।
কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট চীন ও বিশ্বের জনগণের মধ্যে আদান-প্রদান ও সহযোগিতার সেতুতে পরিণত হয়েছে। ২০১২ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১০৮টি দেশ ও অঞ্চলে ৪০০টিরও বেশি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ও ৫০০টিরও বেশি কনফুসিয়াস ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠিত হয়।
খ. কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সনদে উল্লেখ করা হয় যে, একটি অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর উদ্দেশ্য হল বিশ্বের জনগণের চীনা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি সমঝোতা জোরদার করা, চীন ও বিশ্বের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা, বিশ্বের বহুমুখী সংস্কৃতির উন্নয়নে সহায়তা করা এবং সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালানো।
রাজধানী পেইচিংয়ে অবস্থিত কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সদরদপ্তরের প্রধান কাজ হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের শাখাসমূহ পরিচালনা করা, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট নির্মাণের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা,বিভিন্ন দেশের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের বার্ষিক প্রকল্প পরিকল্পনা ও বাজেট পর্যালোচনা করা, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট চালু ও প্রশিক্ষণের মান দেখাশোনা করা, বিভিন্ন অঞ্চলের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের প্রশিক্ষণকে সমর্থন ও সেবা দেয়া, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের চীনা মহাপরিচালক ও শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের চীনা ভাষা শেখার শিক্ষার্থীদের চাহিদা মেটানোর জন্য ১৯৯০ সাল থেকে হানবান ও কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের সদরদপ্তর পরপর hsk,hskk,yct,bct,hske সহ নানা ধরনের চীনা ভাষার পরীক্ষা চালু করে।
যাতে চীনা ভাষার শিক্ষার্থীদের চীনে লেখাপড়া, চীনের বৃত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে আবেদন করা এবং চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কার্যকর মানদণ্ড নির্ধারণ করা যায়।
এ পর্যন্ত বিশ্বে মোট ৮৬০টি চীনা ভাষার পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বের ১১২টি দেশে রয়েছে মোট ৫৩০টি এবং চীনে রয়েছে ৩৩০টি। ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ৫০ লাখেরও বেশি লোক চীনা ভাষার বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের তথ্য জানতে চাইলে আপনারা www.chinesetest.cn/gokdinfo.do এই লিংকটি দেখে নিতে পারেন।