দুয়ার খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। ছবি: আজহার
সেপ্টেম্বর ১২: করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধের পর আজ রোববার বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনও খোলেনি এবং মেডিকেল কলেজগুলো খুলবে আগামীকাল।
সকালে রাজধানীর সড়কে নেমেই চোখে পড়লো চিরচেনা সেই দৃশ্য, গেল ৫৪৪ দিন ধরে যা দেখা যায় নি। গায়ে স্কুল কিংবা কলেজ ইউনিফর্ম, কাঁধে বইভর্তি ঝোলানো ব্যাগ। অভিভাবকদের হাত ধরে কোমলমতি শিশুদের কিংবা কিশোর-কিশোরীদের আবার এই স্কুল যাত্রা করোনা ভাইরাসের অভিঘাতে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া দেড়টি বছরের কথাই মনে করিয়ে দেয়। অনেক দিন পর নিজের পড়ার প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের যেন একটু লাজুক দশা। তবু মুহূর্তেই সমবয়সী আর সহপাঠীদের সাহচর্যে শিশু-কিশোররা ফিরে গেছে তাদের দেড় বছর আগেকার শ্রেণিকক্ষের সেই উচ্ছাসে। কিন্তু মরণঘাতি ভাইরাসের চোখ রাঙানি তো থেমে যায় নি, তাই সবার মুখে ছিলো মাস্ক। কিছু একটা ভয়, সতর্কতা আর ঘাটতি ছিলো প্রাণে প্রাণে।
শ্রেণি কক্ষের একটি দৃশ্য। ছবি: আজহার
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে হৈহুল্লোড় করে ঢুকতে দেখা যায় নি শিশু-কিশোর ছাত্রছাত্রীদের। প্রধান ফটকে ঝুলছে ‘নো মাস্ক, নো স্কুল’ তার বরাবর শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ লাইন। হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ ভাইরাস প্রতিরোধী সামগ্রীর ব্যবহার নিশ্চিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করাচ্ছেন পরিচিত মুখ স্কুল-কলেজের দপ্তরি বা প্রহরী মামারা। নির্ধারিত সময়ে শুরু হয়েছে পাঠদান। তবে তার আগে করোনা সচেতনতামূলক ক্লাস। কথা হচ্ছিলো শ্রাবন্তীর সঙ্গে, ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তিনি। “অনেক দিন পর স্কুল ইউনিফর্ম পরলাম, আবার স্কুলে আসতে পেরেছি ভাবতেই ভালো লাগছে” অভিব্যক্তি এই শিক্ষার্থীর।
শিক্ষকরাও আবেগে আবেশিত বহুদিন পর স্নেহের শিক্ষার্থীদের পেয়ে। এই দিনের পাঠদানে তাই শিক্ষকদের ছিলো না চিরাচরিত কড়াকড়ি। সরকারি জামিলা আইনুল সরকারি স্কুলের শিক্ষক জুবাইর হোসেন আব্দুর রহমান বলছিলেন, এটা তো নিশ্চয়ই অনেক আনন্দের। আশা করি আমরা কন্টিনিউ করতে পারবো।
বাচ্চাদের স্কুলের বাইরে আবার অপেক্ষামান অভিভাবকদের দেখা গেলো। স্কুল খুলে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তে তাদের প্রতিক্রিয়া কিছু মিশ্র। তারা এর বিরোধিতা করছেন না কিন্তু ভয়ের কথাও জানিয়েছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার কার্যক্রম শুরুর কথা উল্লেখ করলেন কেউ কেউ। শিশুকিশোর এসব শিক্ষার্থীদেরও দ্রুত টিকার আওতায় আনবে সরকার, এমন প্রত্যাশা আর দাবির কথাও জানালেন তারা।
আজহার/শান্তা