Web bengali.cri.cn   
'হিমালয় দুহিতা' নেপালে চলুন বেড়িয়ে আসি
  2014-03-05 14:49:20  cri

সুবর্ণা. পবিত্র মন্দিরের তথ্য জানার পর নেপালের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবসের তথ্যও তুলে ধরি। ১১ সেপ্টেম্বর 'পশুপতিনাথ' মন্দিরে নেপালের নারীরা নাচের মাধ্যমে শিব ও শিবলিঙ্গের পূজো করেন। তারা বিশ্বাস করেন, বছরের সবচে পবিত্র দিন এটি। ভোর ৩টা থেকে তারা ঐতিহ্যিক লাল রঙয়ের সুন্দর কাপড় পড়ে 'পশুপতিনাথ' মন্দিরে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পূজোর সময় বিবাহিত নারীরা স্বামীর সুস্বাস্থ্য কামনা করেন এবং অবিবাহিত মেয়েরা বিবাহিত সুখী জীবনের জন্য প্রার্থনা করেন।

আলিম. হোলি (holi) দিবস নেপালের সবচে জাকজমকপূর্ণ ও আনন্দময় দিন। সাধারণত প্রতি বছরের মার্চ মাসে হোলি আয়োজন করা হয়। হোলির উত্সব চলে ৭ দিন ধরে। এসময় লোকজন তাদের পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিভিন্ন রঙ ছিটিয়ে আনন্দ করে এবং পরস্পরের প্রতি শুভ কামনা জানায়। হোলির সময় অপরিচিত লোকজনকেও রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার রীতি আছে। এসময় রঙ-মিশ্রিত পানিও ছিটানো হয়। হোলির সময় নেপালে লাল রঙ বেশি ব্যবহার করা হয়। নেপালিদের কাছে লাল রঙ হচ্ছে সুখ ও কামনার প্রতীক।

সুবর্ণা. গৌতম বুদ্ধর জন্মদিন তথা বুদ্ধজয়ন্তি নেপালের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবস। প্রতি বছরের মে মাসে এ দিবস পালিত হয়। নেপালের 'লুম্বিনি' ও কাঠমাণ্ডুর উদযাপনী অনুষ্ঠান সবচে আকর্ষণীয়। এ দিবসের আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা লুম্বিনিতে আসেন উদযাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। লুম্বিনির সন্ন্যাসীরা গৌতম বুদ্ধর জেড মূর্তি নিয়ে জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এখানে বলে রাখি, লুম্বিনি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান। এখানেই রাণি মায়াদেবী জন্ম দিয়েছিলেন সিদ্ধার্থ গৌতমকে। পরে এই সিদ্ধার্থই হন গৌতম বুদ্ধ। তিনি লুম্বিনিতে খৃষ্টপূর্ব ৬২৩ থেকে ৫৪৩ পর্যন্ত সময়কালে এখানে বসবাস করেছেন।

আলিম. নেপালে ভ্রমণ করলে দুটি জায়গায় অবশ্যই যাওয়া উচিত। একটি হল কাঠমাণ্ডুর পুরনো নগর এবং অন্যটি 'পোখারা' (pokhara) উপত্যাকা। অনেকে এ দুটো স্থানের প্রাকৃতিক দৃশ্যকে স্বর্গের সৌন্দর্যের সাথে তুলনা করতে পছন্দ করেন। পোখারা কাঠমাণ্ডুর ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। এখানে উঁচু উঁচু তুষার-পর্বত দেখা যায়। এগুলোর গড়পড়তা উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭০০০ মিটারেরও বেশি। এর মধ্যে সবচে সুন্দর পবর্তের নাম 'মাছ পর্বত'। দূর থেকে দেখলে এ পাহাড়টিকে মাছের লেজের মতো মনে হয়।

সুবর্ণা. পোখারার উপত্যাকায় অনেক হ্রদ দেখা যায়। এগুলোর মধ্যে সবচে বড় হ্রদের দৈর্ঘ প্রায় ১০ কিলোমিটার। অন্নাপূর্ণা তুষার পাহাড়ের বরফ গলে পানি হ্রদে প্রবেশ করে। হ্রদের পানি অতি পরিস্কার এবং এখানে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। পোখারার মন্দিরও বিশ্ববিখ্যাত। সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে মন্দিরগুলোকে দূর থেকে অনেক সুন্দর আর পবিত্র দেখায়। পর্যটকরা পোখারার বিভিন্ন হ্রদে নৌকাভ্রমণ করতে পারেন। সে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। উপত্যাকার কাছে ৩০ মিটার উঁচু জলপ্রপাত আছে। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় হলে, আপনি গ্লাইডার বা গরম বাতাসের বেলুনে চড়ে বসতে পারেন। গ্লাইডিং করা বা বেলুনে চড়ে আকাশে ভেসে বেড়ানো খুবই মজার আর উত্তেজনাময় একটি অভিজ্ঞতা।

আলিম. পোখারার আরেকটি দেখার মতো জিনিস হচ্ছে সাদা ও কালো রঙয়ের পানির নদী। সাদা পানির নদীর নাম 'সেদি'; নদীতে প্রচুর ক্যাথসিয়াম থাকায় এর রঙ সাদা হয়েছে। অন্যদিকে কালো পানির নদীটিতে রয়েছে প্রচুর কালো পাথর। নদী দুটির দূরত্ব বেশি নয়। দূর থেকে এই দুটো নদীর বয়ে যাওয়ার দৃশ্য সত্যিই মনোরম।

উপত্যাকা এলাকায় গভীর গিরিখাতও দেখা যায়। গিরিখাতের গভীরতা কোথাও কোথাও ৬০ মিটারেরও বেশি। তবে, গিরিখাতের প্রস্থ মাত্র এক থেকে দুই মিটার। উপর থেকে দেখলে গিরিখাতের গভীরতা অনুভব করা যায় না। তবে, আপনি যদি কোনো পাথরজাতীয় কোনো পদার্থ গিরিখাতে ফেলে দেন, তবে তা নিচে হারিয়ে যাবে; আপনি কোনো শব্দ শুনতে পাবেন না।

সুবর্ণা. নেপালের সুস্বাদু খাবার সম্পর্কেও আমি কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছি। শুনেছি নেপালের গরুর স্টেকের দাম অনেক কম এবং স্বাদও খুবই ভালো। ১৫ মার্কিন ডলার দিয়ে এক প্লেট স্টেক কিনলে, দু'জনের খাওয়া হয়ে যাবে। আর যারা কারি পছন্দ করেন, তাদের জন্য স্থানীয় অঞ্চলের কারি উপাদেয় হবে। তবে, স্থানীয় অঞ্চলের লোকদের অনেকে কেবল সবজি খান; তারা ধর্মীয় কারণে মাছ-মাংস খান না। বিষয়টা মনে রাখা ভালো।


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040