Web bengali.cri.cn   
চীন ও বিশ্বের সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তি জগতের নানা খবর
  2014-01-29 14:22:25  cri


 একাত্তরতম মার্কিন চলচ্চিত্র ও টিভির গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ১২ জানুয়ারি রাতে লস এ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে '12 Years a Slave' সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার অর্জন করে।

১৮৫৩ সালে আফ্রিকান আমেরিকান সলোমন নরথাপের লেখা আত্মজীবনীর ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এ চলচ্চিত্রটি। চলচ্চিত্রের কাহিনী গড়ে উঠেছে নিউইয়র্কে বেড়ে ওঠা এবং উত্তম শিক্ষাগ্রহণকারী একজন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষের অপহরণ ও দাসে পরিণত হওয়ার গল্প নিয়ে। মামলা-মোকদ্দমার কঠোর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পরে মুক্তি পান তিনি। চলচ্চিত্রটি সলোমন নরথাপের নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে করা হয়েছে।

স্কটল্যান্ডের ব্যান্ড 'ইউ টু'-এর 'সাধারণ ভালবাসা' শীর্ষক একটি গান সেরা সংগীত পুরস্কার পেয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার জীবনী নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র Mandela: Long Walk to Freedom-এর এ গানটি করে 'ইউ টু'। এখন আমরা একসাথে উপভোগ করব এ সুন্দর গানটি।

 ছাব্বিশটি লাতিন বর্ণের ভিত্তিতে চীনা ভাষার পিনয়িন সৃষ্টি করেছিলেন চীনের ভাষাতত্ত্ববিদ চৌ ইউরো কুয়াং। গত ১২ জানুয়ারি ছিল তাঁর ১০৯তম জন্মদিন। ১৯০৬ সালে জন্মগ্রহণকারী চৌ ইউরো কুয়াং একজন ভাষাতত্ত্ববিদ, সাহিত্যিক ও অর্থনীতিবিদ। তিনি চীনা, ইংরেজি, ফরাসি ও জাপানি ভাষা জানেন। যৌবনে ও মধ্যবয়সে তিনি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য-বিষয়ক কাজ করেন।

তিনি ছিলেন ফু তান বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির একজন অধ্যাপক। ১৯৫৬ সালে তিনি তাঁর পেশা পরিবর্তন করেন এবং ভাষা-সর্ম্পকিত গবেষণা শুরু করেন। তার নেতৃত্বে চীনা ভাষার পিনয়িন সৃষ্টি হয়। মানুষ তাকে পিনয়িনের জনক বলে অভিহিত করে।

পিনয়িন প্রকাশের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত এক আয়োজনে চৌ ইউরো কুয়াং বলেছিলেন:

 "৫০ বছর আগে যখন নয়াচীন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন চীনা মানুষদের ৮০ শতাংশ ছিল নিরক্ষর। একটি নতুন চীন নির্মাণের জন্য নিরক্ষরতা দূরীকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার ছিল। নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য আমরা পিনয়িন সৃষ্টি করি।"

বয়স ১০৯ বছর হলেও চৌ ইউরো কুয়াং এখনও কিছু কিছু রচনা করেন। ২০১৩ সালে ৭০ লাখ শব্দে চৌ ইউরো কুয়াংয়ের সম্পূর্ণ রচনা প্রকাশিত হয়।

 গারো জানুয়ারি ইউয়ুন নান প্রদেশের শাংরিলা জেলার তু কে চং গ্রামে গুরুতর অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সরকার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আগুনে প্রাচীন এই নগরের মোট আয়তনের ১৭.৮১ শতাংশ অর্থাত্ ৬৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সৌভাগ্যক্রমে শাংরিলার মূল এলাকা আগুনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। যদিও অবশেষে আগুন নেভানো সম্ভব হয়, তবে এখন চিন্তা করা উচিত্ প্রাচীন নগরের সংরক্ষণ ও উন্নয়নের মধ্যে কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখা যায়। চীনে বিখ্যাত প্রাচীন স্থাপত্য সংরক্ষণ বিষেশজ্ঞ, থং চি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুয়ান ই সেন বলেন, প্রাচীন স্থাপত্য সংরক্ষণের চেয়ে উন্নয়নের ওপর আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া অগ্নিকাণ্ডের প্রধান কারণ। তিনি মনে করেন, পর্যটন খাতের উন্নয়নের চেয়ে সংরক্ষণ আরও গুরুত্বপূর্ণ। এ আগ্নিকাণ্ড একটি অভিজ্ঞতা এবং যা এ আগুনে হারিয়ে গেছে তা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। কাঠ দিয়ে নির্মিত বাড়িতে অগ্নিনিরোধ কাজ একটি কঠিন ব্যাপার। রুয়ান ই সেন মনে করেন, এ বিষয়ে জাপান ও উত্তর ইউরোপের কাছ থেকে শিখতে পারে চীন। তিনি বলেন:

 "কাঠ-বাড়িতে ফায়ার ডিটেক্টর ও পানির স্প্রে সরঞ্জাম স্থাপন করলে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতক্ষতি কমবে এবং প্রতিটি গ্রামের অধিবাসীদের উচিত্ বেসরকারি দমকল দল গঠন করে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নেওয়া।"

 এখন শুরু প্রযুক্তি-বিষয়ক খবর।

চীনের চন্দ্রযান ছাং এ-থ্রি ও ইউয়ু থু চন্দ্র রোভারের সফল স্বয়ংক্রিয় জাগরণ; চীনের খুচরা বিক্রেতা সু নিংয়ের প্রথম অর্থায়ন-সেবা 'লিং ছিয়ান পাও' চালু - অনলাইন অর্থায়ন বাজারে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা; চীনে আই-ফোন৫এস বিক্রির লক্ষ্যে অ্যাপল ও চায়না মোবাইলের মধ্যে চুক্তি চুক্তি স্বাক্ষর - অ্যাপল কোম্পানির সি ই ও টিম কুকের চীন সফর।

