শ্রোতাবন্ধুরা, অনেক দিন আগে এক দেশে এক নিষ্ঠুর রাজা ছিলেন। একদিন একজন বিদেশী ডক্টর তাঁর রাণীকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন। এ কারণে রাজা পন্ডিতদের বেশ ঘৃণা করতেন। এর পর, এমন কি তিনি জ্ঞানেরও ভাল চোখে দেখতেন না।
একদিন তিনি সারা দেশের সব বইপত্র সংগ্রহ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করার আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়েছে যে, যদি কেউ বইয়ের কিছু পাতা লুকিয়ে রেখে থাকে তাকে হত্যা করা হবে।
এভাবেই সারা দেশ থেকে সংগৃহীত বইগুলো রাজধানির বৃহত্তম মহাচত্বরে সবার সামনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
আগুণে পুড়ে এ সব মূল্যবান বইয়ের পাতা ছাই হয়ে যায়। এ অবস্থা দেখে সবাই অনেক দুঃখ পায় এবং এ নিষ্ঠুর রাজার এ কর্মকান্ডে সবার মনে খুব রাগ হয়। তবে কেউ কিছুই বলতে সাহস করে নি।
তিন দিন তিন রাত জ্বলার পর এ আগুণ নিভে গেছে। পুড়ে যাওয়া ধ্বংস স্তুপ পরিষ্কার করার সময় একজন সৈন্য আবিষ্কার করেছেন যে, একটি কাগজ আগুণে পুরোপুরিভাবে পুড়েনি। সুতরাং, অন্য কেউ দেখার আগেই তিনি গোপনে এ কাগজটি নিজের পকেটে লুকিয়ে রাখেন।
বাসায় ফিরে আসার পরও রাত না হওয়া পর্যন্ত এ কাগজ নিয়ে তিনি ভীত ছিলেন। গভীর রাতে তিনি গোপনে বাড়ির বাইরের উঠানে এসে কাগজের ওই আধপোড়া অংশটুকু পকেট থেকে বের করেন। চাঁদের আলোয় তিনি মনোযোগ দিয়ে এ কাগজের লেখা দেখার চেষ্টা করেন। তিনি এ কাগজে এক লাইনের একটি অপরিষ্কার বাক্য লক্ষ্য করেন। কিন্তু তিনি বাক্যটি সাব মর্ম কিছুই বুঝতে পারেন নি। কারণ তিনি ছিলেন একজন অশিক্ষিত মানুষ।
নিষ্ঠুর সেই রাজা মারা যাওয়ার পর, তিনি আধপোড়া এ কাগজটি নিয়ে বিজ্ঞ এক ব্যক্তির কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন।
অবশেষে তিনি এ কাগজে লেখা সব কথা বুঝতে পারেন। ঐ এক লাইনের বাক্য হচ্ছে " সব কিছুতেই নিজের ওপর নির্ভর করা"। এ লাইনের কথাগুলো সহজ। কিন্তু এটা ছিল ঐ সৈনিকের জন্য সারা জীবনের অর্জন।
বন্ধুরা, এ গল্প থেকে আমরা বুঝেছি যে, আমাদের শক্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন করতে চাইলে অন্যের ওপর নির্ভর করা উচিত নয়। নিজের প্রচেষ্টার ওপর নির্ভর করলেই সত্যিকারভাবে বিজয়ী হওয়া সম্ভব । --ওয়াং হাইমান
|