Web bengali.cri.cn   
মুক্তার কথা-১৪ সেপ্টেম্বর
  2013-09-19 18:56:49  cri


<মু: সুপ্রিয় বন্ধুরা, আপনারা শুনছেন সুদূর পেইচিং থেকে সম্প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান 'মুক্তার কথা'। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আপনাদের বন্ধু মুক্তা।

আ: আর সঙ্গে আছি আমি আলিমুল হক। শুরুতেই "আমার চীনা গল্প" রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শ্রোতাদের পাঠানো লেখা প্রসঙ্গ।

বাংলাদেশের পাবনা জেলার পাছশুয়াইল রেডিও শ্রোতা ক্লাবের সম্পাদক ডা এস এম এ হান্নান লিখেছেন: চীনের স্মৃতিকথা কী করে লিখবো? আবার কিছু না-লিখেও তো উপায় নেই! চীন যে আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই চীনা গল্পের এই আসরে চীনের কথাতো বলবোই। চীন একটি বড় দেশ। এদেশে রয়েছে বৈচিত্র্যময় রীতিনীতি, সংস্কৃতি, মানুষ আর খাবার। চীনা খাবারের কথা মনে হলে জিবে জল এসে যায়। বাহারী পরিবেশনায় টোফি অর্থাত্‍ সয়াবিনের দই, চিয়াও চি মাংসের কুলি পিঠে, আরো কত কী! চীনের সংস্কৃতিও বৈচিত্র্যময়। স্থানীয় অপেরা, সার্কাস, ড্রাগন নৌকা, চলচ্চিত্র, সিংহ নাচ, বিভিন্ন ধরনের মেলা বয়ে আনে চীনাদের জীবনে আনন্দধারা। চীনে রয়েছে বিখ্যাত স্থাপত্য নিদর্শন, আছে দেখার মতো অনেককিছু। আছে বেইজিং-এ থিয়েন আনমেন স্কোয়ার, সাংহাই-এ পিপলস স্কোয়ার এবং খৃস্টপূর্ব ২১৪ সালে নির্মিত গ্রেট ওয়াল বা চীনের মহাপ্রাচীর। এ ছাড়াও রয়েছে দ্রুতগামী যাত্রীবাহী ট্রেন। চীনের ইতিহাসও খুবই পুরনো। ৫৬ জাতির এ০-দেশ গুণের কোনো শেষ নেই যেন।

মু: আচ্ছা, যদিও অনেক ছোট রচনা, তবুও তিনি চীনসম্পর্কিত অনেককিছু লিখেছেন। তিনি আমাদের পুরনো শ্রোতা। আশা করি, আরো বেশি শ্রোতা আমাদের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। এবার যার লেখা পড়বো তিনি হলেন বাংলাদেশের নাটোর জেলার আতিয়া সুলতানা রীমা। তিনি লিখেছেন: শুভেচ্ছা নিবেন। আমি ও আমার বন্ধুরা মিলে চীন আর্ন্তজাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শুনি এবং ওয়েবসাইট ভিজিট করি। 'বাংলায় গল্প বাংলার গল্প', মুক্তার কথা, এশিয়া টুডে, সাহিত্য সংস্কৃতি, চলতি প্রসঙ্গ ইত্যাদি অনুষ্ঠান আমার ভাল লাগে। আপনাদের অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই চীনের বিখ্যাত সাহিত্যিক মো ইয়ান সম্পর্কে জেনেছি, জেনেছি চীনের নৌবাহিনীর ভাসমান হাসপাতালের বাংলাদেশ মফরের কথা। কতকিছুই না জানতে পারি চীন আন্তর্জাতিক বেতার শুনে।

আ: একই জেলার হাবিবা আক্তার তাবাসসুম তার ই-মেলে লিখেছেন: কিছু প্রিয় নাম থাকে যা অবিনশ্বর হয়ে টিকে থাকে। এসব নামকে হৃদয় থেকে মুছে ফেলার কোনো উপায় নেই। ‌চীন তেমনি একটি নাম। সীমানা পেরিয়ে এই নাম এসে ঠাঁই নিয়েছে আমার হৃদয়ে। চীন অপ্রতিরোধ্য গতিতে সাফল্য অর্জন করছে। চীনের রয়েছে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। তাই চীনকে আমরা বলি 'হিরো অব দ্য কান্ট্রিজ'। চীনের সাথে রয়েছে আমার আত্মার বন্ধন। বিচিত্র সংস্কৃতির দেশ চীন; আধুনিক প্রযুক্তি, সাহিত্য, সংস্কৃতি, পর্যটনশিল্প, কৃষিতে সাফল্যের দেশ চীন।

মু: আচ্ছা, বন্ধু তাবাসসুম, যদিও আপনি অনেক ছোট লেখা লিখেছেন, তবুও আপনাকে আমাদের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

