v চীনের বিশ্ব কোষv চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগ
এইলিয়েনহাইটের বন্দর নিমার্ন কাজে লক্ষ্যণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে
2009-10-15 20:27:01
বন্ধুরা, চীনের উত্তরাঞ্চলের অন্তমর্ঙ্গোর্লিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের এইলিয়েনহাইটে শহর চীন-মঙ্গোলিয়া সীমান্ত বরাবর সহস্রাব্দী লির মরুভূমিতে অবস্থিত। এ এলাকায় বৃষ্টির অভাব এবং ঘাসফুল প্রায় দেখা যায় বললেই চলে। এ এলাকার শুকনো ভু-সংস্থানের বৈশিষ্ট্য খুব প্রকট। ১৯৫৬ সালের প্রথম দিকে চীন, মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়া সংলগ্ন পেইচিং-উল্যানবাটো-মস্কো আন্তর্জাতিক রেলপথ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। এই রেল লাইনে অবস্থিত এইলিয়ৈনহাইটে শহর তখন থেকে মঙ্গোলিয়ার প্রতি চীনের একমাত্র রেলপথ বন্দরে পরিণত হয়েছে। গত ৫০ বছরের উন্নয়নে সীমান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ছোট শহর হিসেবে এইলিয়েনহাইটের বন্দর নিমার্ন কাজে লক্ষ্যণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। স্থানীয় অথর্নৈতিক উন্নয়ন ও বৈদেশিক অর্থনৈতিক সহযোগিতায় এ শহরের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

১৯৫৬ সালের জানুয়ারী মাসে এই আন্তর্জাতিক রেলপথ চালু হওয়ার পর থেকে, এইলিয়েনহাইটে শহর চীনের প্রথম শ্রেণীর স্থল বন্দর হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে। ১৯৯২ সাল পযর্ন্ত সড়ক স্থলও আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। তখন স্থল বন্দরের বার্ষিক মালপত্র পরিবহনের পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ টন। এর মধ্যে রেলপথ বন্দরের জন্য ৩৫ লাখ টন আর সড়ক বন্দরের জন্য ১০ লাখ টন। এ সব বছরের উন্নয়নের ফলে বতর্মানে এইলিয়েনহাইটে শহরের স্থল বন্দরের মাল পরিবহনের ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে অন্তর্মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের স্থল বন্দরের কাযার্লয়ের উপ পরিচালক বাও ছুন চিন বলেছেন,

২০০৪ সালে এইলিয়েনহাইটে রেলপথ স্থল বন্দের সংস্কার প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার পর এশিয়ার বৃহত্তম মালপত্র রাখার গুদাম নিমার্ন করা হয়েছে। বতর্মানে এইলিয়েনহাইটের রেলপথ বন্দরের মাল পরিবহনের পরিমাণ এক কোটি টন। বতর্মানে স্থল বন্দরের মেঝের আয়তন ৩ লাখ ৪০ হাজার বগর্মিটার। মালপত্রের বাষির্ক পরিবহনের পারিমাণ ২৪ টন এবং যাত্রী পরিবহনের পরিমাণ ৩০ লাক পার্সেন টাইমস। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই স্থলের মাল পরিবহনের পরিমাণ দেশের একই ধরনের স্থল বন্দরের মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে।

আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এইলিয়েনহাইটে স্থল বন্দরকে দেশের সবচেয়ে আধুনিক স্থল বন্দরে পরিণত করার জন্য অন্তর্র্মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ধারাবাহিক সংস্কার চালাচ্ছে। এ শহরের স্থল বন্দর ব্যবস্থাপনা কমিশনের কমর্কর্তা চাই ছান ছুন বলেছেন,

মালপত্র ও যাত্রী এখানকার স্থল বন্দরে পার হওয়ার সময় যাতে সময় সাশ্রয় করা হয় সে জন্য আমরা এক সঙ্গে ধাবাহাহিক পরিসেবার ব্যবস্থা নিয়েছি। যার মাধ্যমে আমাদের কাজকর্মের কাযর্কারিতা বেড়েছে এবং শুল্ক পার হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সহজতর হয়েছে। আমদানি-রফতানি মালপত্রের পরিমাণ বেড়েছে বলে স্থল বন্দরের সংশ্লিষ্ট মহল কাযর্কর পদক্ষেপ নিয়েছে।

তা ছাড়া, এইলিয়েনহাইটে স্থল বন্দরের আধুনিকীকরণ কাজ গতিশীল করা হয়েছে। শুল্ক বিভাগে ইলিকট্রোনিক প্রণালী ব্যবহার করা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। চাই ছান ছুন বলেন,

