Web bengali.cri.cn   
বিশ্বভারতীর চীনভবনের প্রথম পরিচালক থান ইয়ুন সান ১
  2012-10-22 16:26:23  cri

প্রিয় শ্রোতা, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে তিনটায় চীনা গণমৈত্রী সমিতির শান্তি-ভবনে থান ইয়ুন সান নামক স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। চীনের কেন্দ্রীয় সম্পাদনা ও অনুবাদ প্রকাশনালয় প্রকাশিত এ স্মারকগ্রন্থের প্রধান সম্পাদক হলেন থান ইয়ুন সানের বড় ছেলে থান চং এবং সেনচেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়ু লং ইয়ি। এ স্মারকগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে থান ইয়ুন সানের আত্মীয়, চাংসা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালের অধ্যাপিকা হু লিং লিংয়ের লেখা প্রবন্ধ 'থান ইয়ুন সানের অসাধারণ জীবনযাত্রা', থান চংয়ের লেখা প্রবন্ধ 'থান ইয়ুন সানের আদর্শ', থান ইয়ুন সানের পুত্রবধু হুয়াং ই সুর লেখা প্রবন্ধ 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও থান ইয়ুন সানের বন্ধুত্ব', থান ইয়ুন সানের মেজো ছেলে থান লির লেখা প্রবন্ধ 'থান ইয়ুন সান কেমন মানুষ ছিলেন', তাঁর কনিষ্ঠ ছেলে থান তংয়ের লেখা প্রবন্ধ 'বিদেশে বসে আমি বাবার কথা ভাবছি', বড় মেয়ে থান ওয়েনের লেখা প্রবন্ধ 'বাবা নিয়ে আমার সুখস্মৃতি', ছোটো মেয়ে থান ইউয়ানের লেখা প্রবন্ধ 'আমি ও আমার বাবা থান ইয়ুন সান', অধ্যাপক ইয়ু লং ইয়ির লেখা প্রবন্ধ 'থান ইয়ুন সান ও চীনভবন', হুয়াংরংয়ের লেখা প্রবন্ধ 'খ্যাতনামা ব্যক্তিদের চোখে থান ইয়ুন সান', পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ পণ্ডিত চু চিয়ানের লেখা প্রবন্ধ 'শ্রী অরবিন্দের চিন্তাধারার ওপর থান ইয়ুন সানের মন্তব্য' এবং ছাই ফেংয়ের লেখা প্রবন্ধ 'সেনচেন বিশ্ববিদ্যালয়ে থান ইয়ুন সান স্মারক কক্ষের ভূমিকা'। তিন লাখ তিরিশ হাজার চীনা শব্দ বিশিষ্ট এ স্মারকগ্রন্থে নানা দিক থেকে থান ইয়ুন সানের সুউজ্জ্বল জীবন এবং চীন ও ভারতের মৈত্রীবন্ধন ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ জোরদারের ব্যাপারে থান ইয়ুন সানের অনন্য অবদান বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

এ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে চীনের কেন্দ্রীয় সম্পাদনা ও অনুবাদ প্রকাশনালয়ের প্রধান সম্পাদক লিউ মিন ছিং এবং ভারতে নিযুক্ত সাবেক চীনা রাষ্ট্রদূত ছেং রুই সেং বক্তব্য রাখেন। তাঁরা এ স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের জন্য প্রকাশনালয়কে উষ্ণ অভিনন্দন জানান।

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত এ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বলেন, তিনি তিন বার চীন সফর করেছেন। চীনের বিশ্ববিদ্যায়ের একজন ছাত্রীর সংগে নিয়মিত তাঁর ই-মেল বিনিময় হয়। তিনি আশা করেন, চীনের তরুণ-তরুণীরা

থান ইয়ুন সানের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দু দেশের মৈত্রীকে সুসংবদ্ধ করবেন।

