মার্চ ২৫: চীন সরকার গতকাল (বুধবার) ‘২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারের লঙ্ঘনের রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে বাস্তবতা ও তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বিগত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। যেমন, সেদেশে কোভিড-১৯ রোগের কারণে মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে, ঘন ঘন জাতিগত সংঘাত ঘটছে এবং রাজনৈতিক বৈরিতা বাড়ছে। এ পরিস্থিতি মার্কিন মানবাধিকারের মুখোশ ছিঁড়ে ফেলেছে। মানবাধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কপটতা ও দ্বৈত মানদণ্ডও উন্মোচিত হয়েছে বলে সিআরআই সম্পাদকীয় উল্লেখ করেছে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের মানবাধিকার নষ্টকারী বৃহত্তম দেশ বলে মন্তব্য করেছে সম্পাদকীয়।

আরো খারাপ বিষয় হলো- নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব প্রশাসনের সংকট আরো তীব্র হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের অজুহাতে ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেছে বা অন্য দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে বিশ্বের মানবিক সংকটও আরো মারাত্মক হয়ে উঠেছে। যেমন ইরান, কিউবা, ভেনিজুয়েলা ও সিরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞার ফলে এসব দেশ যথাসময়ে মহামারী প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় চিকিত্সার সামগ্রী পায় নি।

এই বিশেষ সময় অভিবাসীদের ব্যাপারে মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গিও ছিল নিষ্ঠুর। মার্কিন পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সেদেশের ইমিগ্রেশনে আটক ৮৮৪৮ মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

মানবাধিকার খাতে নিজের অপকর্ম অনেক বেশি হলেও ওয়াশিংটন নিজেকে ‘মানবাধিকারের রক্ষক’ দাবি করে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র তার পশ্চিমা মিত্রের সঙ্গে চীনের সিনচিয়াং, হংকং-সংক্রান্ত নীতিমালা ও চীনের মানবাধিকার নিয়ে অপবাদ দিয়েছে এবং চীনের বিরুদ্ধে তথাকথিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের এ আচরণের নিন্দা জানিয়েছে বলে সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়।

সারা বিশ্ব সুস্পষ্টভাবে দেখেছে যে, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা এবং নানা দেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সেই ‘সুপার পাওয়ার’ দেশটিই হলো বিশ্বের মানবাধিকার খাতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী বৃহত্তম এবং বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় সবচেয়ে বেশি হুমকি সৃষ্টিকারী দেশ।

(লিলি/তৌহিদ/শুয়েই)