বতর্মানে রেলপথ স্থল বন্দর, রেল স্টেশন এবং শুল্ক বিভাগে ইলিকট্রোনিক প্রণালী ব্যবহার করা হয়েছে। সড়ক স্থল বন্দরে এ প্রণালী ব্যবহারের জন্য আমরা চেষ্টা করবো। আমরা থিয়েনচিন ইলকট্রোলিক স্থল বন্দর অভিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাদের সফটওয়ে সরবরাহ করতে ইচ্ছুক।

এইলিয়েনহাইটে স্থল বন্দর নিমার্ন ক্ষেত্রে যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে তাতে দেশের আমদানি-রফতানিকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কল্যাণকর হয়েছে। মনগাও সিমেন্ট কারখানার কমর্কর্তা গাও ইউয়ু মিন সংবাদদাকে বলেছেন,

সরকারের পরিসেবা মান অনেক উন্নত হয়েছে। আমাদের মতো শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত সন্তোষ্ট হয়েছে। অতীতে মালপত্র শুল্ক পার হওয়ার সময় দু'দিন। কিন্তু এখন মাত্র অধর্দিন। কাজকর্মের কাযর্কারিতা বেড়েছে।

স্থল বন্দরের নির্মান কাজ গতিশীল হওয়ার পর স্থানীয় সীমান্ত বাণিজ্যের মাত্রা ও গুণগতমান বেড়েছে। ২০০৪ সালে এইলিয়েনহাইটে শহরে দেশ-বিদেশের পণ্য বিনিময় বাজার সম্প্রসারনের ভিত্তিতে ৪০ হাজার বগর্মিটারের এটি আন্তর্জাতিক সপিং মর নিমির্ত হয়েছে। অন্তর্মঙ্গোলিয়া, ওয়েনযৌ , চিয়াংসি ও হোপেই এবং মঙ্গোলিয়ার ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করতে আসে। এ সপিং মরের ব্যবস্থাপনা কোম্পানির মেনিজার হুওয়াং সি গুও বলেছেন, স্থল বন্দরের নিমার্ন কাজ বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য বাস্তব মুনাফা এনে দিয়েছে। তিনি বলেন,

সম্প্রতি এখানে জিনিসপত্র কিনতে আসা মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়ার ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বেড়েছে। এখানে যে সব জিনিসপত্র বিক্রি করা হয় সে সব নিজিপত্রের গুণগতমানও আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।

বতর্মানে এইলিয়েনহাইটে স্থল বন্দরের মধ্য দিয়ে যে সব মালপত্র রফতানি করা হয় সে সব মালপত্র হল: ইলিকট্রোনিক পণ্যদ্রব্য, সিমেন্ট, নিমার্ন সামগ্রী, কৃষিজাত পণ্য। আমদানি মালপত্রের মধ্যে রয়েছে, খনি, কাঠ ও কয়লা ইত্যাদি। ২০০৮ সালের পর বিশ্ব আর্থিক সংটক ঘটেছে। এইলিয়েনহাইটে স্থল বন্দরের আমদানি-রফতানি ব্যবসা প্রভাবিত হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক তথ্য উপাত্ত থেকে জানা গেছে, আমদানি-রফতানি মালপত্র পরিবহনের পরিমাণ পুনরুর্দ্ধার হচ্ছে। চাই ছান ছুন বলেছেন,

গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মাচ মাস পযর্ন্ত মালপত্র পরিবহনের পরিমাণ একটানা কমেছে। কিন্তু গত এপ্রিলের পর মালপত্র পরিবহনের পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। বতর্মানে মালপত্র পরিবহনের পরিমান গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বতর্মানে অন্তর্র্মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে এইলিয়েনহাইটেসহ মোট ১৯টি স্থল বন্দর আছে। স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বৈদেশিক বাণিজ্যে সীমান্ত বাণিজ্যের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। অন্তর্মঙ্গোলিয়ার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বাণিজ্য ব্যুরোর উপ মহা পরিচালক গাও শাও ফেন বলেছেন,

আমাদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বৈদেশিক বাণিজ্যে সীমান্ত বাণিজ্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।২০০৮ সালে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বৈদেশিক বাণিজ্যের মোটমূল্যে সীমান্ত বাণিজ্যের পরিমাণ ৪০ শতাংশ। সুতরাং, সীমান্ত বাণিজ্য কাজ ভালভাবে করলে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বৈদেশিক বাণিজ্যের স্তিতিশীল উন্নয়ন এবং স্থল বন্দর শহরের সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  • সাক্ষাত্কার
  • সর্বশেষ সংবাদ
  • অন-লাইন জরীপ
     
    © China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
    16A Shijingshan Road, Beijing, China