Web bengali.cri.cn   
৪২ বছর পর ক্যামেরার সামনে বৈজয়ন্তীমালা
  2012-10-16 19:51:40  cri

ভারতের প্রখ্যাত অভিনেত্রী বৈজয়ন্তীমালাকে ৪২ বছর পর রুপালি পর্দায় দেখার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন চলচ্চিত্রপ্রেমী দর্শকেরা। সন্দ্বীপ মালানির বিষয়ভিত্তিক চলচ্চিত্র 'জানলেভা ৫৫৫' ছবির জন্য তিন মিনিটের একটি ভিডিওচিত্রে অংশ নিয়েছেন তিনি। গ্রামীণ জনপদের সাপে কামড়ানো শিশুদের জীবন বাঁচানোর জন্য করণীয় সম্পর্কে ভিডিওচিত্রটিতে কথা বলেছেন বর্ষীয়ান এ অভিনেত্রী। প্রেক্ষাগৃহে 'জানলেভা ৫৫৫' ছবির প্রতিটি প্রদর্শনীর আগে দেখানো হবে গুরুত্বপূর্ণ এ ভিডিওচিত্রটি।

'জানলেভা ৫৫৫' মুক্তি পাচ্ছে ১৯ অক্টোবর। ছবিটির ভূয়সী প্রশংসা করে সবাইকে এ ধরনের বিষয়ভিত্তিক ছবি দেখার আহ্বান জানিয়েছেন ৭৬ বছর বয়সী বৈজয়ন্তীমালা। তিনি বলেন, 'সাপে কামড়ানো রোগীদের বাঁচানোর জন্য হাসপাতালগুলোতে ভেন্টিলেটর সিস্টেম থাকাটা খুব জরুরি, বিশেষ করে গ্রামের হাসপাতালগুলোতে এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ বার্তাটি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই নির্মিত হয়েছে ''জানলেভা ৫৫৫'' ছবিটি।'

বৈজয়ন্তীমালা আরও বলেন, 'অবশ্যই এটা একটা মহত্ উদ্যোগ। আমি এ ধরনের কাজকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। ছবিটির সাফল্যের জন্য এর নির্মাতাদের প্রতি আমার শুভকামনা রইল। সবার প্রতি আমার অনুরোধ, প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ছবিটি দেখুন আপনারা। কারণ, ছবিটিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিত্রিত করা হয়েছে, যা সবারই জানা উচিত।'

প্রসঙ্গত, ১৯৩৬ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারে বৈজয়ন্তীমালা বালির জন্ম। তিনি একাধারে অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী, গায়িকা ও কোরিওগ্রাফার। গলফ খেলায়ও পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তিনি। রাজনীতির মাঠে বিচরণ করেছেন এবং সাংসদ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন গুণী এ শিল্পী। তাঁর অভিনীত প্রথম তামিল ছবি 'ভাজকাই' মুক্তি পায় ১৯৪৯ সালে। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর।

১৯৫৪ সালে মুক্তি পাওয়া 'নাগিন' ছবিটি বলিউডে দারুণ জনপ্রিয় করে তোলে বৈজয়ন্তীমালাকে। দক্ষিণ ভারতের অভিনেত্রীদের মধ্যে তিনিই প্রথম ভারতজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর দেখানো পথেই বলিউডে পা রেখেছেন দক্ষিণী অভিনেত্রীরা।

প্রায় দুই দশক ধরে বলিউডে রাজত্ব করেছেন বৈজয়ন্তীমালা। বলিউডের পাশাপাশি তেলেগু, বাংলা ও তামিল ছবিতেও অভিনয় করেছেন। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে উপহার দিয়েছেন বেশ কয়েকটি ব্যবসাসফল ছবি। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো 'নাগিন', 'বাহার', 'লেড়কি', 'দেবদাস', 'কাঠ পুতলি', 'মধুমতি', 'পয়গাম', 'গঙ্গা যমুনা', 'সংগম', 'লিডার', 'আম্রপালি', 'হাটে বাজারে', 'জুয়েল থিফ' প্রভৃতি। সর্বশেষ ১৯৭০ সালে মুক্তি পাওয়া 'গানওয়ার' ছবিতে দেখা গিয়েছিল বৈজয়ন্তীমালাকে।

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বৈজয়ন্তীমালাকে পদ্মশ্রী সম্মাননা দিয়েছে ভারত সরকার। তাঁর ঝুলিতে থাকা অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে—অপ্সরা ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রডিউসারস গিল্ড পুরস্কার, বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন পুরস্কার, রজনীকান্ত লিজেন্ড পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, কলাকার পুরস্কার প্রভৃতি। এ ছাড়া পুনে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব এবং ব্রিটিশ এশিয়ান চলচ্চিত্র উত্সব থেকে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়েছে গুণী এ শিল্পীকে।

অভিনয়ের পাশাপাশি নাচে পারদর্শিতার কারণেও পুরস্কৃত হয়েছেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বৈজয়ন্তীমালা। ভরতনাট্যম নৃত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮২ সালে সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কার আসর থেকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় তাঁকে।

মন্তব্য
মন্তব্য
লিঙ্ক