সুবর্ণা. পেইচিং উদ্ভিদোদ্যান সিশান পাহাড়ের কাছে অবস্থিত, এর আয়তন ৪০০ হেক্টর, চীন ও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০ হাজারেরও বেশি প্রজাতির প্রায় ১৫ লাখ উদ্ভিদ আছে এ-উদ্যানে। এ-উদ্ভিদোদ্যান উদ্ভিদ প্রদর্শন এলাকা, গবেষণাগার, ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান আর পুরাকীর্তি এবং প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এলাকা নিয়ে গঠিত। শরত্কালে পেইচিংয়ের উদ্ভিদোদ্যানের দৃশ্য অসাধারণ। উদ্ভিদ প্রদর্শন এলাকা উদ্ভিদ বাগান, ফল গাছের বাগান ও গ্রীনহাউস নিয়ে গঠিত। উদ্ভিদ বাগানে চীনা গোলাপ, পিচ, পিওনি আর ম্যাংগোলিয়াসহ নানা ধরনের সুন্দর ফুল চাষ করা হয়। আলিম ভাই, আপনি কোন ফুল সবচে বেশি পছন্দ করেন? নানা রঙ ও আকারের ফুল দেখে আপনার কেমন লাগছে?
প্রকাশ. সত্যি বলতে কি, আমি সবধরনের ফুলই পছন্দ করি। এখানকার সব ফুলই সুন্দর। এ ছাড়া, পেইচিং উদ্ভিদোদ্যানের বিভিন্ন গাছের নানা রঙয়ের পাতাও আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। যেমন হলুদ রঙয়ের maidenhair গাছের পাতা, লাল রঙয়ের maple গাছের পাতা, সবুজ রঙয়ের পাইন গাছের পাতা ইত্যাদি। . তাহলে maple গাছসম্পর্কিত একটি সুন্দর গান শ্রোতাদের শোনালে কেমন হয়? গানের নামঃ 'maple গাছ', গেয়েছেন চীনের তাইওয়ানের খুব নামকরা একজন শিল্পী। উনার নাম 'চৌ চিয়ে লুন'।
সুবর্ণা. হ্যাঁ, 'চৌ চিয়ে লুন' এ-নামটি শুনে নিশ্চয়ই আমাদের শ্রোতাদের অনেকে চিনতে পেরেছেন। অনেকে তার গান পছন্দ করেন। এর আগের অনুষ্ঠানে আমরা তার কয়েকটি গান প্রচার করেছিলাম।তাহলে আমি একটু সময় নিয়ে গানের কথাগুলো সবার জন্য ব্যাখ্যা করব। গানে বলা হয়েছে: আঘাত পাওয়া হ্রদ কি আগের মতো আমাকে ভালবাসবে? আমি আমার হাত দিয়ে তোমার দুটো হাত ধরেছি/ আগের ভালোবাসা সময়ের সাথে সাথে চলে গেলো। গাছ থেকে পড়া সে maple পাতা আমার দুঃখের মতো/ এ শরতকালে আমি তোমাকে আবার মিস করছি, তোমার কথা আমার মনে পড়ছে/ সুন্দর গানটি শোনার পর এখন শরত্কালে পেইচিং উদ্ভিদোদ্যানের কয়েকটি সুন্দর দর্শনীয় স্থানের তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি। Cherry Vale হচ্ছে উদ্ভিদোদ্যানের সবচেয়ে সুন্দর দর্শনীয় স্থানের অন্যতম। এখানকার ১৮০টিরও বেশি Dawn redwood গাছের পাতার রঙ সবুজ থেকে সোনালী রঙয়ে পরিণত হয়, আরও কয়েক দিন পর তা হয়ে যায় লাল রঙয়ের। পেইচিং উদ্ভিদোদ্যানের মধ্যে দুটি হ্রদ আছে; বসন্তকালে দক্ষিণ হ্রদের দৃশ্য বেশ সুন্দর এবং শরত্কালে উত্তর হ্রদের দৃশ্য দারুণ সুন্দর। উত্তর হ্রদের দৃশ্য পর্যবেক্ষণ ফ্ল্যাটফর্ম থেকে হ্রদের আশেপাশে নানা ধরনের বহুবর্ণ গাছের পাতা দেখতে বেশ ভালো লাগে। হ্রদে পাহাড় ও বহুবর্ণ পাতার ছায়া পড়ে, তা দূর থেকে দেখলে যেন একটি চিত্রকলার মতো।
প্রকাশ. তা ছাড়া, পেইচিং উদ্ভিদোদ্যানের পুরনো গাছের সংখ্যাও অনেক বেশি। এরমধ্যে উওফো মন্দিরের দুটি maidenhair গাছ সবচেয়ে বিখ্যাত। উওফো মন্দির পেইচিং উদ্ভিদোদ্যানের কাছে একটি বিখ্যাত পর্যটন স্থান। এ-মন্দিরের ইতিহাস ৮০০ বছরেরও বেশি। এখানকার maidenhair গাছের বয়সও ৮০০ বছরের ওপরে। গাছের উচ্চতা ২০ মিটারেরও বেশি এবং এর গুঁড়িও বেশ মোটা। এ-দুটি পুরনো maidenhair গাছ উওফো মন্দিরের লাল দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। শরত্কালে মন্দিরটিকে বাইরে থেকে অনেক সুন্দর ও পবিত্র লাগে।প্রিয় বন্ধুরা, উওফো মন্দিরের তথ্য জানার আগে আমরা আরেকটি সুন্দর গান শুনবো, কেমন?