Web bengali.cri.cn   
ফিলিপিনো ইমারসন গ্র্যাতপো
  2013-11-20 09:17:24  cri


গত বছর 'Hello Amoy' নামের একটি ছবি প্রদর্শনী সিয়ামেনে অনুষ্ঠিত হয়। Amoy সিয়ামেনের ইংরেজি নাম। প্রদর্শনীর নাম থেকে আমরা জানতি পারি যে, এটা সিয়ামেনের অধিবাসীদের সাধারণ জীবনযাপন-সম্পর্কিত একটি ছবি প্রদর্শনী। ছবিগুলোর মধ্যে ছিল তা থং রাস্তার নাপিত, চিয়াং চুন ছির পিছনে পুরোন রেলপথ, রাতে বাসির জমকালো রাস্তা এবং চুংসান রাস্তার মানুষদের চেহারা। এ ছবিগুলো দেখে সিয়ামেনের অধিবাসীরা অভিভূত হয়। তারা সাদা-কালোর আলোছায়ায় পরিচিত রাস্তা ও মানুষ এমনকি অন্তর্হিত অট্টালিকা ও রীতিপ্রথা দেখতে পারে এবং সিয়ামেনের প্রতি তাদের মনে ভালবাসা জেগে ওঠে। ক্যামেরা নিয়ে এসব দৃশ্য ধারণ করেছেন যিনি, তিনি Dixx। তিনি সংবাদদাতাকে জানান, সিয়ান মেন তার দ্বিতীয় জন্মস্থান এবং তার স্বপ্নের নগর। তিনি বলেন:

"আমি সিয়ামেনের মানুষদের সাধারণ জীবন পর্যবেক্ষণ করতে পছন্দ করি। সিয়ামেনের অধিবাসী-সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাইট আছে আমার এবং কয়েক বার আমি ছবি প্রদর্শনী আয়োজন করেছি। আমার মনে হয়, বিশ্বের অন্য জায়গার মানুষের চেয়ে সিয়ামেনের মানুষ ভিন্ন। চরিত্রে তাদের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। আমি যেসব মানুষের ছবি তুলি তারা সাধারণ মানুষ।"

Dixx-কে দেখলে বোঝা যায় তিনি একজন শান্ত মানুষ। তিনি খুব লাজুকও। সাক্ষাত্কালে তাকে একটু উত্তেজিত লাগে এবং তিনি ঘামতে থাকেন। সেটা দেখে তাকে স্বাভাবিক করার জন্য আমাদের সংবাদদাতা তাকে জিজ্ঞাস করেন, সাধারণত তিনি কোথায় কোথায় যান এবং কী কী করেন? জবাবে তিনি জানান, কু লাং ইউয়ু তার একটি প্রিয় স্থান। তিনি বলেন:

"কাজের দিনে কু লাং ইউয়ুতে বেশি মানুষ থাকে না। আমি মাঝে মাঝে ওখানে যাই। আমি এ জায়গাটির পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করি।"

একটি ছবি দেখিয়ে Dixx বলেন, "আমি কু লাং ইউয়ু থেকে এ ছবিটি তুলেছি । ছবিতে যে সেতু দেখা যাচ্ছে, সেটা এখন আর নেই। তবে আমার ক্যামেরার মাধ্যমে চিরকালের জন্য এ দৃশ্য আটকা পড়েছে।"

আমাদের সংবাদদাতা যখন Dixx-এর ছবির অ্যালবাম দেখেন, তখন একটি ছবি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ছবিতে দেখা যায়, একজন পুরুষ সাইকেল ঠেলে নিচ্ছেন এবং একজন প্রতিবন্ধী ক্রাচে ভর দিয়ে তার পাশে হেঁটে চলেছেন। Dixx আমাদের সংবাদদাতাকে জানান, তিনি ভালবাসা দিবসে এ ছবিটি তুলেছিলেন। তিনি বলেন:

"আমি যখন এ ছবিটি তুলছিলাম, তখন আমি দেখি সাইকেল চড়া এ পুরুষ পাশের প্রতিবন্ধী লোকটিকে দেখে সাইকেল থেকে নেমে তার সাথে হাঁটছেন। আমি ভালবাসা দিবসে এ ছবিটি তুলেছি এবং ভাবছিলাম ভালবাসা শুধু একজন পুরুষ ও একজন নারীর মধ্যের একটি ব্যাপার নয়; ভালবাসা আরও ব্যাপক ও গভীর ব্যাপার।"

Dixx বলেন, দৃশ্যের চেয়ে তিনি মানুষের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। তিনি যখন মন দিয়ে প্রতিটি ছবি দেখেন, তখন আবিষ্কার করতে পারেন, মানুষের মুখে ধরে রাখা উষ্ণ মৃদুহাসি। তার ছবির মানুষ ক্লান্ত বা অসুস্থ হলেও তাদের মুখের ভাব সুখী ও আনন্দময়। তাদের জীবনে কষ্ট থাকলে মুখগুলো হাসিমাখা।

আসলে Dixx ২০০৬ সালের আগে ছবি তোলা সম্পর্কিত কিছু জানতেন না। ২০০৬ সালে তিনি একটি ছোট ক্যামেরা কেনেন এবং ছবি তুলতে শুরু করেন। প্রতিদিন তিনি ক্যামেরা তার কাছে রাখেন – এমনকি কাজ করার সময়ও। পেশায় তিনি সাজানো ডিজাইনার কিন্তু তার শখ ছবি তোলা। কয়েক বছরে Dixx-এর ছবি তোলার মান অনেক উন্নীত হয় এবং তিনি নিজের বিশেষ শৈলী সৃষ্টি করেন। সিয়ামেন তার অনুপ্রেরণার উত্স এবং সিয়ামেনে তোলা ছবিগুলোর মাধ্যমে তিনি অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। Dixx বলেন:

"আমি সেনচেন, কুয়াংচৌ, শাংহাই, হাংচৌ ও সুচৌসহ চীনের অনেক জায়গা গিয়েছি এবং অবশেষে আমি সিয়ামেনে ফিরে এসেছি। সিয়ামেনে আমি ১০ বছর কাটাই। আমি সিয়ামেনকে ভালবাসি। আবহাওয়া, মানুষ ও খাবার - সিয়ামেনে সবকিছুই আমার ভাল লাগে। আমি সী-ফুড খুব পছন্দ করি এবং এখানকার দৃশ্যও খুব সুন্দর। আমার জন্মস্থান ম্যানিলার চেয়ে সিয়ামেনের পরিবহণ ভাল। সিয়ামেনে আমার বাসা থেকে সমুদ্রসৈকত যেতে মাত্র কয়েক মিনিট লাগে এবং বাসে এক ইউয়ান দিয়ে সারা সিয়ামেন বেড়ানো যায়।"

উনচল্লিশ বছর বয়সী Dixx সিয়ামেনে তার মেয়েবন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হন। তিনিও সিয়ামেনে বসবাসরত একজন ফিলিপিনো। Dixx বলেন, তিনি সিয়ামেনে পরিবার গড়তে এবং এখানে কাজ করতে ও বসবাস করতে চান। তিনি বলেন:

"আমি এখানে বসবাস করতে এবং সারা দিন কু লাং ইউয়ুতে থাকতে চাই। মার্কো পোলো এলাকা একটি বিদেশি-অধ্যুষিত এলাকা এবং আমি ওখানে বাস করব। আমি একজন পেশাদার ফটোগ্রাফারও হতে চাই। সিয়ামেন আমার দ্বিতীয় জন্মস্থান এবং আমি এখানে বিয়ে করব ও জীবনযাপন করব।"

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক