নতুন উন্নয়নের পরিস্থিতিতে সুপ্তশক্তি অনুসন্ধান করতে হবে
2020-11-19 18:58:47

 

 

আকস্মিক কোভিড-১৯ মহামারী এক শতাব্দীতে বড় পরিবর্তন এনেছে। বিশ্বের অনেক দেশে মহামারীর সংক্রমণ বাড়ছে এবং ক্রমবর্ধমান একতরফাবাদ ও সংরক্ষণবাদ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগ তীব্রভাবে সংকুচিত হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতি গভীর মন্দায় প্রবেশ করেছে। বর্তমান ও ভবিষ্যতের অভ্যন্তরীণ ও  আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ‘চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া’ এবং দেশ-বিদেশের ‘ডাবল লুপ’ জোরদার করার মতো  নতুন উন্নয়নের পরিস্থিতি কাজে লাগাতে হবে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চীনা জনগণের সমস্যাগুলোর ভালভাবে সমাধান করতে হবে। বর্তমানে সংরক্ষণবাদ বাড়ছে এবং বিশ্ব অর্থনীতির অবনতি হচ্ছে। সুতরাং, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া’ নিঃসন্দেহে বাইরের ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক।

 

গত শতাব্দীর ৭০ দশকে , চীন  আন্তর্জাতিক শিল্প হস্তান্তর সংক্রান্ত ঐতিহাসিক সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশে সংস্কার করতো এবং দেশের বাইরে উন্মুক্তকরণ করতো। ধীরে ধীরে মূল ভিত্তি হিসাবে বাহ্যিক প্রচলনসহ রফতানিমুখী বিকাশ হয়। এই সময়ে, চীন উন্নয়নের জন্য ব্যবহারিক ফলাফল চেয়েছিল এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি, বৃহত্তম বাণিজ্য দেশ এবং উত্পাদন শক্তি হিসাবে পরিণত হয়েছে।

 

২০০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে মারাত্মক আঘাত হানে। চাহিদা সঙ্কুচিত হওয়ার পাশাপাশি, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় চীন তার অর্থনৈতিক কাঠামো সামঞ্জস্য করতে, উন্নয়নের মোড পরিবর্তন করতে এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে কাজ শুরু করে। বৈদেশিক বাণিজ্যের অবস্থাও ভাল নেই, ২০১৭ সালে তা ৬৬ শতাংশ থেকে ২০১৯ সালে নেমে দাঁড়িয়েছে ৩২ শতাংশে। এর মধ্যে রফতানি নির্ভরতা কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ শতাংশের নিচে।

 

একই সময়, গার্হস্থ্য চাহিদার অবদান বছরের পর বছর বৃদ্ধি পেয়েছে, ভোক্তা অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯ সালে চীনের ভোক্তা সামগ্রীর খুচরা বিক্রির মূল্য ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। চীন বিশ্বের বৃহত্তম খুচরা ভোক্তা বাজারে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে, দেশীয় গ্রাহক বাজার প্রসারিত ও জোরদার করা হচ্ছে চীনা অর্থনীতির টেকসই এবং উচ্চ-মানের উন্নয়নের একমাত্র উপায়।

নতুন উন্নয়নের পরিস্থিতি গড়ে তোলায় দেশীয় ভোক্তা বাজারে চাষাবাদ এবং উন্নত জীবনের জন্য মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া হবে। বড় দেশ হিসাবে এটি বর্তমান অর্থনীতির বিকাশ এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবেশ পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত বিষয়।

 

হংকংয়ে ডয়চে ব্যাংকের প্রধান চীনা অর্থনীতিবিদ জিয়াং ই বিভিন্ন দেশের প্রবৃদ্ধির নিদর্শনগুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বলেন, চীনের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রূপান্তর জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো নয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অনেক মিলে যায়।

 

এ ছাড়া, চীনের অর্থনীতিতে ‘ভারসাম্যহীনতা ও অপর্যাপ্ত বিকাশের’ সমস্যা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, পূর্ব, মধ্য ও পশ্চিমের মধ্যে বিকাশের ব্যবধান সুস্পষ্ট, নগর ও পল্লী উন্নয়ন অসংগঠিত এবং ভারসাম্যহীন, কোভিড-১৯ মহামারী শিল্প চেইনের সরবরাহ শৃঙ্খলায় বাধা দিয়েছে। নতুন উন্নয়নের ধারণা অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক ব্যবস্থায় গতি সঞ্চার করবে।

 

এটি চীনের অভ্যন্তরীণ বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শিল্প চেইনের নিরাপদ ও স্থিতিশীল উন্নয়ন জোরদার করবে।

(ওয়াং হাইমান/তৌহিদ/ছাই)