প্রসঙ্গ: চীনের আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স বিশ্বের জন্য সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করছে
2020-11-20 14:26:59

নভেম্বর ২০: গতকাল (বৃহস্পতিবার) চীনের কুয়াংচৌ শহরে ‘বিশ্ব আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স সম্মেলন-২০২০’ অনুষ্ঠিত হয়। ‘আন্তঃদেশীয় ই-কমার্সের নতুন সুযোগ, নতুন চ্যালেঞ্জ’কে প্রতিপাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে অনুষ্ঠিত এবারের সম্মেলনে আন্তঃদেশীয় ই-কমার্সের নতুন উন্নয়ন, করোনাভাইরাসের মহামারিতে আন্তঃদেশীয় ই-কমার্সের বাজারের তত্ত্বাবধান, আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য পণ্যের বিভিন্ন দেশে প্রবেশের সুবিধাসহ নানান বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

 

সম্মেলনের প্রতিনিধিরা মনে করেন, বর্তমানে চীনে আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স সমৃদ্ধির কারণে দেশটির উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। ই-কমার্স বর্তমান বিশ্বে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নতুন চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে।

 

চলতি বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ব্যাপক হারে হ্রাস করেছে। কিন্তু আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স বৈদেশিক বাণিজ্যের নতুন বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি এখন ডিজিটাল বিশ্বে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহযোগিতার জন্য বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

 

এ সম্মেলনে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার মহাসচিব ভ্লাদিমির ইমামোভিচনরভ বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতি এবং আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স মহামারির যুগে বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

 

তিনি বলেন, চীনের ই-কমার্সের কাঠামো শুধু বিশ্বের ডিজিটাল অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকেই ত্বরান্বিত করছে না, বরং দারিদ্র বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

 

চীনের ই-কমার্স এর ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন চীন-ইউরোপ ডিজিটাল সমিতির চেয়ারম্যান লুইজি গামবার্ডেলা। তিনি মনে করেন, গত দশ বছরে আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধিশীল শিল্পসমূহেরর অন্যতম শিল্পে পরিণত হয়েছে। চীন নিঃসন্দেহে বর্তমান বিশ্বে আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স  জগতে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করছে।

 

তিনি আরও বলেন, অনলাইন লাইভের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা চীনের আন্তঃদেশীয় ই-কমার্সের নতুন পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে। ফলে বর্তমানে চীনকে নতুন বাণিজ্যিক কাঠামোর পরীক্ষা ক্ষেত্র হিসেবে মনে করা হচ্ছে। অনলাইন লাইভ বাণিজ্য ইতোমধ্যে চীনের ই-কমার্স এর মূল মঞ্চ হিসেবে আবির্ভূত হতে পেরেছে। অনলাইন ভোক্তারা ‘অনলাইন সেলিব্রিটি’র লাইভ দেখে বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করে থাকে। চলতি বছরের মহামারিতে চীনের অনলাইন লাইভ কেনা-কাটার ব্যাপক সুযোগ তৈরি করেছে। বিশেষ করে যখন মহামারি চীনা ভোক্তাদের বিদেশে কেনা-কাটাকে ব্যাহত করেছে, তখন অনলাইন লাইভে কেনা-কাটার ব্যাপক প্রচলন হয়েছে। ইতোমধ্যে বিদেশি ব্রান্ডগুলো লাখ লাখ চীনা ভোক্তাকে আকর্ষণ করার শ্রেষ্ঠ সুযোগ লুফে নিয়েছে।

 

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার উপ মহাপরিচালক ই সিয়াও চুন বলেন, চীন ইতোমধ্যে বিশ্বের ই-কমার্সের ‘দৌড়ে’ সামনের দিকে আছে। তিনি বলেন, চীনের ই-কমার্স কোম্পানী তাদের ব্যবসাকে বিদেশেও সম্প্রসারণ করেছে। তারা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যবসা স্থাপনের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, চীন ইতোমধ্যে কিছু ইন্টারনেট ভিত্তিক আন্তঃদেশীয় পণ্য বাণিজ্যের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ই-কমার্স বিষয়ক আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।

 

চীন ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশকে শুল্কমুক্ত বিশেষ এলাকা স্থাপন, ই-পে, কাগজমুক্ত বাণিজ্য, ই-স্বাক্ষর, ই-সার্টিফিকেশন এবং ই-চুক্তির প্রচলনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার উৎসাহ প্রদান করেছে।

 

 (শুয়েই/এনাম/লিলি)