v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
চীন আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনে অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলে সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাবে
2009-10-19 18:39:12
    পয়লা অক্টোবর চীনের ৬০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উদযাপনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও আট মিনিটের একটি ভাষণ দিয়েছেন । বৈদেশিক সম্পর্কের ওপর সম্বন্ধে তিনি তাঁর ভাষণে বার বার ' শান্তি' এ শব্দটি ব্যবহার করেছেন । তিনি বলেছেন , চীন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের সঙ্গে মিলে স্থায়ী শান্তি ও অভিন্ন উন্নয়নের একটি সুষম বিশ্ব প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালাবে । বিশেষজ্ঞরা সাক্ষাত্কার দেয়ার সময় বলেছেন , এটা চীনের নিজের আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের পরিচায়ক । চীন অবশ্যই সুষম সমাজ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে ।

    হু চিন থাওয়ের ভাষণ দেশবিদেশের তথ্য মাধ্যমগুলোর সজাগ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও বলেছেন , বিশ্বের জন্য নিজেদের অবদান রাখার জন্য চীনা জনগণের আস্থা ও সামর্থ্য রয়েছে । চীনের আধুনিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গবেষণাগারের বিশ্ব অর্থনীতি বিভাগের মহাপরিচালক ছেন ফেং ইং বলেন , আর্থিক সংকটের আগে চীন বিশ্ব অর্থনীতি উন্নয়নের সদস্য ছিল , কিন্তু বর্তমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় চীন বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রধান শক্তিতে পরিণত হতে পারে । দশ বছর আগে চীনের শক্তি-সামর্থ্য যথেষ্ট ছিল না , এখন চীনের অর্থনৈতিক শক্তি বিশ্বের তৃতীয় স্থানে রয়েছে , আর্থিক সংকটের পর তা দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে পারে । তাই চীন বিশ্বে আরো বেশি অবদান রাখতে পারে ।

    প্রকৃতপক্ষে চীনে মুক্তদ্বার নীতি কার্যকর করার পর ১৯৯৭ সালে এশিয়ার আর্থিক সংকট ও বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক সংকটে চীন বাস্তব কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে প্রমান করেছে যে চীন একটি নির্ভরযোগ্য অংশদারী দেশ । চীন শুধু অর্থনীতি ও রাজনীতি ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রধান প্রধান দেশের সঙ্গে সুষ্ঠু ও স্থিতিশীল সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে তাই নয় , সামরিক ক্ষেত্রে চীন সক্রিয়ভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীর কাজে অংশ নিয়েছে । জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের মধ্যে চীন সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো দেশগুলোর অন্যতম। নতুন শতাব্দী শুরু হওয়ার পর চীন সন্ত্রান দমন , পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ আর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও সমাধানে অংশ নিয়েছে ।

    চীনের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের তত্বের পরিচালনায় চীন এ সব আন্তর্জাতিক তত্পরতায় অংশ নিয়েছে । গত ৬০ বছরে চীন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রসারের চেষ্টা করে এসেছে । চীন ইতোমধ্যে ১৭১টি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে । কূটনীতিক সম্পর্ক ছাড়া চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সংস্কৃতি , শিক্ষা , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ নানা ক্ষেত্রে সম্পর্ক উন্নয়নেরও চেষ্টা করছে ।

    অর্থনীতি ক্ষেত্রে চীনের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে চীনের হুমকির প্রচারও বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও তার ভাষণে পুনরায় ঘোষণা করেছেন যে চীন স্বাধীন ও স্বতন্ত্র শান্তিপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে অবিচল থাকবে এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচটি নীতির ভিত্তিতে সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রসার করতে আগ্রহী। এ প্রসঙ্গে ছেন ফেং ইং বলেন , এখন চীনের হুমকির কথা প্রচারিত হচ্ছে । কারণ একটি বৃহত দেশের উত্থানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার রদবদল হবে । আমরা শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন চাই । চীনের উন্নয়ন বিশ্বের শৃঙ্খলার জন্য অন্তরায় হয়ে দাড়াবে না ।

    প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও ২০০৫ সালে জার্কাতায় অনুষ্ঠিত এশিয়া ও আফ্রিকার শীর্ষ সম্মেলন , জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন আর জাতীয় দিবসের উদযাপনী অনুষ্ঠানে বার বার সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার কথা বলেছেন । চেন ফেং ইং বলেন , চীন সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং দক্ষিণ-উত্তর সহযোগিতা ও পূর্ব-পশ্চিম উন্নয়নে তার ভুমিকা রাখছে । ন্যায়পরায়ন আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও চীন সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে এবং গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে ।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China