থান ইয়ুন সানের বড় ছেলে থান চংয়ের বয়স ৮৩ বছর। তবে তিনি অত্যন্ত স্বাস্থ্যবান। এ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো থেকে পেইচিংয়ে আসেন। সি আর আই সংবাদদাতাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি আবেগপূর্ণ কণ্ঠে থান ইয়ুন সানের দীর্ঘ বিচিত্র জীবন বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, ১৮৯৮ সালে চীনের হুনান প্রদেশের ছালিং জেলার ছাং লে গ্রামে এক বুদ্ধিজীবী পরিবারে থান ইয়ুন সান জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বয়স যখন মাত্র ৬ বছর তখন তাঁর মা-বাবা পরপর মারা যান। আত্মীয় হুয়াং ছং রেনের আর্থিক সহায়তায় তিনি জেলা-শহরের এক নম্বর স্কুলে পড়াশোনা করেন। ষষ্ঠ শ্রেণীতে লেখাপড়া শেষ করে তিনি প্রাদেশিক রাজধানী চাংসা শহরের ছেংনান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়তে যান। ১৯১৫ সালে তিনি হুনান প্রদেশের এক নম্বর নর্মাল কলেজে ভর্তি হন। তিনি সক্রিয়ভাবে প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এবং চীনের প্রয়াত মহান নেতা মাও সে তং প্রতিষ্ঠিত নব গণসমিতিতে যোগদান করেন। তিনি মাও সেতংয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নতুন সাহিত্য সমিতি গঠন করেন এবং 'নতুন সাহিত্য' নামে হুনান দৈনিক পত্রিকার সাপ্তাহিক সংখ্যা সম্পাদনের ভার গ্রহণ করেন। তিনি এক সময় হুনান প্রদেশের ছাত্রসংঘের চেয়ারম্যানও ছিলেন। ১৯২৩ সালে এক নম্বর নর্মাল কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি নর্মাল কলেজের অধিনস্থ স্কুলে শিক্ষকতা করার সাথে সাথে চাংসা শহরের চুয়ান শান গবেষণালয়ে বিদ্যাচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন।

১৯২৪ সালে চাংসা ছেড়ে থান ইয়ুন সান সিংগাপুরে গিয়ে চীনা প্রবাসীদের একটি বাণিজ্য-কলেজে চীনা ভাষা পড়াতে শুরু করেন। ১৯২৬ সালে তিনি মালয়শিয়ার মুয়ার শহরের চীনা প্রবাসীদের একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।

১৯২৭ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিংগাপুর সফর করেন। যে হোটেলে তিনি থাকেন সে হোটেলে গিয়ে তাঁর সংগে দেখা করেন থান ইয়ুন সান। কবিগুরুর কাছে থান ইয়ুন সান প্রাণ খুলে তাঁর জীবনের লক্ষ্য ও ভারত সফরের ব্যাকুলতা ব্যক্ত করেন। রবীন্দ্রনাথ এ সরলপ্রাণ চীনা যুবককে খুবই পছন্দ করেন। তাঁকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা শেখানোর আমন্ত্রণ জানালে তা সানন্দে গ্রহণ করেন থান ইয়ুন সান।

১৯২৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থান ইয়ুন সান নববিবাহিত স্ত্রী চেংনা ওয়েই কাছ থেকে বিদায় নিয়ে একাই শান্তিনিকেতনে যান। সেখানে পৌঁছানোর পরপরই চীনা ভাষা শেখানো এবং ভারত-বিষয়ক গবেষণা শুরু করেন তিনি। কাজ করতে করতে তিনি অনুভব করেন, চীন-ভারত সাংস্কৃতিক সমিতি গঠন করা খুব প্রয়োজন। রবীন্দ্রনাথের কাছে এ সংগঠন গঠনের প্রস্তাব তুলে দৃঢ় সমর্থন পান তিনি। কেননা, ১৯২৪ সালে চীন সফরের সময় রবীন্দ্রনাথের মনেও চীন-ভারত সাংস্কৃতিক সমিতি প্রতিষ্ঠার বাসনা উদিত হয়েছিল। তারপর থান ইয়ুন সান চীনে ফিরে নান চিং ও শাংহাই শহরে এ সংগঠনের গুরুত্ব চীন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা ও শিক্ষা মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বোঝান। চীনভবন নির্মাণের অর্থসংগ্রহের জন্য তিনি দৌড়ঝাপ করেন নানা জায়গায়। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় ১৯৩৩ সালে নানচিং শহরে চীন-ভারত সাংস্কৃতিক সমিতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁর নির্ধারিত এ সোসাইটির লক্ষ্য হলো: চীন ও ভারতের বিদ্যাচর্চা সম্প্রসারিত করা, দুদেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়ানো, দুদেশের জনগণের পারস্পরিক অনুরাগ গভীর করা, দুদেশের জাতিগুলোর মধ্যে ঐক্যবন্ধন গড়ে তোলা, মানবজাতির শান্তি সৃষ্টি করা এবং বিশ্বের মহাসম্মিলনী ঘটানো।

