এবারের শিল্প উত্সবের সাতটি অংশ হলো: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা, প্রদর্শনী, বাণিজ্য-মেলা, ফোরাম, সাধারণ মানুষের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও যুব শিল্প উত্সব। মঞ্চের অনুষ্ঠান পরিবেশনা এবারের শিল্প উত্সবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মঞ্চের ৪৬টি অনুষ্ঠানের অর্ধেক হল বিদেশের শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্ম। জার্মানির স্টুটগার্ট ব্যালে দল ও ড্রেস্দেন্ বাদকদলের শিল্পীরা, রাশিয়ার বিখ্যাত বেহালাবাদক ভাডিম রেপিন এবং গীতিনাট্য–অভিনেত্রী এলাইন পেইজ এবারের উত্সবে অংশ নিচ্ছেন।
বৈচিত্র্যময় বিদেশী অনুষ্ঠান উপভোগ করে সাংহাইয়ের নাগরিকরা বিশেষেভাবে চমত্কৃত। ম্যাডাম হুয়া সিআরআই সংবাদদাতাকে জানান, উত্সব চলাকালে তিনি তিনটি নাটক দেখতে চান। তিনি বলেন-
'একটিমাত্র শিল্প উত্সবে বিদেশের এতো বেশী ধ্রুপদী চিত্তাকর্ষক নাটক উপভোগের সুযোগ মেলা নি:সন্দেহে একটি আনন্দদায়ক ব্যাপার। শিল্প উত্সবের মাধ্যমে আমরা যে শুধু বিদেশী সংস্কৃতি সম্বন্ধে অনেককিছু জানতে পারি তা নয়, বিদেশি শিল্পীদের সঙ্গে নানা বিষয়ে মতবিনিময়ও করতে পারি।'
এ শিল্প উত্সবে চীনের নবরচিত কয়েকটি উত্কৃষ্ট শিল্পকর্মও প্রথমবারের মতো উপস্থাপন করা হবে। যেমন, নৃত্যশিল্পী ইয়াং লি পিং পরিবেশিত নৃত্যনাট্য 'ময়ূর' এবং বিখ্যাত পরিচালক ছাং চি কাংয়ের রচিত ও পরিচালিত নৃত্যনাট্য 'সহস্রহস্তবিশিষ্ট দেবী' ইত্যাদি।
১৩ বছর ধরে সাংহাই আন্তর্জাতিক শিল্প উত্সব আয়োজন করা হচ্ছে। এ শিল্প উত্সব ধাপে ধাপে শিল্প ও সংস্কৃতি বিনিময়ের এমন একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে, যার রয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি ও প্রভাব। ইউনেস্কোর কৌশলগত পরিকল্পনা বিষয়ক সহকারী মহাপরিচালক হ্যান্স ডিঅরভিলে (Hans D'Orville) এর ইতিবাচক মূল্যায়ন করে বলেন:
"এ মহাসম্মিলনী শুধু যে বিশ্বের সাংস্কৃতিক মঞ্চে চীনের নেতৃস্থানীয় ভূমিকার পরিচয় দিয়েছে তা নয় , সংস্কৃতির বৈচিত্র্য বাড়ানো, সংস্কৃতি ও শিল্পের উন্নয়ন সাধন করা এবং তাকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের চালিকাশক্তিতে রুপান্তরিত করার জন্য চীন ও সাংহাইয়ের সংকল্পও ব্যক্ত করেছে।"
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ওয়াং চুং ওয়ে বলেন, "চীনের একমাত্র জাতীয় পর্যায়ের বহুমুখী শিল্প উত্সব হিসেবে সাংহাই আন্তর্জাতিক শিল্প উত্সবের উচিত নিজের সাংস্কৃতিক অবস্থান ধরে রাখার পাশাপাশি জাতীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা এবং বিশ্বের উন্নত সভ্যতার সাথে যোগসূত্র স্থাপন করা।"
তিনি আরো বলেন, "ভবিষ্যতে আমরা শিল্প উত্সবের সাংগঠনিক কাজকে নিখুঁত করার প্রচেষ্টা করবো, নানা আকারের বৈদেশিক সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার উদ্যোগ নেব এবং সমুদ্রতুল্য মুক্তহৃদয়ে বিদেশের নানারকম হিতকর সংস্কৃতি গ্রহণ করবো, যাতে সাংহাই শিল্পকলার সাগর, সংস্কৃতির স্বর্গ এবং চীনা সভ্যতা ও বিশ্ব সভ্যতার মিলনের একটি তীর্থস্থানে পরিণত হতে পারে।"