গত পয়লা অক্টোবর ছিল চীনের জাতীয় দিবস। এ উপলক্ষে চীনের সবর্ত্রই নানা ধরনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উদযাপনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। এখন শুনুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের নিজস্ব সংবাদদাতার লেখা একটি প্রতিবেদন।
চীনের দক্ষিণাংশের গুয়াংসী যুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এমন একটি অঞ্চল যেখানে সংখ্যালঘু জাতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর এ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে। গত বছর গুয়াংসী যুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উত্পাদন মোটমূল্য ১৯৫০ সালের তুলনায় ১২০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু উত্পাদন মোটমূল্য ১৪ হাজার ৯ শো ইউয়ান রেন মিন পিতে পৌঁছে ১৯৫০ সালের তুলনায় ৪৩ গুণ বেড়েছে।
চীনের ৬০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনের জন্য গত ১ অক্টোবর গুয়াংসী যুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ১০৪১টি সংখ্যালঘু জাতি অধ্যুষিত গ্রামে একই সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সে দিন এ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের গুয়েলিন শহরের মিনশিন গ্রামের নর, নারী, বৃদ্ধ ও শিশুরা বণার্ঢ্য পোশাক পরে এই বিশেষ মূহূর্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। পুরানো তিব্বতে উত্পাদন উপাদান অল্প সংখ্যক জমিদারের হাতে ছিল বলে তিব্বতের কৃষি ও পশুপালন শিল্পের উন্নয়ন সীমিত ছিল। নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর , তিব্বতের কৃষক ও পশুপালকদের জীবনযাত্রার মান লক্ষনীয়ভাবে উন্নত হয়েছে। জাতীয় দিবস উদযাপনকালে তিব্বতের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। ডাওয়াসানবুর বাসা লাসা শহরের ডেলন ডেছিন জেলার লিওউ গ্রামে বসবাস করে। সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, বতর্মানে গোটা গ্রামে পাকা রাস্তা নির্মান করা হয়েছে। গ্রামবাসীরা টেলিভিশন ও বেতারের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারেন। এমন কি অনেক পরিবারে গাড়িও কেনা হয়েছে।
ওলেনছুন জাতির গ্রামবাসি ঠনমুচাওয়ের বয়স ৬০। তিনি বলেন, তার পরিবারের সবই সুখী জীবন যাপন করছে। এখন তার বাসায় রঙিন টিভি, রেফ্রিজারেটার, কাপড় ধোওয়ার যন্ত্র, টেলিভিশন ইত্যাদি ঘরোয়া বৈদ্যুতিক সামগ্রী আছে। তাদের জীবনযাত্রার মান দিন দিন উন্নত হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন,
অতীতে আমাদের ওলেনছুন জাতি পশু শিকার করে জীবনযাপন করতাম। জীবনযাপনের অবস্থা খুব কঠিন ছিল। কিন্তু এখন আমাদের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। চীন সরকারের যত্ন ও মনোযোগ ছাড়া আমাদের বতর্মান সচ্ছল জীবন পাওয়া ছিল অসম্ভব। আমি আরও ৬০ বছর বাঁচতে চাই। আমার আশা হল আমাদের জীবন আরও সুন্দর এবং আমাদের দেশ আরও শক্তিশালী হবে।
আয়তনের দিক থেকে সিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সবচেয়ে বড়। দীর্ঘকাল ধরে সিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন জাতি শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করে থাকেন। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি হয়েছে। জাতীয় দিবস উপলক্ষে, সিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী উরুমুছির কয়েকটি ব্যস্ত এলাকায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন ছোট-বড় রাস্তাগুলোর দু'পাশে বৈচিত্রময় ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। উরুমুছির নাগরিক গুও হং মিন বলেন,
এ সব দৃশ্য দেখে উত্সবের আমেজ অনুভব করি। আমাদের পরিবার খুব কম সময় এক সঙ্গে মিলিত হয়। কিন্তু এ ছুটিতে আমরা এক সঙ্গে একটি আনন্দের উত্সব কাটিয়েছি। |