আ: বাংলাদেশের বগুড়া জেলার নব-জাগরণ শ্রোতা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মুর্শিদা পারভিন ইমেলে লিখেছেন: ‌‌আমার চীনা গল্প শীর্ষক প্রতিযোগিতায় আমার লেখার শিরোনাম 'চীন তোমার পরিচিতি':- এশিয়া মহাদেশের পূর্বাঞ্চলে এবং প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম তীরে চীন দেশ অবস্থিত। চীনের স্থলভাগের আয়তন প্রায় ৯৬ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে চীন এশিয়ার বৃহত্তম দেশ এবং রাশিয়া ও কানাডার পর বিশ্বে ৩য় বৃহত্তম দেশ। চীনের পুর্বদিকে উত্তর কোরিয়া, উত্তর দিকে মঙ্গোলিয়া, উত্তর-পূর্বদিকে রাশিয়া, উত্তর-পশ্চিম দিকে কাজাখস্তান, পশ্চিম আর দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে আফগানিস্তান, পাকিস্থান, ভারত, নেপাল, ভূটান অবস্থিত। চীনের দক্ষিণে মিয়ানমার, লাওস ও ভিয়েতনাম। চীনের জাতীয় পতাকা হলো পাঁচ তারকা খচিত লাল পতাকা। এর দৈর্ঘ্য ও উচ্চতার অনুপাত হলো ৩:২। জাতীয় পতাকার রং লাল; লাল বিপ্লবের রঙ। পতাকার ৫টি হলুদ তারকার মধ্যে চারটি ছোট ও একটি বড়। বড় তারকাটি চীনের কমিউনিস্ট পার্টীর প্রতীক।

জাতীয় পতাকা, থিয়েন আনমেন স্কয়ার, চাকা এবং ধানের শীষ নিয়ে চীনের জাতীয় প্রতীক গঠিত। বীর বাহিনীর অগ্রযাত্রার গান চীনের জাতীয় সংগীত। গানটি ১৯৩৫ সালে রচনা করা হয়। গানের কথাগুলো লিখেছেন নাট্যকার থিয়েনহান। গানটিতে সুর দিয়েছেন চীনের নতুন সংগীত আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা নিয়ের আর। গানটি ‌‌‌সংগ্রামের অগ্রগামী সন্তানেরা নামক চলচিচত্রের থিম সংগীত। ১৯৩১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঘটনার পর জাপান চীনের উত্তরপূর্ব অঞ্চলের তিনটি প্রদেশ দখল করে। চীনা জাতি জীবনমত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়ায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীনারা জাপান-বিরোধী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। চলচিচত্রটিতে এই কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে চিনা গনপ্রজাতন্ত্রের জাতীয় সংগীত আনুষ্ঠানিকভাবে তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বীর বাহিনীর অগ্রযাত্রার গানটিকে জাতীয় সংগীত হিসাবে গ্রহন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

মু: আচ্ছা, বন্ধু পারভিন, বিস্তারিতভাবে চীনের আয়তন, সীমান্ত, জাতীয় পতাকা ইত্যাদি সম্পর্কে লিখেছেন। দেখা যাচ্ছে, তিনি নিয়মিত আমাদের অনুষ্ঠান শেনেন। তবে, আশা করি, শ্রোতারা চীনসম্পর্কিত তথ্যবহুল লেখা ছাড়াও, অন্যধরণের লেখাও পাঠাবেন। ধন্যবাদ।

আ: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতার শ্যামল কুমার বিশ্বাস

তার রচনায় লিখেছেন, ....

মু: বন্ধু কুমার, আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনিও চীনের ওপরে ইতিহাসধর্মী লেখা লিখেছেন। আমরা আসলে গল্পধর্মী লেখা পেতে বেশি আগ্রহী। চীনের সাথে জড়িয়ে আপনার নিজের কোনো স্মৃতি বা গল্প থাকলে লিখে পাঠান। আমাদের প্রতিযোগিতার শিরোনামও কিন্তু "আমার চীনা গল্প"।

আ: মাগুরা জেলার মোঃ আশরাফুল ইসলাম মিনটু আমার চীনা স্বাদ ভাল লাগে প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত একটি কবিতা লিখেছেন। তিনি লিখেছেন,

♥চীনা স্বাদ শীর্ষক কবিতা♥

চীন আমার প্রিয় দেশ,

চীন হল স্বপ্নের দেশ।

এই দেশে তে আছে কত,

রংবেরংঙগের খাবার।

চীনা খাবার বিশ্বের বুকে,

একটি ঐতিহাসিক নাম।

একবার খাইলে কি আর,

ভূলে থাকা যায়।

তাইতো আমরা সবাই মিলে,

চীনা খাবার খায়।

♣ধন্যবাদে♣

মু: বন্ধু মিন্টু আপনাকে কবিতা লেখার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বন্ধুরা, আপনারা বেশি করে আমাদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করুন। আমরা আপনাদের জন্য চমত্কার চমত্কার পুরস্কার নিয়ে অপেক্ষা করছি।