১৯৩৪ সালের ১৯ আগস্ট শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের বাড়িতে ভারত-চীন সাংস্কৃতিক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়।

চীনে চাঁদা তুলে শান্তিনিকেনে একটি চীনা পান্থশালা নির্মাণ করা হবে - চীন-ভারত সাংস্কৃতিক সমিতি জন্মলগ্নেই এ অঙ্গীকার নিয়েছিল। এ পান্থশালা পরে চীনভবনে রূপান্তরিত হয়। ১৯৩৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্রনাথের পরামর্শ অনুযায়ী থান ইয়ুন সান চীন-ভারতের সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের যে একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তার চার ভাগ হলো: এক, চীনভবন নির্মাণ করা হবে, এর একটি বসার ঘর, একটি পাকশালা এবং অতিথি থাকার ১২টি ঘর তৈরি করতে তিরিশ হাজার টাকা লাগবে। দুই, চীনভবনের এক লাখ বিশ হাজার টাকার তহবিল গঠিত হবে, চীনের সংস্কৃতি ও বৌদ্ধধর্মের শাস্ত্র নিয়ে যে দুজন অধ্যাপক গবেষণা করবেন তাঁদের মাসিক বেতন হবে ২৫০ টাকা। তিন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য চীনভবনের ক-শ্রেণী ও খ-শ্রেণীর মাসিক বৃত্তি হবে যথাক্রমে ১০০ টাকা ও ৫০ টাকা। ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তির মোট পরিমাণ হবে আনুমানিক এক লাখ ৪৪ হাজার টাকা। চার, চীনভবনের গ্রন্থাগারে দুদেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপহার দেওয়া বইপুস্তক সংরক্ষিত হবে।

থান ইয়ুন সান-প্রণীত এ পরিকল্পনা দেখে রবীন্দ্রনাথ তৃপ্ত হয়ে তাতে লেখেন: "স্বাগতিক হতে পারলে আমি ভীষণ খুশি হব। চীন-ভারত সাংস্কৃতিক সমিতি যেন শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীকে তার কার্যক্রম বাস্তবায়নের উপযুক্ত স্থান বলে গণ্য করে। আমি আশা করি, চীনের বন্ধুরা আন্তরিকভাবে চীন-ভারত সাংস্কৃতিক সমিতিকে বরণ করবেন এবং আমার চীনা সহকর্মী অধ্যাপক থান ইয়ুন সানের প্রতি সাহায্যের উদার হাত বাড়াবেন, যাতে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারে এবং দু দেশের সাংস্কৃতিক যোগাসূত্রকে আরো ঘনিষ্ঠ করতে পারে - এমন একটি স্থায়ী সংগঠনের জন্ম হয়।"

থান চং সি আর আই সংবাদদাতার কাছে চীনভবনের নির্মাণ প্রসংগে বলেন: "আমার বাবা চীনভবনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯২৮ সালে ভারতে যান। এর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও চীনভবনের নির্মানের কথা ভেবেছিলেন। চীন সফরের সময় তিনি চীনা পণ্ডিত লিয়াং ছি ছাওয়ের সংগে এ পরিকল্পনা নিয়ে মত বিনিময় করেছিলেন। তিনি বিশ্বভারতীতে চীন বিষয়ক গবেষণার সুত্রপাত ঘটাতে চেয়েছিলেন। বিশ্বভারতীর অর্থ হলো বিশ্বের নীড়। আমার বাবা শান্তিনিকেতনে যাওয়ার পর চীনভবন তৈরিতে রবীন্দ্রনাথের আগ্রহ অনেকখানি বেড়ে যায়।"

চীনভবন নির্মাণের কঠিন প্রক্রিয়া সম্পর্কে থান চং বলেন: "সিংগাপুরের চীনা প্রবাসী হু ওয়েন হু ছিলেন ধনী বণিক। তিনি চীনভবন নির্মাণের জন্য এক লাখ টাকা দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ব্যবসায় অপ্রত্যাশিত মোটা অংকের লোকসান হওয়ায় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হন তিনি। অগত্য আমার বাবা ১৯৩৪ সালে অর্থ সংগ্রহ করতে চীনে ফিরে আসেন। প্রয়োজনীয় অর্থ পেতে তাঁর প্রায় এক বছর সময় লেগেছিল। যখন তিনি খবর পান, চীন-ভারত সাংস্কৃতিক সমিতির চীনভবনের জন্য এক লাখ চীনা ভাষার পুস্তক এবং কয়েকটি প্রকাশনালয় ও চীনা বন্ধুরা ৫০ হাজার পুস্তক উপহার দেবে তখন তাঁর আনন্দের আর সীমা ছিল না।"

