সুপ্রিয় শ্রোতা, ২০১৩ সালে ৯ কোটি ৮১ লাখ ৯০ হাজার চীনা নাগরিক বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। বিদেশে চীনা পর্যটকের ব্যয় ২৬.৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১২৮ বিলিয়ান ৭০০ মিলিয়ন ডলার। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ১১ কোটি ৪০ লাখ চীনা নাগরিক বিদেশ ভ্রমণ করবেন। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে চীন বিশ্বের এক নম্বরে অবস্থান করছে।
ওয়াং লান একজন চীনা যুবতী। ভ্রমণ তার জন্য এখন কাজের মতো। তিনি বলেন-
"আমি বিদেশে ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। চীনের বিভিন্ন স্থানে আমাকে কাজ করতে হয়েছে। অন্যদিকে, ইউরোপের সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং আফ্রিকা ও আমেরিকার প্রকৃতিক দৃশ্য ভাল লাগে আমার। ২০০৬ সাল থেকে আমি বিদেশে ভ্রমণ শুরু করি এবং আমি অনেক আনন্দ পেয়েছি।"
পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বিদেশে চীনা পর্যটকদের মধ্যে ২৫-৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ৫৪ শতাংশ। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ বছরে বিদেশে চীনা মানুষের ভ্রমণ বিশ্ব ভ্রমণ অর্থনীতির নতুন চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে। বাজারের আকার ও ভোক্তা শক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে বিশ্বে চীনা পর্যটনের প্রভাবও বেড়েছে।
চীনা পর্যটন গবেষণালয় আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান চিয়াং ই ই বলেন, চীনা অর্থনীতি ও সমাজের স্থিতিশীল উন্নয়ন চীনাদের বিদেশ ভ্রমণের প্রধান সাপোর্টিং ফ্যাক্টর। তিনি বলেন-
"বিদেশে চীনা পর্যটকের সংখ্যা চীনা মাথাপিছু জিডিপির বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে বৃদ্ধি পায়। অবশ্যই, রেন মিন পির বিনিময় হারের পরিবর্তনও বিদেশ ভ্রমণের জন্য সহায়ক। "
তা ছাড়া, বিভিন্ন দেশের ভিসা পাওয়া আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় সহজতর হওয়ায়, চীনা নাগরিকরা বিদেশ ভ্রমণে তুলনামূলকভাবে অধিক আগ্রহী হচ্ছেন।
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে আজকাল চীনা পর্যটকদের প্রতি লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। যেমন, বিমান বন্দর, হোটেল ও বিভিন্ন মার্কেটে চীনা ভাষায় গাইড-সেবা, চীনা খাবার সহজলভ্য করা, ওয়াইফাই স্পট রাখা, ইউনিয়নপে কার্ড ব্যবহারের সুবিধা রাখা ইত্যাদি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা পর্যটকদের কাছে বিদেশ ভ্রমণের সময় কেনাকাটা বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। 'সিলেস্ট হোল্ডিং' কোম্পানির সিইও মিঃ জ্যাকব চীনা পর্যটকদের সেবা দেওয়া সম্পর্কে বলছেন-
"প্রথমে পর্যটকদের মাতৃভাষায় কথা বলতে পারাটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ন। দ্বিতীয়ত, কেনাকাটার ক্ষেত্রে নিজের দেশের তুলনায় ভিন্ন অভিজ্ঞতা যাতে তারা পেতে পারেন, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। সবেশেষে, পর্যটকদের ভাল সেবা ও পরিবেশ দেওয়া অত্যাবশ্যক।'
যথাযথ নিয়ম-নীতি মেনে চললে চীনের পর্যটকদের বিদেশ ভ্রমণের এই ইতিবাচক প্রবণতা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে বলে আশা করা যায়। এতে পর্যটকদের মাধ্যমে চীনের সাথে অন্যান্য দেশে সম্পর্কও সুসংহত হবে। ভ্রমণের মাধ্যমে চীনের মানুষে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতি ও রীতিনীতি সম্পর্কে সম্যক অবগত হতে পারবে এবং তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তা জাতি গঠনে কাজে লাগাতে পারবে।