ভাইরাস রূপান্তরিত হলেও নিয়ন্ত্রণযোগ্য: হু
2021-01-12 14:48:19

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)’র এক কর্মকর্তা গতকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত নিয়মিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, যদিও সম্প্রতি কোন কোন দেশে নতুন প্রজাতির করোনাভাইরাস আবিষ্কার করা হয়েছে এবং এটি আগের ভাইরাসের চেয়ে বেশি সংক্রামক, তবুও এটি  এখনো নিয়ন্ত্রণযোগ্য।

 

সম্প্রতি বিশ্বে কোভডি-১৯ আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে, তার মূল করণ হলো মানুষের আদান-প্রদান বৃদ্ধি। বিস্তারিত শুনবেন সংবাদ পর্যালোচনায়।

 

জাপান সরকার গত রোববার জানিয়েছে, ব্রাজিল থেকে জাপানে প্রবেশকারী  ৪জন পর্যটক কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের শরীর থেকে সংগৃহিত নমুনা বিশ্লেষণ করে জানা যায় যে, তাঁরা রুপান্তরিত নতুন প্রজাতির ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে, এ ভাইরাসের যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকায় আবিষ্কৃত নতুন ভাইরাসের সঙ্গে খুব একটা মিল নেই।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. থেডরোজ আধানম এ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, হু সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট লক্ষ্য করেছে। করোনাভাইরাস যত বেশি ছড়িয়ে পড়ে, তার রূপান্তরের সম্ভবনা তত বেশি। নতুন রূপান্তরিত ভাইরাস আরও বেশি সংক্রামক বলে আরও বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হতে পারে বা হাসপাতালে ভর্তি হবে। তা চিকিত্সাকর্মী ও হাসপাতালের জন্য বড় সমস্যা হবে। বিশেষ করে গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বসের পথে রয়েছে।

 

তিনি বলেন,সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা কার্যকরভাবে করোনাভাইরাসের জিন সিকোয়েন্সিং করতে পারি এবং তাই এর পরিবর্তন জানতে পারব ও একে মোকাবিলা করতে পারবো। যদিও ডায়াগনস্টিক পদ্ধতি ও টিকা এখন কার্যকরভাবে করোনাভাইরাস ঠেকাতে পারছে, তবে ভবিষ্যতে  এ দুয়ের আরও সমন্বয় করতে হবে।

 

গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশ করে ‘বাস্তবায়ন নির্দেশিকা’ এবং ‘ঝুঁকি ত্বত্তাবধান কাঠামো দলিল’। আশা করা যায়, এর সাহায্যে নানা দেশ করোনাভাইরাসের জিন সিকোয়েন্সিং পরিকল্পনা করতে পারবে। সকল দেশকে করোনাভাইরাস নিয়ে জিন সিকোয়েন্সিং জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে হু।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি প্রকল্পের প্রযুক্তিগত প্রধান মারিয়া ভ্যান কারখোভে বলেন, রূপান্তরিত করোনাভাইরাস এখনো নিয়ন্ত্রণযোগ্য। সম্প্রতি বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে এবং তার মূল কারণ রূপান্তরিত ভাইরাস নয় বরং মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধি।

 

তিনি বলেন,“যদিও আমরা রূপান্তরিত করোনাভাইরাস আবিষ্কার করেছি, তবে এ ভাইরাস এখনো নিয়ন্ত্রণযোগ্য। আমাদের আছে বিশ্বব্যাপী জিন সিকোয়েন্সিং ব্যবস্থা, তাই আমরা ভাইরাসের পরিবর্তন আবিষ্কার করতে পারি। আসলে রূপান্তরিত ভাইরাস আকিষ্কার করা ও ছড়িয়ে পড়ার আগে অনেক দেশে মহামারির অবস্থা গুরুতর হয়েছে। তার মূল কারণ হলো মানুষের যোগযোগ বৃদ্ধি।”

 

তিনি বলেন, গ্রীষ্মকালে ইউরোপীয় দেশগুলো মহামারি নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং কোন কোন দেশে প্রতিদিন নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০জনের কম ছিল।

তিনি বলেন,“আমরা এ যুদ্ধে পরাজিত হয়েছি। কারণ গত গ্রীষ্মকালের পর আমরা আমাদের সামাজিক মেলামেশার পদ্ধতি পরিবর্তন করেছি। নববর্ষের ছুটিতে ব্যক্তিগত ও পরিবারের মধ্যে যোগাযোগ বেড়েছে। তাই কোন কোন দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।”

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি প্রকল্পের দায়িত্বশীল ব্যক্তি মাইক রাইয়ান বলেন, বর্তমানে কোন প্রমাণ নেই যে, রূপান্তরিত ভাইরাস আরও মারাত্নক হয়ে উঠবে। তবে, ভাইরাস আগের তুলনায় আরও বেশি সংক্রামক, তা ঠিক।

 

তিনি বলেন,এটা একটি ফুটবল গেমের মতো। আপনার প্রতিপক্ষ দলে নতুন একজন বিকল্প প্লেয়ার গেমে যোগ দিয়েছে তবে গেমের নিয়ম পরিবর্তন হবে না। আমরাও আগের মতো সবই করবো। তবে গেম হবে আরো চ্যালেঞ্জিং। কারণ প্রতিপক্ষ দলে পরিবর্তন এসেছে। (শিশির/এনাম/রুবি)