ফেব্রুয়ারি ১৭: গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন নানদাগুয়া তাঁর দেশকে চীন সরকারের দেওয়া কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছেন।
এ সময় তিনি বলেন, চীন জিম্বাবুয়ের কোভিড-১৯ প্রতিরোধের কঠিন সময়ে ভ্যাকসিন প্রদান করেছেন, যা তুষারপাতের মধ্যে জ্বালানি প্রদানের মতো বিরল সহায়তা।
ওই দিন বিকেলে জিম্বাবুয়ের কাছে চীনের দেওয়া ভ্যাকিসন হস্তান্তর অনুষ্ঠান জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট ভবনে অনুষ্ঠিত হয়।
জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট, ভাইস-প্রেসিডেন্ট, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং সেদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত কুও শাও ছুনসহ চীনা প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট বলেন, সম্প্রতি জিম্বাবুয়েতে কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় টেউ আছড়ে পড়েছে। তা প্রতিরোধ করা খুব কঠিন। এমন সন্ধিক্ষণে চীন যে ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে, তা যেন তুষারপাতের মধ্যে জ্বালানি প্রদান করার মতো বিরল সহায়তা।
তিনি বলেন,‘চীন আমাদের সবচেয়ে কঠিন সময়ে জিম্বাবুয়েকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে। জিম্বাবুয়েতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় টেউয়ের শিকার হয়ে আসছে। বেশ কয়েকজন জাতীয় বীর প্রাণ হারিয়েছেন এবং অনেক জনগণ তাদের আত্মীয়দের হারিয়েছেন। চীনের সহায়তার প্রতি আমি জিম্বাবুয়ের জনগণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। চীন নিজের দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জিম্বাবুয়েকে সহায়তা দিয়েছে। জিম্বাবুয়ের ঐতিহ্যবাহী মৈত্রী সময়ের গতিতে বিশাল প্রাণশক্তি প্রতিফলিত হয়েছে।’
প্রেসিডেন্ট এমারসন নানদাগুয়া বলেন, চীন বিশ্বের কোভিড-১৯ প্রতিরোধের সহযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তার ভূয়সী প্রশংসা করে জিম্বাবুয়ে। তিনি বলেন,
‘বেশ কয়েক বছর ধরে চীন বরাবরই জিম্বাবুয়ের পাশে আছে। চীনের এ সাহায্যে জিম্বাবুয়ের কোভিড-১৯ প্রতিরোধ কাজ নতুন পর্যায়ে উন্নত হবে। চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা জোরদার করতে অবিচল থাকবে জিম্বাবুয়ে’।
চীনের পক্ষে সেদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত কুও শাও ছুন বলেন,‘২০২০ সালের শুরু থেকেই চীন ও জিম্বাবুয়ে কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধে সহযোগিতা চালিয়ে আসছে এবং একে অপরকে সমর্থন দিয়ে আসছে। জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় টেউয়ের শিকারী হওয়ায় চীন নিজের দুর্যোগ কাটানোর চেষ্টার পাশাপাশি দ্রুত জিম্বাবুয়েকে সহায়তা দিচ্ছে। যা চীন-জিম্বাবুয়ে সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এবং সার্বক্ষণিক মৈত্রীর প্রতিফলন। চীন সর্বপ্রথমে বিশ্বের কাছে গণপণ্য হিসেবে ভ্যাকসিন সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ভ্যাকসিন সহযোগিতা জোরদার করছে চীন। তাছাড়া, কোভ্যাক্স উদ্যোগে ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে চীন। যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়। তাতে জিম্বাবুয়েও উপকৃত হবে।’
কুও শাও ছুন আরও বলেন, এ নতুন সূচনায় চীন নতুন বছরে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ এবং বাস্তব সহযোগিতা মজুবত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে চীনের ভ্যাকসিন বহনকারী বিশেষ বিমান জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারে পৌঁছায়। এ সপ্তাহ থেকে জিম্বাবুয়ে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী সর্বপ্রথমে চিকিত্সক ও নার্সদের এবং তারপর বুড়ো ও রোগীদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। (রুবি/এনাম/শিশির)