আ: ঢাকার উত্তরণ সিআরআই লিসেনার্স ক্লাবের মহা-পরিচালক মোঃ মঞ্জুরুল আলম রিপন তার চিঠিতে লিখেছেন: আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা নিন। আশা করি বাংলা বিভাগের সকলকে নিয়ে কুশলে আছেন। আমিও ভালো আছি। আজকের মুক্তার কথা (সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৩ ইং) অনুষ্ঠানে 'আমার চীনা গল্প' প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বিধান চন্দ্র স্যান্যাল, রবি শংকর বসু'র গল্প স্থান পেল। সত্যি বলতে কি, দু'টো গল্পই অত্যন্ত চমৎকার হয়েছে। বিশেষ করে রবি শংকর বসু'র প্রবন্ধটি খুবই জীবন্ত হয়েছে। গল্প শুনতে শুনতে আমার নিজেরই মনে হচ্ছিল সিআরআইয়ের ভবন আর আশেপাশের জায়গাগুলো আমারও খুবই চেনা। এ-ধরনের স্মৃতিচারণমূলক গল্প সত্যিই ভালো লাগে। আমার বিশ্বাস 'আমার চীনা গল্প' প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সব গল্পই মুক্তার কথা অনুষ্ঠানে স্থান পাবে। আমার চীনা গল্প প্রতিযোগিতার শেষ তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর। প্রতিযোগিতা শেষ হবার আগেই মুক্তার কথা অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতার গল্পগুলো পড়ে শোনানোর পরিবর্তে, প্রতিযোগিতা শেষ হবার পর বাছাইকৃত সেরা গল্পগুলো পড়ে শোনালে আরো ভালো হয়। আমার প্রস্তাবটি আশা করি বিবেচনা করে দেখবেন।

মু: বন্ধু রিপন, আপনার মতামতকে সম্মান জানিয়ে বলছি, আমরা শ্রোতাদের মোটামুটি সব লেখাই মুক্তার কথা অনুষ্ঠানে আগেই পড়ে শোনানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যাতে শ্রোতারা বুঝতে পারেন যে, তাদের লেখা প্রতিযোগিতায় স্থান পেয়েছে। আপনার লেখাটিও দ্রুত পাঠিয়ে দিন, তারপর নিজের গল্প নিজেই শুনুন আমাদের অনুষ্ঠানে।

আ: নাটোর জেলার আতিয়া সুলতানা রীমা তার ইমেলে লিখেছেন, শুভেচ্ছা নিবেন। আমি আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমের একজন ক্ষুদ্র পাঠক, শ্রোতা ও লেখিকা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে ভালোমন্দ দু'ধরনের খবরই পাই। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতির খবর ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের খবর যেমন পাই, তেমনি বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, অর্থনৈতিক মন্দা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবরও পাই। তবে আমাকে সবচে কষ্ট দেয় বিশ্বজুড়ে মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের বিষয়টি। আশা করি বিশ্বের মানুষ এই অবক্ষয়ের কবল থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য একযোগে কাজ করে যাবে।

মু: বোন রীমা, আপনি ঠিকই বলেছেন। আমরাও চাই আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী আরো সুন্দর হয়ে উঠুক; মানবিক মূল্যবোধের জয় হোক। হ্যা, এর জন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। আপনাকে চিঠির জন্য ধন্যবাদ।  

আচ্ছা, বন্ধুরা, এবার চলুন একটি গান শোনা যাক।

গান

আ: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ইন্টারন্যাশন্যাল রেডিও লিসেনার্স ক্লাবের সম্পাদক দেবাশীষ গোপ চিঠিতে লিখেছেন, ...

মু: বন্ধু দেবাশীষ গোপ, আপনাকে প্রস্তাব করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। আমরা আপনার প্রস্তাব বিবেচনা করবো। আপনার প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি। আসলে চীনে অনেক সংবাদপত্র রয়েছে। কিন্তু চীনের সর্বাধিক প্রচারিত পত্রিকা হল "পিপলস ডাইলি"। পিপলস ডাইলি হল চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিশনের পত্রিকা। পত্রিকায় সময়মত চীনের কমিউনিস্ট পর্টির মনোভাব ও চীন সরকারের সর্বশেষ নীতি, সিদ্ধান্ত এবং আন্তর্জাতিক খবরাখবর প্রকাশিত হয়। পিপলস ডেইলিকে চীনে চীনা রাষ্ট্রীয় পরিষদের কন্ঠ বলা হয়। আপনাকে ভাল প্রশ্ন করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

আ: বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান শেষ করার আগে আপনাদেরকে আরেকটি সুন্দর বাংলা গান শোনাবো। আশা করি, সব শ্রোতা গানটি পছন্দ করবেন।

গান

আ: প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এতোক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনারা আমাদের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও আনন্দ পেয়ে থাকেন, তাহলে মনে করবো আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। আপনাদের জন্যই আমাদের সকল প্রচেষ্টা ও আয়োজন। আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং শুনতে থাকুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। আর হ্যা, আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না।

মু: হ্যাঁ, আপনারা আমাদের ইমেলেও প্রশ্ন বা মতামত পাঠাতে পারেন। আমাদের ইমেল ঠিকানা হলো ben@cri.com.cn। আবারো বলছি ben@cri.com.cn। আশা করি, আগামী সপ্তাহের একই দিনে, একই সময়ে আবার আপনাদের সঙ্গে কথা হবে। ততোক্ষণ সবাই ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক