শীর্ষস্থানীয় ঋণমান নির্ধারণ সংস্থা মুডি'স বলছে, দুর্বল প্রবৃদ্ধি নিয়ে শীর্ষ অর্থনৈতিক দেশগুলোকে আরো দুই বছর অর্থাত্ ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভুগতে হবে। সংস্থার মতে, ইউরো অঞ্চলের ঋণসংকট নিয়ে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে যে ক্ষরণ চলছে তার বিরূপ প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর। আর এর ফলে উদীয়মান অর্থনীতিতেও মন্দা দেখার দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে সর্বশেষ পূর্বাভাস সম্প্রতি মুডি'স জানায়, ইউরো অঞ্চল যদি নতুন করে গভীর মন্দায় পড়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব সংকট নিয়ে জটিলতা না কমে, তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে ঝুঁকি আরো বাড়বে, যা অনেক গভীর হতে পারে। পূর্বাভাসে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে আরেকটা ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে, সেটি হলো চীন, ভারত ও ব্রাজিলের মতো উদীয়মান অর্থনীতির হার্ড ল্যান্ডিংয়ের সম্ভাবনা।
মুডিসের মতে, জি-২০ভুক্ত দেশগুলোর প্রকৃত প্রবৃদ্ধি হবে ২০১২ সালে ১.৩ শতাংশ, ২০১৩ সালে ১.৬ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে হবে ২.০ শতাংশ। এটা গত আগস্টে করা এ সংস্থার পূর্বাভাসের চেয়ে কম। বিশেষ করে ২০১৩ সালের জন্য করা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে এবারের পুর্বাভাস প্রায় আধা শতাংশ কম।
প্রতিবেদনে মুডি'স বলেছে, "আমরা আশা করছি আগামী দু' বছর এ সব দেশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে কেবল ধীর গতিতে শক্তিশালী হতে থাকবে। তবে আর্থিক বাজারের অনিশ্চয়তা ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভোক্তা আস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে থাকবে এবং বর্ধিত অনিশ্চয়তা ব্যয়, ক্রয় ও বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে ক্ষতিগ্রস্ত করে চলবে।"
এ সংস্থা অবস্থা আশা করছে জি-২০ভুক্ত উদীয়মান অর্থনীতিগুলো প্রবৃদ্ধি অর্জনে গ্রুপের অন্য দেশগুলোকে পেছনে দেবে। অবশ্য বিশ্ব বাণিজ্যে হ্রাস এবং অভ্যন্তরীণ বাজারের প্রয়োজনীয় সমর্থনের অভাব এ আশাবাদ নাও ফলতে পারে।
মুডি'স বলছে, জি-২০ভুক্ত এসব উদীয়মান অর্থনীতিতে চলতি বছর প্রকৃত প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ শতাংশের একটু বেশি, যা আগস্টে করা পূর্বাভাসের চেয়ে কিছুটা কম। এরপর প্রবৃদ্ধি আস্তে আস্তে বেড়ে ২০১৩ সালে ৫.৫ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৫.৭৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে।
মুডি'স জানায়, বৈশ্বিক ভারসাম্যহীনতা তৈরি হওয়ায় শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর অর্থনীতি সাম্প্রতিক মাসগুলোয় আরো শ্লথ হয়েছে, যার সৃষ্টি ২০০৭ সালের অর্থনৈতিক সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে।
বৈশ্বিক ভারসাম্যহীনতা বলতে বোঝানো হচ্ছে কয়েকটি দেশের, বিশেষ করে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর ব্যালান্স অব পেমেন্ট এবং বাণিজ্য-উদ্বৃত্ত এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজেট ঘাটতি।
মুডি'স বলছে, কাঠামোগত সমস্যা মোকাবিলার ক্ষেত্রে ধীর অগ্রগতি, যা কিনা বাণিজ্য প্রবৃদ্ধিকেকে শ্লথ করে দিচ্ছিল এবং তার পাশাপাশি মূলধনের অনিশ্চিত প্রবাহের কারণে তারা উন্নত বিশ্বের প্রবৃদ্ধি-পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে।(এসআর)