১৯৩৫ সালের ৪ আগস্ট থান ইয়ুন সানকে রবীন্দ্রনাথের লেখা একটি চিঠিতে বলা হয়: "চীনভবন নির্মাণের জন্য চীন-ভারত সাংস্কৃতিক সোসাইটির পাঠানো তিন লাখ ১৭ হাজার ১২ টাকা ৭ আনার একটি চেক আমি পেয়েছি। আমি চিঠি লিখে তাঁদের জানিয়েছি যে, চেকটি যথাসময়ে পাওয়া গিয়েছে। আমি তাঁদের ধন্যবাদও জানিয়েছি। কিন্তু আমি কোনদিন আপনাকে ভুলতে পারি না। কারণ আমি জানি, শুধু আপনার অক্লান্ত পরিশ্রমের কল্যাণেই এ বিরাট প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে পারে। জানি না, কবে আবার শান্তিনিকেতনে আপনার দেখা পাব।"

এ চিঠি লেখার ১৪দিন পর রবীন্দ্রনাথ থান ইয়ুন সানকে লেখা আরেকটি চিঠিতে চীনভবনের নির্মাণ প্রকল্পের খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করার জন্য তাঁকে শান্তিনিকেতনে ফিরে যেতে তাগিদ দেন।

১৯৩৬ সালের বসন্তকালে বিভিন্ন জাহাজে দেড় লাখ চীনা পুস্তক ভারতে পাঠানো হয়। থান ইয়ুন সান একই বছর শান্তিনিকেতনে প্রত্যাবর্তন করেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে প্রায় এক বছরের মধ্যে চীনভবনের নির্মানকাজ সম্পন্ন হয়। নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হয় ৪০ হাজার টাকা। চীনভবনের সম্মুখ দেওয়ালের মাঝখানে খচিত রয়েছে চীনের জাতীয় সরকারের প্রধান ইয়াংসেনের লেখা চারটি সুন্দর চীনা শব্দ -- চীনভবন। চীনভবন চীনের স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত হলেও তার বাহ্যিক রূপে রয়েছে ভারতের স্থাপত্যশিল্পের বৈশিষ্ট্য।

১৯৩৭ সালের ৪ এপ্রিল বিপুল সমারোহে চীনভবন উদ্বোধন করা হয়। কলকাতায় চীনা কনসুলেটের কূটনীতিক এবং চীনা প্রবাসীদের নেতারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

রবীন্দ্রনাথ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মহাত্মা গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমন্ত্রণপত্র পাঠানোর পর জানা গেল, মহাত্মা গান্ধী কোনো এক জনসমাবেশে ভাষণ দেবেন, তাই তিনি কংগ্রেসের প্রধান জওহরলাল নেহেরুকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার আমন্ত্রণ জানান। আমন্ত্রণপত্রে বলা হয়: "চীনভবনের বৃহত গ্রন্থাগার এবং ৫০ হাজার টাকার তহবিল ভারতীয় জনগণকে চীনা জনগণের দেওয়া মূল্যবান উপহার। আমরা যদি তার তাত্পর্য না বুঝি, তবে তা হবে একটা বড় পরিতাপের বিষয়। এসব উপহার দিয়েছে চীন-ভারত সাংস্কৃতিক সমিতি, যেটি গঠিত হয়েছে চীনা সমাজের নেতাদের নিয়ে। সুতরাং যথার্থ মৈত্রী ও সহযোগিতার দ্বারা এ উপহার বরণের দায়িত্ব আমাদের সকলের। চীনভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যোথাযোগ্য মর্যাদার সংগে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত, যাতে আমাদের চীনা বন্ধুরা মনে করেন, আমরা কোনোভাবে এ সুন্দর উপহার ব্যর্থ হতে দেব না। আমি মনে করি, এ মনোজ্ঞ উদযাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার যোগ্যতা শুধু আপনার আছে।"

মন্তব্য
মন্তব্য
লিঙ্ক