Web bengali.cri.cn   
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে চীনের উদ্যোগ
  2013-05-17 18:26:53  cri
সুপ্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি চীনে সফর করেছেন আলাদা আলাদাভাবে। চিরবৈরী এই দু'দেশের নেতাদের প্রায় একই সময়ে একই দেশ সফর করার ঘটনা বিশ্বে অল্পই ঘটেছে। সেকারণে বিশ্বের দৃষ্টি ছিল এ সফরের দিকে। দু' নেতার চীন সফর শেষ হওয়ার অব্যবহিত পরে সি আর আই চীনের মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা বিষয়ক বিশেষ দূত উ সি কো'র একটি বিশেষ সাক্ষাত্কার নেয়। এখন শুনবেন এ সাক্ষাত্কারের ভিত্তিতে সি আর আই সংবাদদাতা ওয়াং ফেই'র লেখা একটি প্রতিবেদন।

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়া ছিল দু'দেশের নেতাদের এবারের চীন সফরের সময়কার প্রধান আলোচ্যসূচি। গত দুই বছরে মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা বিশৃঙ্খল হয়েছে। তবে এ সমস্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গুরুত্ব আগের চেয়ে কমেছে। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া কোনো অগ্রগতি না হওযায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পিছুটা পিছিয়ে গেছে। ওসলো চুক্তি স্বাক্ষরের বিংশ বার্ষিকী উপলক্ষে পেইচিংয়ের আমন্ত্রণে ফিলিস্তিন ও ইসরায়লের নেতারা চীন সফর করেন। বিশেষ দূত উ সি কো বলেন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে চায় চীন। একটি বৃহত্ রাষ্ট্র হিসেবে এটি চীনের দায়িত্ব।

"নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার পর চীন একই সময়কালে দু'টি দেশের নেতাদেরকে চীন সফরে আমন্ত্রণ জানায়। এতে বিশ্ব দেখছে যে, একটি বৃহত্ রাষ্ট্র হিসেবে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি স্থায়ী সদস্য দেশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমস্যার ওপর মনোযোগ দেয় চীন। এটা আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয়।"

ছয় মে বৈঠকে সি চিন পিং ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে চারটি ধারণা তুলে ধরেন। বিশেষ দূত উ বলেন:

"আমরা চেষ্টা করি যাতে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল দীর্ঘদিনের বৈরিতা দূর করে পারস্পরিক আস্থার একটি নতুন সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারে। প্রেসিডেন্ট সির চারটি ধারণায় এ সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি রয়েছে। আমরা দু'পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবো এবং ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে ধীরে ধীরে সমস্যা দূর করবো।"

চীন ও ইসরায়েলের মধ্যে ২১ বছর আগে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই ২১ বছরে দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। এ সম্পর্ক চীন ও ইসরায়েলের জনগণের স্বার্থের জন্য যেমন সহায়ক, তেমনি সহায়ক এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে ফিলিস্তিনের সঙ্গে সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের নেতাদের প্রায় একই সময়ে এবারের চীনে সফরের মধ্য দিয়ে ফলাফল অর্জন করেছে দু'পক্ষ। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দু'দেশের নেতাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছে চীন। অচল হয়ে পড়া ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়া নতুন শক্তি পেয়েছে এর মধ্য দিয়ে। চীন, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল – তিন পক্ষের জন্যই এবারের সফর সফল হয়েছে।

"আমাদের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং প্রধানমন্ত্রী লি খে ছিয়াংয়ের সঙ্গে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের নেতারা সাক্ষাত্ ও বৈঠক করেছেন। তাঁরা আঞ্চলিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের জন্য এবারের সফর একটি বড় সাফল্য। অন্যদিকে এ সফরের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে চীনের পারস্পরিক জানাশুনা বেড়েছে। তিন পক্ষই এতে সন্তুষ্ট হয়েছে।"

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক