0130ruby

কথায় আছে 'দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা নেই'। অর্থাত্ দাঁতের তীব্র যন্ত্রণা না হওয়া পর্যন্ত আমরা দাঁতের সঠিক গুরুত্বও উপলব্ধি করতে পারিনা। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা দাঁতকে যে নিয়মিত পরিস্কার ও পরিচর্যা করতে হয় সেটা বুঝতে চান না।

তাহলে বন্ধু, দৈনন্দিন জীবনে নিয়মিতভাবে কি কি অভ্যাস আর পরিচর্যার মাধ্যমে দাঁতকে সুস্থ, সুন্দর ও দীর্ঘস্থায়ী করা যায়, আসুন তাহলে সে সম্পর্কে আমরা জেনে নেই ডাক্তারদের দেয়া কয়েকটি পরামর্শ।

অনেকে জানেন, উচ্চ মাত্রার কোলেস্টোরেল মোটা হওয়ার মূল কারণ। কিন্তু বেশি কোলেস্টোরেল খেলে একধরনের দাঁতের রোগ যাকে পেরিওডেন্টাল বলে তার দ্বারা সহজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

দাঁত ভালো থাকলেও বছরে অন্তত দু'বার দন্তচিকিত্সকের কাছে যাওয়া উচিত।

দাঁতের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট করে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। কিন্তু বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মাত্র ২-৩ মিনিট এবং শিশুদের ক্ষেত্রে আরও কম সময় ব্যয় করতে দেখা যায়।

অনেক মা শিশু-খাদ্যের গরম টেস্ট করার পর বাচ্চাকে খাওয়ান। এ সময় মায়ের মুখ জীবাণু-মুক্ত না থাকলে সহজেই তা বাচ্চাদেরকেও সংক্রমিত করতে পারে।

ইলেক্ট্রিক টুথব্রাশ দাঁত পরিস্কারে সাধারণ টুথব্রাশের তুলনায় অধিক কার্যকর। এই টুথব্রাশ সহজেই দাঁতের মাড়ির নিচে ও ফাঁকে প্রবেশ করে দাঁত পরিস্কার করতে পারে।

চটকদার বিজ্ঞাপনে এমন অনেক টুথপেস্ট পাওয়া যায় যা দাঁতের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করা, দাঁতের রোগ প্রতিরোধ এবং দাগ নির্মূলে কার্যকর না। তাই কেনার সময় অবশ্যই দাঁতের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক এমন টুথপেষ্ট কেনার প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত।

মুখের দূর্গন্ধ এবং জীবাণু প্রতিরোধে মাউথওয়াশের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে মনে রাখা উচিত মাউথওয়াশের কার্যকারিতা মাত্র ৩০ মিনিট এবং এরপর মুখ পূর্বের ন্যায় দুর্গন্ধ ও জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হবে।

দন্তচিকিত্সক স্পার্কলিং ওয়াটারকে বুদ বুদ ওঠা খাবার পানিকে তরল করাত হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। কারণ এই পানিতে থাকা চিনি এবং অম্ল দাঁত ক্ষয়ের অন্যতম কারণ।

প্রতিটি দাঁতের চারপাশে জীবাণু মিশ্রিত লালা থাকে। সেজন্য সকলের উচিত বেশি বেশি করে দাঁত পরিস্কার রাখা।

গত কয়েক দশক ধরে দন্তচিকিত্সকরা বাবা মা'র সঙ্গে শিশুকে দুধ খাওয়ানো ফিডারে নিপলের ব্যবহার ও দাঁতের ক্ষয়রোগ বিষয়ে আলোচনা করে আসছেন। চিকিত্সকরা প্রায়ই ফিডারে দুধ খেতে খেতে বাচ্চাদের ঘুমাতে না দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু এ পরামর্শ খুব বেশি একটা কার্যকর হয় না।

হাত ধোওয়ার সময় যদি রক্ত বের হয়, তাহলে আপনি হয়তো তখনই ডাক্টারের কাছে যাবেন। কিন্তু দাঁত ব্রাশের সময় রক্ত বের হলে অনেকে খেয়াল করেন না। আসলে মাড়ি থেকে রক্ত বের হওয়ার মানে আপনার দাঁত রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

অনেকেই আছেন যাদের ভিতরের দাঁত খুব খারাপ, কিন্তু সামনের দাঁত সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর, তার কারণ সামনের দাঁত সহজে লোকে দেখতে পায়। তাই ভিতরের দাঁত পরিস্কারে বেশি নজর দেয়া হয় না।

দাঁতের ডাক্তাররা সব সময়ে রোগীদেরকে নিয়মিত দাঁত পরিস্কার রাখা এবং প্রতিবার দাঁত পরিস্কার শেষে বিশেষ সূতা- ফ্লোজ ব্যবহার করে দাঁতের ক্ষয়রোধ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

সাধারণত একজন মানুষ অপর একজনের মুখমণ্ডলের মধ্যে প্রথমে তাকায় চোখের দিকে, তারপর দাঁত এবং এরপর চুলের দিকে খেয়াল করে। কিন্তু চুলের পরিচর্যায় যে পরিমান সময় ব্যয় করা হয় তা দাঁতের তুলনায় অনেক অনেক বেশি। তাই এখন থেকে দাঁত পরিচর্যার ক্ষেত্রেও যথাযথ নজর দেয়া প্রয়োজন।