Web bengali.cri.cn   
প্রেসিডেন্ট সি'র নববর্ষের শুভেচ্ছা বাণী:পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করার মতো
  2015-01-01 20:11:00  cri

নববর্ষের শুভেচ্ছাবাণীতে কোনো কেতাবি ভাষা নেই, প্রাচীন কথা নেই, প্রবাদও নেই। তিনি ব্যবহার করেছেন প্রচলিত কথ্যভাষা। সাধারণ মানুষ যা শুনতে চায়, তা তিনি তাদের ভাষায় প্রকাশ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট সি ইন্টারনেটে প্রচলিত শব্দ ব্যবহার করেছেন
আপনি নিজের কানে না-শুনলে হয়তো বিশ্বাসই করতেন না যে, আজকাল ইন্টারনেটে যেসব শব্দ ব্যাপকভাবে চালু আছে, চীনের শীর্ষ নেতার ভাষণে সেসব শব্দও ব্যবহার করা হয়। সত্যি সত্যি প্রেসিডেন্ট সি'র ভাষণে আমরা সেসব শব্দ শুনেছি। তিনি নেট ব্যবহারে দক্ষ। তিনি তার ভাষণে বলেছেন, "আমাদের বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মকর্তারা পরিশ্রম করেছেন। আর নিঃসন্দেহে জনগণের সমর্থন ছাড়া এ কাজগুলো ভালোভাবে করা যেত না। আমি আমাদের মহান জনগণের প্রশংসা করি।"
ভাষণে 'জনগণ', 'সংস্কার' ও 'দুর্নীতি দমন'—এই তিনটি শব্দ বারবার এসেছে
মোট ১৪০০ শব্দের শুভেচ্ছাবাণীতে ১১ বার 'জনগণ' এবং ৬ বার 'সংস্কার' শব্দ দু'টি উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৪ সাল হচ্ছে চীনে সংস্কার গভীরতর করার উদ্যোগের প্রথম বছর। এ বছর ধারাবাহিকভাবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার-ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যবস্থা জনসাধারণের স্বার্থের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। ২০১৫ সালকে বলা হচ্ছে, সার্বিক ও গভীর সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। এক্ষেত্রে জনগণের প্রত্যাশা অনেক। গভীর সংস্কার কার্যগ্রুপের প্রধান সি চিন পিং তাঁর ভাষণে আবারো গভীরভাবে সংস্কার করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, "ধনুক থেকে তীর একবার ছুটে গেলে সেটিকে আর ফিরিয়ে আনা যায় না। সংস্কারের এই সন্ধিক্ষণে সাহসী ব্যক্তিই বিজয়ী হবেন।"
'দুর্নীতি দমন' ছিল ২০১৪ সালে চীনে একটি প্রিয় শব্দ। শুভেচ্ছাবাণীতে মোট তিনবার শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে। সি চিন পিং বলেছেন, "চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন এই সমাজতান্ত্রিক দেশে যে-ই দুর্নীতি করে ধরা পড়বে, সে-ই শাস্তি পাবে।"
নববর্ষের শুভেচ্ছাবাণীতে 'সমন্বিত চার'
কিছুদিন আগে চিয়াংসু প্রদেশ পরিদর্শনের সময় প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রথমবার 'সমন্বিত চার' টার্মটি ব্যবহার করেন। এরপর প্রথমবারের মতো এই টার্মটি চীনের কোনো প্রেসিডেন্টের শুভেচ্ছাবাণীতেও ব্যবহার করা হলো। শুভেচ্ছাবাণীতে প্রেসিডেন্ট সি আরো বলেন, "আমরা সংস্কার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং আইনানুসারে দেশ পরিচালনার মতো বিষয় দুটিকে পাখির দুটি ডানা বা গাড়ির দুটি চাকার মতো অবিচ্ছেদ্য বিবেচনা করে সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাবো।"
শুভেচ্ছাবাণীতে সবচেয়ে করুণ কথা হচ্ছে 'আমরা তাদের ভুলিনি'
২০১৪ সালে চীনারা কিছু বেদনাদায়ক মুহূর্ত কাটিয়েছে। মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এম.এইচ-৩৭০ ফ্লাইট নিখোঁজ হয়েছে। দেড় শতাধিক চীনা নাগরিকের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া, ইউয়ান নানের লুথিয়ান ভূমিকম্পে ছয় শতাধিক স্বদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে পুনর্মিলনের আনন্দময় মুহূর্তেও প্রেসিডেন্ট সি এসব দুর্ঘটনায় নিখোঁজ বা নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের কথা ভোলেননি। তিনি বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ স্বদেশীদের পরিবারবর্গকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, "আমরা তাদের ভুলিনি। তাদের খুঁজে না-পাওয়া পর্যন্ত আমরা অনুসন্ধানকাজ অব্যাহত রাখবো।" আর ভূমিকম্পে নিহতদের ব্যাপারে তিনি বলেছেন, "আমরা তাদের স্মরণ করি, তাদের আত্মীয়স্বজনের সুখ-শান্তি কামনা করি।"
সময় দ্রুত বয়ে চলে! ২০১৫ সাল আমাদের কাছে এসেছে। সাধারণ মানুষ হয়তো তার ভাষণের দেশ পরিচালনার জটিল নীতিসম্পর্কিত অংশটুকু সম্পূর্ণ বুঝতে পারবেন না, কিন্তু প্রেসিডেন্ট সি'র নববর্ষের শুভেচ্ছাবাণীতে ফুটে ওঠা সরল ভাবাবেগে তারা অভিভূত হতে পারেন। তিনি বলেছেন, "দেশের উন্নতি ও জনগণের জীবনমানের ক্রমাগত উন্নয়নের স্বার্থে আমাদেরকে উদ্ভাবনী ক্ষমতার পরিচয় দিতে হবে। আমরা আশা করি, বিশ্বের সকল মানুষকে ক্ষুধা ও শীতের কষ্ট থেকে বাঁচাতে, যুদ্ধের কুফল থেকে বিশ্বের সকল পরিবারকে রক্ষা করতে, বিশ্বের সকল শিশুকে শান্তিময় পরিবেশে সুস্থভাবে বড় হবার সুযোগ দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণ যৌথভাবে কাজ করে যাবেন।" (ইয়ু/আলিম)


1 2 3 4
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040