জি-২০ অধিবেশনে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আর্থিক সমর্থনের আহ্বান
2021-04-08 11:34:07

এপ্রিল ৮: গতকাল (বুধবার) জি-২০ দেশসমূহের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের এক অধিবেশন রোমে শেষ হয়েছে। এবারের অধিবেশনটি সংস্থার চেয়ারম্যান দেশ হওয়ার পর ইতালির আয়োজিত দ্বিতীয় অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের অধিবেশন। এতে বিভিন্ন পক্ষ সম্প্রসারণ নীতি থেকে দ্রুত সরে না যাওয়া, আন্তর্জাতিক কর ব্যবস্থার সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, এবং টেকসই উন্নয়নসহ নানা বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেছে।

 

আগের অধিবেশনের মতো এবারের অধিবেশনটিও অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে ইতালির অর্থমন্ত্রী ড্যানিয়েল ফ্রাঙ্কো বলেন, অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলো মনে করে, কোভিড-১৯ টিকাদান ও আর্থিক সমর্থনের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে, পুনরুদ্ধারে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। মুদ্রা ও অর্থনীতির সম্প্রসারণ থেকে দ্রুত সরে গেলে বাস্তব ঝুঁকি সৃষ্টি হবে।  তাই জি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিশেষ উত্তোলন অধিকারকে ৬৫হাজার কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব সমর্থন করেছে, যাতে বিশ্বব্যাপী মুদ্রা মজুদের চাহিদা মেটানো যায় এবং বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়ক হয়।

 

তিনি বলেন,‘মহামারির প্রেক্ষাপটে জি-টোয়েন্টি আর্থিক সমর্থন ব্যবস্থা দ্রুত বাদ না-দেওয়ার পুনঃঘোষণা করেছে। যার মানে, সব সম্ভাব্য নীতিগত পদ্ধতির মাধ্যমে মানুষের জীবন, কর্মসংস্থান, ও আয় নিশ্চিত করা হবে। বিশেষ করে, মহামারিতে ব্যাপক আঘাতের শিকার যারা, তাদেরকে রক্ষা করা হবে।’

 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মহামারি প্রতিরোধ করা স্থিতিশীল ও টেকসই পুনরুদ্ধারের পূর্বশর্ত। জি-টোয়েন্টি অব্যাহতভাবে চিকিত্সা ব্যবস্থা জোরদার করার পক্ষে। নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি মানুষের দ্রুত ও সুষম টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। ইতালির অর্থমন্ত্রী আরও বলেন,  জি-টোয়েন্টির অর্থমন্ত্রীদের উচ্চ পর্যায়ের অর্থসংগ্রহ কর্মদল চলতি বছরের জুলাইয়ে বিশ্বব্যাপী মহামারি প্রতিরোধ নির্দেশনা প্রকাশ করবে।

 

 তিনি বলেন,‘মহামারি প্রতিরোধ না করলে স্থিতিশীল ও টেকসই অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হবে না। তাই জি-টোয়েন্টি অব্যাহতভাবে চিকিত্সা ব্যবস্থা জোরদার করে যাবে। যাতে সবাই করোনার টিকা পেতে পারেন।  চেয়ারম্যান-দেশ  ইতালির উদ্যোগে অর্থসংগ্রহ কর্মদল গঠিত হয়েছে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী চিকিত্সায় ব্যবহৃত আর্থিক অভাব পূরণ করা সম্ভব হবে।’

 

চলতি বছরের জি-টোয়েন্টির প্রথম অর্থমন্ত্রীদের অধিবেশনে বিভিন্ন পক্ষ একমত হয় যে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক কর ব্যবস্থার সংস্কার খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। চলতি বছরের জুন মাস নাগাদ আন্তঃদেশীয় প্রতিষ্ঠান এবং বিশালাকার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সর্বনিম্ন করের হার নিয়ে এক চুক্তিতে পৌছানো হবে। এবারের অধিবেশনের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, জি-টোয়েন্টি অব্যাহতভাবে একটি সমতাসম্পন্ন, টেকসই ও আধুনিক আন্তর্জাতিক কর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রস্তাব উত্থাপন করবে।

 

 তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের অধিবেশনের পর আমরা ২০২১ সালের মাঝা-মাঝিতে বিশ্বব্যাপী এক চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আজকের এ অধিবেশনে সে বিষয়ে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। আমরা জি-টোয়েন্টি এবং ওইসিডির প্রতি মুনাফা স্থানান্তর প্রকল্পের ভিত্তিতে পরিকল্পিত মেয়াদ অনুযায়ী বাকি সমস্যা সমাধানের তাগিদ দিয়েছি।’

 

তা ছাড়া, অধিবেশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ রক্ষাসহ নানা বিষয় খুব জরুরি। ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হবে। আগামি জুলাই মাসে ইতালির ভ্যানিসে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উধ্বর্তন অধিবেশনের আয়োজিত হবে বলে উল্লেখ করেন ইতালির অর্থমন্ত্রী। (রুবি/এনাম/শিশির)