বারো জানুয়ারি সকাল ৮টা ২১ মিনিটে চন্দ্রযান ছাং এ-থ্রি রোদে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়। এর আগে ১১ জানুয়ারি ইউয়ু থু চন্দ্র রোভারও স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেগে ওঠে। ওই দু যন্ত্র নিরাপদে চাঁদে তাদের প্রথম চন্দ্রপ্রভা কাটায়। চৌদ্দ দিনে ওই দু যন্ত্র চাঁদে অত্যন্ত কম তাপমাত্রার পরিবেশ-সংক্রান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে, চীন চন্দ্রপ্রভা অস্তিত্ব-প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে।

চন্দ্রযান ছাং এ-থ্রি ব্যবস্থার স্থপতি ছাং ইউয়ু হুয়া বলেন, যন্ত্রটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হওয়ার পর ভূপৃষ্ঠের কেন্দ্র যে উপাত্ত পেয়েছে তাতে দেখা যায় যন্ত্রে কোনো সমস্যা। তিনি বলেন:

 "সূর্য একটি নির্দিষ্ট কোনো আসার পর ছাং এ-থ্রি যে আলো পায় তা দিয়ে বিদ্যুত্ উত্পাদন করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়। সক্রিয় হওয়ার পর ছাং এ-থ্রি নির্দিষ্ট স্থানে যায় এবং উপাত্ত তথ্য সংগ্রহ শুরু করে।"

 পনের জানুয়ারি চীনের খুচরা-বিক্রি প্রতিষ্ঠান সু নিং তার প্রথম অর্থায়ন-সেবা 'লিং ছিয়ান পাও' চালু করেছে। এর মধ্য দিয়ে অনলাইন অর্থ বাজারে প্রবেশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তার আগে আ লি পা পা, পাই তু এবং ওয়াং ই-সহ চীনের বিভিন্ন কোম্পানি নিজেদের অনলাইন আর্থিক সেবা চালু করে। এ মধ্য দিয়ে চীনে অনলাইন আর্থিক খাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রবল হয়েছে।

সু নিংয়ের অর্থ-বিষয়ক দায়িত্বশীল ব্যক্তি লিন খাই রোং বলেন:

 "লিং ছিয়ান পাও' আমাদের প্রথম অনলাইন আর্থিক সেবা এবং আমাদের ব্যবসার ভরকেন্দ্র অনলাইনে স্থানান্তরিত হবে। অনলাইনে খুচরা-বিক্রি উন্নয়ন ও সমর্থনের জন্য আমরা এ সেবা চালু করেছি।"

'লিং ছিয়ান পাও' সেবার মাধ্যমে এ কোম্পানি অর্থের যোগান দেবে। জানা গেছে লিং ছিয়ান পাওয়ের বার্ষিক সুদের হার ৬.৩২ শতাংশ, যা সাধারণ ব্যাংকে চলতি আমানতের সুদের হারের তুলনায় ১৮ গুণ।

সু নিং ছাড়া চীনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারনেট কোম্পানি টেনসেন্টও এ রকমের সেবা চালু করবে। বর্তমানে অনলাইন আর্থিক বাজারের আকার প্রায় ৫০০ ও ৬০০ বিলিয়ন ইউয়ান এবং এর উন্নয়নের অবকাশ রয়েছে।

এ খাতে কোন কোন কোম্পানি শীর্ষ অবস্থানে যাবে তা এখনও জানি না আমরা। বর্তমানে আ লি পা পা এগিয়ে রয়েছে এবং আরও বেশি কোম্পানি এ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। গতানুগতিক আর্থিক সেবার তুলনায় অনলাইন আর্থিক সেবার ঝুঁকি কম কিন্তু আয় বেশি। তবে একটি বিষয়ে বিনিয়োকারীদের সতর্ক থাকা উচিত্ – সেটি হলো কোনো অস্থিতিশীলতায় সবাই নিজের পণ্য টাকায় বিনিময় করলে বাজার বিশৃঙ্খল হবে।

 অ্যাপলের চতুর্থ প্রজন্মের বা ফোর-জি আইফোন৫এস এবং আইফোন৫সি ১৭ জানুয়ারি থেকে চায়না মোবাইল ও অ্যাপল শপে বিক্রি শুরু হয়েছে চীনে। জানা গেছে, শুধু ফোন সেট এবং ফোন সেবার সঙ্গে প্যাকেজ আকারে - এ দু ভাবে আইফোন৫এস এবং আইফোন৫সি বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেজের ক্ষেত্রে প্রতি মাসে ৮৮ইউয়ান থেকে ৬৮৮ ইউয়ান পর্যন্ত ৭ রকমের প্যাকেজ ছেড়েছে চায়না মোবাইল। চীনে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এ মোবাইল ফোন বিক্রির সূচনা উপলক্ষে অ্যাপল কোম্পনির প্রধানি নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক চীন সফর করেন।

বিক্রি শুরু আগেই চায়না মোবাইল ফোর-জি আইফোনের জন্য ১০ লক্ষাধিক অগ্রিম ফরমাশ পেয়েছে। স্যামসাংয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্ষমতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাপী অ্যাপল অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম টেলিকম অপারেটর হিসেবে চায়না মোবাইলের সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রাহক আছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে অ্যাপল এ কোম্পানিকে সাহায্য করতে পারবে। অনুমান করা হচ্ছে, চলতি বছর চায়না মোবাইল অ্যাপলের ১ কোটি ১৫ লাখ থেকে ৩ কোটি ৯০ লাখ ফোন সেট বিক্রি করবে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক